ঢাকা ০৬:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাইবার নিরাপত্তা আইন জনগণের জন্য ক্ষতিকর: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ১০:২৫:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১০৯৬ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের সরকারের আজ্ঞাবহ থাকতে বাধ্য করবে। এই আইন জনগণের জন্য ক্ষতিকর। সরকার এভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করছে।’
সাইবার নিরাপত্তা আইনে জনগণকে মুক্তচিন্তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেছেন, ‘সরকার জনগণের জবাবদিহিমূলক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলছে।’

লালমনিরহাট রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে শনিবার বিকেলে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, ‘সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে। দেশের মালিক জনগণ। অথচ সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে দেশের মালিক জনগণকে মুক্তচিন্তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

‘সরকার এভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের সরকারের আজ্ঞাবহ থাকতে বাধ্য করবে। এ আইনের মাধ্যমে সব টিভি চ্যানেল শুধু ডকুমেন্টারি প্রচার করবে, এর বাইরে তারা কিছুই করতে পারবে না। এই আইন জনগণের জন্য ক্ষতিকর একটি আইন।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে জিএম কাদের বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। এককভাবে নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতিমুক্ত ভালো প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে। আপনারা জনগণের কাছে গিয়ে জাতীয় পার্টির উন্নয়নের কথা বলুন। দলকে শক্তিশালী করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯০ সালের পর থেকে যখনই যে ক্ষমতায় গেছে, জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের ষড়ন্ত্র করেছে। এই সরকারও জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কেউই জনগণের হৃদয় থেকে জাতীয় পার্টিকে, লাঙ্গল প্রতীককে মুছে দিতে পারেনি। বরং আজ সেই লাঙ্গল প্রতীক, জাতীয় পার্টি উজ্জীবিত হয়েছে; শক্তিশালী হয়েছে।’

জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা বৈষম্যের শিকার। দেশের মানুষ সরকারবান্ধব নয়। কৃষক-শ্রমিকবান্ধবও নয়।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে এই টাকার হিসাব দিতে হবে।’

বিএনপির এক দফা আন্দোলন সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা কেমন আছেন আমরা জানি। এই বিএনপির আমলে বিদ্যুতের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে গুলিতে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। বিএনপির সরকার দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তারেক রহমান হাওয়া ভবন খুলে দেশ লুটপাট ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির এক দফা মানে তারেক রহমানকে মুক্ত করা। এটি দেশের মানুষ চায় না। আর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একই লক্ষ্য। তা হলো- ক্ষমতায় যাওয়া। দেশের মানুষ আর তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সরকার গঠনে জনগণ এক হয়েছে। এজন্য জাতীয় জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে।’

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘জিএম কাদের জনগণের অবস্থা বোঝেন। আগামীতে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। এমনও হতে পারে সরকারও গঠন করতে পারে জাতীয় পার্টি। তাই আমাদের সবকিছু ভুলে গিয়ে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করে আগামী নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে কাজ করতে হবে। সারাদেশে জাতীয় পার্টির গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।’

দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশের ১৭ কোটি জনগণকে জিম্মি করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট লুটপাট করছে। এদের এক-দুইজনকে ফাঁসি দেন। কয়েকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।’

পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান বলেন, ‘রাজনীতি আজ রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। এই রাজনীতি চলছে সুবিধাভোগী, হাইব্রিড ও ত্যাগীদের মধ্যে। জাতীয় পার্টির ত্যাগী নেতা-কর্মীরা জিএম কাদেরের নেতৃত্বে রয়েছে।’

লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক শেরীফা কাদেরের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাপার কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল, জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব জাহিদ হাসান লিমন, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নজরুল ইসলাম, পাটগ্রাম উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হাবীবুল হক বসুনীয়া প্রমুখ।

সম্মেলন শেষে লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে শেরীফা কাদের ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জাহিদ হাসান লিমনের নাম ঘোষণা করেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সাইবার নিরাপত্তা আইন জনগণের জন্য ক্ষতিকর: জিএম কাদের

আপলোড সময় : ১০:২৫:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের সরকারের আজ্ঞাবহ থাকতে বাধ্য করবে। এই আইন জনগণের জন্য ক্ষতিকর। সরকার এভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করছে।’
সাইবার নিরাপত্তা আইনে জনগণকে মুক্তচিন্তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেছেন, ‘সরকার জনগণের জবাবদিহিমূলক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলছে।’

লালমনিরহাট রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে শনিবার বিকেলে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, ‘সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে। দেশের মালিক জনগণ। অথচ সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে দেশের মালিক জনগণকে মুক্তচিন্তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

‘সরকার এভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের সরকারের আজ্ঞাবহ থাকতে বাধ্য করবে। এ আইনের মাধ্যমে সব টিভি চ্যানেল শুধু ডকুমেন্টারি প্রচার করবে, এর বাইরে তারা কিছুই করতে পারবে না। এই আইন জনগণের জন্য ক্ষতিকর একটি আইন।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে জিএম কাদের বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। এককভাবে নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতিমুক্ত ভালো প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে। আপনারা জনগণের কাছে গিয়ে জাতীয় পার্টির উন্নয়নের কথা বলুন। দলকে শক্তিশালী করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯০ সালের পর থেকে যখনই যে ক্ষমতায় গেছে, জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের ষড়ন্ত্র করেছে। এই সরকারও জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কেউই জনগণের হৃদয় থেকে জাতীয় পার্টিকে, লাঙ্গল প্রতীককে মুছে দিতে পারেনি। বরং আজ সেই লাঙ্গল প্রতীক, জাতীয় পার্টি উজ্জীবিত হয়েছে; শক্তিশালী হয়েছে।’

জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা বৈষম্যের শিকার। দেশের মানুষ সরকারবান্ধব নয়। কৃষক-শ্রমিকবান্ধবও নয়।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে এই টাকার হিসাব দিতে হবে।’

বিএনপির এক দফা আন্দোলন সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা কেমন আছেন আমরা জানি। এই বিএনপির আমলে বিদ্যুতের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে গুলিতে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। বিএনপির সরকার দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তারেক রহমান হাওয়া ভবন খুলে দেশ লুটপাট ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির এক দফা মানে তারেক রহমানকে মুক্ত করা। এটি দেশের মানুষ চায় না। আর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একই লক্ষ্য। তা হলো- ক্ষমতায় যাওয়া। দেশের মানুষ আর তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সরকার গঠনে জনগণ এক হয়েছে। এজন্য জাতীয় জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে।’

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘জিএম কাদের জনগণের অবস্থা বোঝেন। আগামীতে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। এমনও হতে পারে সরকারও গঠন করতে পারে জাতীয় পার্টি। তাই আমাদের সবকিছু ভুলে গিয়ে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করে আগামী নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে কাজ করতে হবে। সারাদেশে জাতীয় পার্টির গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।’

দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশের ১৭ কোটি জনগণকে জিম্মি করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট লুটপাট করছে। এদের এক-দুইজনকে ফাঁসি দেন। কয়েকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।’

পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান বলেন, ‘রাজনীতি আজ রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। এই রাজনীতি চলছে সুবিধাভোগী, হাইব্রিড ও ত্যাগীদের মধ্যে। জাতীয় পার্টির ত্যাগী নেতা-কর্মীরা জিএম কাদেরের নেতৃত্বে রয়েছে।’

লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক শেরীফা কাদেরের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাপার কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল, জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব জাহিদ হাসান লিমন, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নজরুল ইসলাম, পাটগ্রাম উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হাবীবুল হক বসুনীয়া প্রমুখ।

সম্মেলন শেষে লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে শেরীফা কাদের ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জাহিদ হাসান লিমনের নাম ঘোষণা করেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন