ঢাকা ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনারগাঁওয়ে ১০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে

মো: সাদ্দাম হোসেন মুন্না খান (নিজস্ব প্রতিবেদক)
মো: সাদ্দাম হোসেন মুন্না খান (নিজস্ব প্রতিবেদক)
  • আপলোড সময় : ০৬:৪৪:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪৪২ বার পড়া হয়েছে

সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর সোনাপুর গ্রাম থেকে গঙ্গাপুর বাজারের প্রায় ১০ কিলোমিটার মূল সড়ক। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে অন্তত দশ গ্রামের মানুষ।

এদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার দিকে নজর না দিয়ে উল্টো ড্রেন নির্মাণ না করে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে ইতিপূর্বে সোনাপুর স্ট্যান্ড থেকে বেহাকৈর খান কলনি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ঢালাই সড়ক নির্মাণ করায় দুর্ভোগের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার অন্যতম বৃহৎতম কাঁচপুর (শিল্প অঞ্চল) হিসেবে অনেকের কাছে ব্যাপক পরিচিত। সেই হিসেবে গড়ে উঠেছে নানা রকমের ইন্ডাস্ট্রিয়াল কলকারখানা। তেমনি বেড়েছে কর্মসংস্থান। এ হিসেবে লক্ষ্যে করা গেছে কাঁচপুরের স্থানীয় বাসিন্দা সহ সাধারণ লাখ লাখ শ্রমিকরা সোনাপুর রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় প্রতিনিয়ত। এযেন এক চরম দুর্ভোগ মোকাবেলা করতে হয় এই এলাকার বাসিন্দাদের। সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় পিচ বিলীন হয়ে অসংখ্য ছোট বড় গর্তসহ একাধিক জায়গায় ডোবার আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া পাশের ‘মার্কেট-বাড়ি’ গুলো থেকেও রাস্তাটি নিচু হওয়ায় রাস্তার পানি নদীতে নামার কোন সুযোগ থাকে নেই। এবিষয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মেম্বার ও ইউপি চেয়ারম্যান এদেরও কোন প্রকার মাথা ব্যাথা নেই ! তারাও একই পথ দিয়ে চলাফেরা করছেন প্রতিদিন।

স্কুল শিক্ষার্থী এশা আক্তার নেহা, লামিয়া ও সিয়াম বলেন, কাঁচপুরে দুটি কলেজ, দুটি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৫- ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৭-৮টি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের কাছে রাস্তার এই জলাবদ্ধতা রীতিমতো ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক হাঁটু পানি মাড়িয়ে স্কুলে যাবার সময় কাপড়-চোপড়তো ভিজেই, কেউ পানিতে পড়ে যায়, কারও বই খাতা পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

বেহাকৈর এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির সামনেই এক হাঁটু পানি। রাস্তার মধ্যে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই ‘হালকা-ভারি’ যানবাহন- রিক্সা, ইজিবাইক, অটোরিক্সা, সিএনজি ও ট্রাক সহ বিভিন্ন পরিবহণ দিনে দুই/তিন বার গাড়ি উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে থাকেন মানুষ। আমাদের পরিবার সহ আমরাও অনেক বার এমন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছি। এরকমের আমাদের মতো লোকজন প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা স্বীকার হতে দেখাগেছে।

সোনাপুর বাসিন্দা খোকন, বাবুল ও মনির বলেন, জলাবদ্ধতার পাশাপাশি নোংরা পানির দুর্গন্ধে পথচলা চরম দুর্ভোগে পরিনত হয়েছে। রাস্তা খানাখন্দ ও গর্তের ভয়ে নোংরা পানি দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। অন্যথায় গাড়ি দিয়ে চলতে গেলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং নোংরা পানি দিয়ে চলার কারণে বিভিন্ন রোগে-শোকে আক্রান্ত হতে হয়। আমরা এ জনদুর্ভোগ থেকে বাঁচতে চাই ! এবিষয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধু কণ্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি আকুল আবেদন জানাই। যেন অতি শিঘ্রই আমাদের রাস্তাটির প্রতি সদয় দৃষ্টি কামনা করেন।

কাঁচপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি অনেক বার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত ভাবে আবেদন করছি। কিন্তু তাঁরা কোন ভাবে আমলে নিচ্ছেন না। এ অঞ্চলের মানুষ এমন দুর্ভোগের কারণে, অনেক অংশে চেয়ারম্যানকেও গালমন্দ করে থাকে। আমার বাড়ি সামনের দুর্ভোগ, আমারি অনেক কষ্ট লাগে। এবং এ দুর্ভোগ এলাকা আমাদের এমপি মহোদয় লিয়াকত হোসেন খোকা যদি একটু বিষয়টি আমলে নেন, তাহলে দুর্ভোগ এলাকা লাঘব করা সম্ভব। তিনি বলেন, তবে বিষয়টি আপনাদের সাংবাদিক ভাইদের নজরে আসছে, আপনারাও একটু ভালো ভাবে কাজ করুন। দরকার বোধে আমিও আরও কঠিন ভাবে ট্রাই করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, এই ব্যাপারে আমার কিছু জানা ছিল না। এবং আজ পর্যন্ত কেহ এবিষয়টি নিয়ে আবেদনও করে নাই। তবে আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। সরেজমিন পরিদর্শন করে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সোনারগাঁওয়ে ১০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে

