ঢাকা ০১:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হত্যার ঘটনায় ন্যায় বিচার ব্যাহত করায় সিদ্ধিরগঞ্জের ওসিকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ

মুহাম্মদ আলী (নিজস্ব প্রতিবেদক)
মুহাম্মদ আলী (নিজস্ব প্রতিবেদক)
  • আপলোড সময় : ১০:৪১:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৪৫৯ বার পড়া হয়েছে

আদালতের আদেশ পাশ কাটিয়ে একটি হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচার ব্যাহত করায়, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, ১৫ দিনের মধ্যে স্ব-শরীরের হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূসরাত সাহারা বীথি এর আদালত গত ২৪ আগস্ট ওসি ও বাদীর উপস্থিতিতে এ নির্দেশ দেন। একই দিনে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ২৮ আগস্ট ওসমান মিয়া (১৭) হত্যা মামলা রুজু করে(নম্বর-৬০) তদন্তভার সিআইডর
নিকট ২৯ আগস্ট হস্তান্তর করেন ওসি গোলাম মোস্তফা। মামলা সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় গত ৮ জুলাই রাতে নির্মাণাধিন টি টাওয়ারের ৪ তলায় বড় ভাই স্বপন মিয়ার সামনে ওসমান মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে সহকর্মীরা। ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাশ লিফটের ফাঁকা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। সহকামীরা দাবি করেন ওসমান পড়ে গিয়ে মারা গেছে।এঘটনায় নিহতের পিতা নেয়াজ মিয়া(৫০) সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। তাই তিনি ১৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী ৮-নম্বর আদালতে হত্যার অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে পিটিশন মামলা করেন।
বাদীর আইনজীবী মো: নজরুল ইসলাম জানান, আদলাতে মামলা করার পর ‘ঘটনা বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় কোন নিয়মিত বা অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে কিনা, ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে ওসিকে নির্দেশ দেন আদলাত। কিন্তু ২২ দিন গত হলেও ওসি আদালতে কোন প্রতিবেদন দেননি। পরে আবার ৩ কার্যদিবসে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিলেও ওসি দেননি। হত্যা কান্ডের গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও ওসি নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দাখিল না করায় আদালত অশ্রদ্ধার সামিল উল্লেখ করে ২৪ আগস্ট স্ব-শরীরে হাজির হয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।’ ওই দিন ওসি স্ব-শরীরের হাজির হয়ে জবাব দিলেও ‘আদালত তা সন্তোষজনক মনে করেননি।’ হত্যার বিষয়ে আদালত ওসিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিলে,তিনি তা না দিয়ে বাদীর অগোচরে মনগড়া এজাহার লিখে ২৪ আগস্ট ৩০৪ ধারায় থানায় ৪৩ নম্বর মামলা রুজু করেন। ‘আদালতে মামলা করার পর একইঘটনায় থানায় আরিকটি মামলা করার কারণ নেই বলে মনে করেন আদালত।
তাছাড়া থানায় করা ৪৩ নম্বর মামলা বিষয়ে বাদী কিছু্ই জানেনা মর্মে দেওয়া জবান বন্দি আদালত বিশ্বাস যোগ্য মনে করেছেন।’ হত্যার অভিযোগকে ওসি ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু করে ন্যায় বিচার ব্যাহত করার
চেষ্টা করায়, ’ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত হত্যা মামলা রুজু করার নির্দেশ দেন। হত্যা মামলার পাশাপাশি ৩০৪ ধারায় থানায় করা ৪৩ নম্বর মামলাটিও সিআইডির একই কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত।’
নিহত ওসমান মিয়া হবিগঞ্জ জেলার কৃষ্ণনগর থানার বানিয়াচং এলাকার নেয়াজ মিয়ার ছেলে। একই এলাকার আসামিদের সঙ্গে ঘটনার ৩ দিন আগে
ওসমান মিয়া ও তার বড় ভাই স্বপন মিয়া সিদ্ধিরগঞ্জে এসেছিল টি টাওয়ের নির্মাণ কাজ করতে।
জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন,‘আদালতের নির্দেশে দুটি মামলাই সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশনাকে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে তিনি কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

