রূপগঞ্জে রাস্তা দখল করে দুই মাদক ব্যবসায়ীর অবৈধ মেলার আয়োজন
- আপলোড সময় : ০৮:৫১:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩
- / ৬১৪ বার পড়া হয়েছে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারার পৌরসভার মৈকুলী এলাকায় রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে মেলার আয়োজন করেছে স্থানীয় সবুজ ও সুমন নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী। নিয়ম অনুযায়ী মেলার আয়োজন করতে হলে প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতিপত্র নিতে হয়। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে ১০ দিন ব্যাপী মেলার আয়োজন করেছে তারা। অনুমোদন ছাড়া মেলা আয়োজনের খবরে হতবাক সংশ্লিষ্টরা। নিজেদের স্বার্থ হাসিলে একটি চক্র এভাবে নানা ইস্যুতে মেলার আয়োজন করে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। প্রতিদিন মেলায় থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকা চাঁদা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে মেলার নামে চলে জুয়া ও মাদকসহ নানা বেআইনি কর্মকান্ড। এছাড়া সন্ধ্যা হলেই মেলার ভেতরে বসছে মাদকের আসর। এ কারণে মেলাকে ঘিরে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান।
জানা গেছে, গত ১০ দিন ধরে খাদুন এলাকায় রাস্তা দখল করে সুমন ও সবুজ নামে দুই প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী মেলার আয়োজন করে। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এ দুই মাদক স¤্রাট মেলার আয়োজন করে চলছে কয়েকদিন পরপরই। মেলায় নাগর দোলা, ইলেকট্রিক নৌকা, খেলনার দোকান, কসমেটিক্সের দোকান, ফুচকাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রায় অর্ধশত দোকানপাট বসায়। খেলনা, কসমেটিক্সের দোকান ও ফুচকার দোকান থেকে প্রতিদিন ৫’শ থেকে ৮ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। মেলার কারণে পথচারীদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া মেলার মাঝে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। গত কয়েকদিনের মাঝে প্রায় অর্ধডজন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ইলেকট্রিক নৌকা ও নাগরদোলা থেকে ১০ দিনের জন্য প্রতিটি থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়ার মেলা ভেতরে বসানো হয়েছে লটারীর নামে জুয়ার আসর ও মাদকের আসর। এতে করে মেলাটি মাদকের হাটে পরিনত হয়েছে। মেলার আশেপাশে বেশকিছু স্কুলসহ বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মেলার ভেতরে স্পিকারে জোরে জোরে গান বাজানোর কারণে শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার ব্যঘাত ঘটছে। এদিকে মেলার কারণে ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে মেলায় ঘুরাঘুরি করছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন।
ফারজানা নামে এক পোশাক শ্রমিক জানান, আমি এক সহকর্মীর মোবাইল ছিনতাই হয়েছে মেলা থেকে। টাকার জন্য কয়েকদিন পরপরই তারা মেলার আয়োজন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক বলেন, মেলার ভেতরে স্পিকারে জোরে জোরে গান বাজানোর কারণে শিক্ষার্থীদের লেখপড়ায় অনেক ব্যাঘাত ঘটছে। যারা মেলার আয়োজন করেছে তারা অনেক প্রভাবশালী এ কারণে কেউ কিছু বলতে পারছে না।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মেলার ভেতরে খেলনা খাবার বিক্রির পাশপাশি মাদক বেচাকেনাও চলছে প্রকাশ্যে। এতে করে মেলার ভেতরে অস্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে। এ কারণে মেলার ভেতরে পরিবার পরিজন নিয়ে আসা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এছাড়া কিশোর ও তরুণ বয়সী ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে মেলার ভেতরে সময় কাটাচ্ছে যেটি খুবই দুঃখজনক। মেলার আয়োজক কমিটি প্রভাবশালী হওয়ার তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে মেলার আয়োজক সবুজ ও সুমন বলেন, প্রশাসনের কাছ থেকে আমরা লিখিতভাবে অনুমতিপত্র না নিলেও প্রশাসন মেলা সম্পর্কে জানে। প্রশাসনকে জানিয়েই আমরা মেলার আয়োজন করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল হক বলেন, প্রশাসন কোন প্রকার মেলার অনুমোদন প্রদান করেনি। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া মেলার আয়োজন সর্ম্পূণ অবৈধ। আমরা শীঘ্রই মেলাটি উচ্ছেদের জন্য অভিযান পরিচালনা করবো।