আপলোড সময় : ০৬:৪৪:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর সোনাপুর গ্রাম থেকে গঙ্গাপুর বাজারের প্রায় ১০ কিলোমিটার মূল সড়ক। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে অন্তত দশ গ্রামের মানুষ।

এদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার দিকে নজর না দিয়ে উল্টো ড্রেন নির্মাণ না করে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে ইতিপূর্বে সোনাপুর স্ট্যান্ড থেকে বেহাকৈর খান কলনি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ঢালাই সড়ক নির্মাণ করায় দুর্ভোগের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার অন্যতম বৃহৎতম কাঁচপুর (শিল্প অঞ্চল) হিসেবে অনেকের কাছে ব্যাপক পরিচিত। সেই হিসেবে গড়ে উঠেছে নানা রকমের ইন্ডাস্ট্রিয়াল কলকারখানা। তেমনি বেড়েছে কর্মসংস্থান। এ হিসেবে লক্ষ্যে করা গেছে কাঁচপুরের স্থানীয় বাসিন্দা সহ সাধারণ লাখ লাখ শ্রমিকরা সোনাপুর রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় প্রতিনিয়ত। এযেন এক চরম দুর্ভোগ মোকাবেলা করতে হয় এই এলাকার বাসিন্দাদের। সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় পিচ বিলীন হয়ে অসংখ্য ছোট বড় গর্তসহ একাধিক জায়গায় ডোবার আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া পাশের ‘মার্কেট-বাড়ি’ গুলো থেকেও রাস্তাটি নিচু হওয়ায় রাস্তার পানি নদীতে নামার কোন সুযোগ থাকে নেই। এবিষয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মেম্বার ও ইউপি চেয়ারম্যান এদেরও কোন প্রকার মাথা ব্যাথা নেই ! তারাও একই পথ দিয়ে চলাফেরা করছেন প্রতিদিন।

স্কুল শিক্ষার্থী এশা আক্তার নেহা, লামিয়া ও সিয়াম বলেন, কাঁচপুরে দুটি কলেজ, দুটি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৫- ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৭-৮টি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের কাছে রাস্তার এই জলাবদ্ধতা রীতিমতো ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক হাঁটু পানি মাড়িয়ে স্কুলে যাবার সময় কাপড়-চোপড়তো ভিজেই, কেউ পানিতে পড়ে যায়, কারও বই খাতা পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

বেহাকৈর এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির সামনেই এক হাঁটু পানি। রাস্তার মধ্যে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই ‘হালকা-ভারি’ যানবাহন- রিক্সা, ইজিবাইক, অটোরিক্সা, সিএনজি ও ট্রাক সহ বিভিন্ন পরিবহণ দিনে দুই/তিন বার গাড়ি উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে থাকেন মানুষ। আমাদের পরিবার সহ আমরাও অনেক বার এমন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছি। এরকমের আমাদের মতো লোকজন প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা স্বীকার হতে দেখাগেছে।

সোনাপুর বাসিন্দা খোকন, বাবুল ও মনির বলেন, জলাবদ্ধতার পাশাপাশি নোংরা পানির দুর্গন্ধে পথচলা চরম দুর্ভোগে পরিনত হয়েছে। রাস্তা খানাখন্দ ও গর্তের ভয়ে নোংরা পানি দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। অন্যথায় গাড়ি দিয়ে চলতে গেলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং নোংরা পানি দিয়ে চলার কারণে বিভিন্ন রোগে-শোকে আক্রান্ত হতে হয়। আমরা এ জনদুর্ভোগ থেকে বাঁচতে চাই ! এবিষয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধু কণ্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি আকুল আবেদন জানাই। যেন অতি শিঘ্রই আমাদের রাস্তাটির প্রতি সদয় দৃষ্টি কামনা করেন।

কাঁচপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি অনেক বার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত ভাবে আবেদন করছি। কিন্তু তাঁরা কোন ভাবে আমলে নিচ্ছেন না। এ অঞ্চলের মানুষ এমন দুর্ভোগের কারণে, অনেক অংশে চেয়ারম্যানকেও গালমন্দ করে থাকে। আমার বাড়ি সামনের দুর্ভোগ, আমারি অনেক কষ্ট লাগে। এবং এ দুর্ভোগ এলাকা আমাদের এমপি মহোদয় লিয়াকত হোসেন খোকা যদি একটু বিষয়টি আমলে নেন, তাহলে দুর্ভোগ এলাকা লাঘব করা সম্ভব। তিনি বলেন, তবে বিষয়টি আপনাদের সাংবাদিক ভাইদের নজরে আসছে, আপনারাও একটু ভালো ভাবে কাজ করুন। দরকার বোধে আমিও আরও কঠিন ভাবে ট্রাই করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, এই ব্যাপারে আমার কিছু জানা ছিল না। এবং আজ পর্যন্ত কেহ এবিষয়টি নিয়ে আবেদনও করে নাই। তবে আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। সরেজমিন পরিদর্শন করে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন