সাংবাদিক নাদিম হত্যা: কঠোর শাস্তি চান সাংবাদিক নেতারা
- আপলোড সময় : ০৮:০৭:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩
- / ৩৮৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলানিউজের সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি চেয়েছেন সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা। নাদিম হত্যার বিচার দাবিতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) একাংশ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) একাংশ, জামালপুর সাংবাদিক ফোরাম—ঢাকা, ক্লাব-৯৬ বাংলাদেশ, পিআইবি জার্নালিজম অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনসহ (পিবজা) কয়েকটি সাংবাদিক সংগঠন আজ শনিবার রাজধানীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সাংবাদিক নেতারা নাদিমের হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।
বিএফইউজের (একাংশ) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘নাদিম হত্যা একটি পরিকল্পিত বিষয়। শুধু যে চেয়ারম্যান জড়িত, এটি আমি বিশ্বাস করি না। কেন এই হত্যাকাণ্ড তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। সাংবাদিক বালু, মানিক সাহা, সাগর-রুনিসহ কোনো সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি। উল্টো যারা নির্যাতন করেছে, তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। আর যদি কোনো সাংবাদিক হত্যার শিকার হন, আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাব এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর কর্মসূচি দেব।’
মহাসচিব দ্বীপ আজাদ বলেন, ‘গোলাম রব্বানী নাদিম সৎ, নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন। জামালপুরের পুলিশ সুপার এক দিন পর যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এই এসপির বিরুদ্ধেও প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে হবে। না নিলে তাঁকেও তালিকাভুক্ত করা হবে।’
বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘দেশে সবার বিচার হলেও সাংবাদিক হত্যার বিচার হয় না। তথ্য মন্ত্রণালয় গত ৪৮ ঘণ্টাতেও নাদিম হত্যার ব্যাপারে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তথ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে নাদিমের পরিবারের প্রতি সহায়তা নিশ্চিত করুন। খুনি ইউপি চেয়ারম্যানকে আওয়ামী লীগ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হোক। খুনিদের গ্রেপ্তার করাই একমাত্র সমাধান নয়। সঠিক শাস্তি নিশ্চিত করাটাই মূল লক্ষ্য। ৭১ টিভি এবং বাংলানিউজ কর্তৃপক্ষের উচিত এখন নাদিমের অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি নাদিম হত্যার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাঁর পরিবারের খুবই অসহায় অবস্থা। জানাজা দেওয়ার টাকাটাও নেই তাঁর পরিবারের। যিনি এই হত্যার জন্য দায়ী, ইউপি চেয়ারম্যান ও অন্যরা আওয়ামী লীগের নাম নিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছেন, এদের খুঁজে বের করার এখনই সময়। সাংবাদিকেরা যদি কাজ না করতে পারেন, তাহলে যতই গণতন্ত্রের কথা বলেন, লাভ নেই। বহির্বিশ্বে নেতিবাচক মেসেজ যাবে।’
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমরা আজ শোকাহত, রক্তাক্ত। নাদিম বলেছিলেন কোনো হুমকি আমাকে থামাতে পারবে না। তিনি স্থানীয় মাসলম্যানের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন। এ জন্য তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
জামালপুর সাংবাদিক ফোরাম—ঢাকার সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, সাংবাদিক নাদিম হত্যাকারীদের কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এতে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ক্লাব-৯৬-এর নেতারা বলেন, তিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হওয়ায় ঢাকায় কাজের লোক বানিয়ে নারীদের কাজের জন্য পাঠিয়ে সবকিছু লুটে নিত। নাদিম সত্য সংবাদই প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকেরা আজ বিভিন্নভাবে বঞ্চিত। অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হোক। সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিকদের হত্যার বিচার করতে হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা কুদ্দুস আফ্রাদ, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক আলম খায়রুল, কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য দুলাল খান, সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি নাসিমা আক্তার সুমা, ডিইউজের আইন সম্পাদক শাহীন আলী প্রমুখ।