হত্যার ঘটনায় ন্যায় বিচার ব্যাহত করায় সিদ্ধিরগঞ্জের ওসিকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ

আপলোড সময় : ১০:৪১:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩

আদালতের আদেশ পাশ কাটিয়ে একটি হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচার ব্যাহত করায়, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, ১৫ দিনের মধ্যে স্ব-শরীরের হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূসরাত সাহারা বীথি এর আদালত গত ২৪ আগস্ট ওসি ও বাদীর উপস্থিতিতে এ নির্দেশ দেন। একই দিনে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ২৮ আগস্ট ওসমান মিয়া (১৭) হত্যা মামলা রুজু করে(নম্বর-৬০) তদন্তভার সিআইডর
নিকট ২৯ আগস্ট হস্তান্তর করেন ওসি গোলাম মোস্তফা। মামলা সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় গত ৮ জুলাই রাতে নির্মাণাধিন টি টাওয়ারের ৪ তলায় বড় ভাই স্বপন মিয়ার সামনে ওসমান মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে সহকর্মীরা। ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাশ লিফটের ফাঁকা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। সহকামীরা দাবি করেন ওসমান পড়ে গিয়ে মারা গেছে।এঘটনায় নিহতের পিতা নেয়াজ মিয়া(৫০) সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। তাই তিনি ১৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী ৮-নম্বর আদালতে হত্যার অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে পিটিশন মামলা করেন।
বাদীর আইনজীবী মো: নজরুল ইসলাম জানান, আদলাতে মামলা করার পর ‘ঘটনা বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় কোন নিয়মিত বা অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে কিনা, ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে ওসিকে নির্দেশ দেন আদলাত। কিন্তু ২২ দিন গত হলেও ওসি আদালতে কোন প্রতিবেদন দেননি। পরে আবার ৩ কার্যদিবসে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিলেও ওসি দেননি। হত্যা কান্ডের গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও ওসি নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দাখিল না করায় আদালত অশ্রদ্ধার সামিল উল্লেখ করে ২৪ আগস্ট স্ব-শরীরে হাজির হয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।’ ওই দিন ওসি স্ব-শরীরের হাজির হয়ে জবাব দিলেও ‘আদালত তা সন্তোষজনক মনে করেননি।’ হত্যার বিষয়ে আদালত ওসিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিলে,তিনি তা না দিয়ে বাদীর অগোচরে মনগড়া এজাহার লিখে ২৪ আগস্ট ৩০৪ ধারায় থানায় ৪৩ নম্বর মামলা রুজু করেন। ‘আদালতে মামলা করার পর একইঘটনায় থানায় আরিকটি মামলা করার কারণ নেই বলে মনে করেন আদালত।
তাছাড়া থানায় করা ৪৩ নম্বর মামলা বিষয়ে বাদী কিছু্ই জানেনা মর্মে দেওয়া জবান বন্দি আদালত বিশ্বাস যোগ্য মনে করেছেন।’ হত্যার অভিযোগকে ওসি ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু করে ন্যায় বিচার ব্যাহত করার
চেষ্টা করায়, ’ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত হত্যা মামলা রুজু করার নির্দেশ দেন। হত্যা মামলার পাশাপাশি ৩০৪ ধারায় থানায় করা ৪৩ নম্বর মামলাটিও সিআইডির একই কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত।’
নিহত ওসমান মিয়া হবিগঞ্জ জেলার কৃষ্ণনগর থানার বানিয়াচং এলাকার নেয়াজ মিয়ার ছেলে। একই এলাকার আসামিদের সঙ্গে ঘটনার ৩ দিন আগে
ওসমান মিয়া ও তার বড় ভাই স্বপন মিয়া সিদ্ধিরগঞ্জে এসেছিল টি টাওয়ের নির্মাণ কাজ করতে।
জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন,‘আদালতের নির্দেশে দুটি মামলাই সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশনাকে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে তিনি কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন