ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোনারগাঁ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগে বহিষ্কার

সোনারগাঁ প্রতিনিধি
সোনারগাঁ প্রতিনিধি
  • আপলোড সময় : ১১:০১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৮৩৫ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঘুষ দাবির অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তদন্ত দল।

গতকাল মঙ্গলবার দিনভর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার আরাফাত মোহাম্মদ নোমান এ অভিযোগের তদন্ত করেন। এসময় সঙ্গে ছিলেন সোনারগাঁ সহকারী কমিশার (ভূমি) মো. ইব্রাহিম। এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবর ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর বিরুদ্ধে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সিনিয়র ম্যানেজার (ল্যান্ড)আবু মূছা চৌধুরী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সিনিয়র ম্যানেজার (ল্যান্ড)আবু মূছা চৌধুরী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ গত ৮ এপ্রিল যোগদান করার পর থেকে তাদের জমি ক্রয় বিক্রয়, নিয়মিত খাজনা পরিশোধ ও নামজারি করতে অসহযোগিতা করেন। তাদের কোম্পানির ৪০২টি ৩শ একর ভূমি রয়েছে। এ জমিগুলোর হোল্ডিং নিবন্ধন না করায় তারা বকেয়া খাজনা পরিশোধ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে এন্ট্রি করার নামে ২৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত দাবি করেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমতি পর নামজারি প্রস্তাব ১২টি নামজারি প্রস্তাব ঝুলিয়ে রাখেন । এ প্রস্তাবগুলোর জন্য সরকারকে নির্ধারিত ফি প্রদান করা হয়। তবুও ইব্রাহিম খলিল আরো ৫০শতাংশ বাড়ানোর দাবি করেছেন। এ টাকা না দিলে নথি বাতিলের হুমকি দেন।
এদিকে কোন কোম্পানি জমি ক্রয় করতে হলে বর্তমানে নিয়ম অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের পূর্ব অনুমতি নিতে হয়। অনুমতির আবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেওয়ার পর সেই আবেদন যাচাই বাছাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট্র ভূমি কার্যালয়ের প্রতিবেদনের জন্য পাঠানো হয়। মেঘনা গ্রুপের ১৮টি অনুমতির পত্র দীর্ঘ ৩৫দিন আটকে রাখার পর মাত্র ৩টি নথির প্রতিবেদন দেয়। বাকি ১৫টি নথি ঝুলিয়ে রাখেন। এ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ নথি ছাড়ের জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্তকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ প্রতিদিন ১২টার পর অফিসে আসেন। সকাল ৯টার মধ্যে অফিসে থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেন না। অফিসে এসেই তিনি তার জন্য অপেক্ষা করা সেবা গ্রহিতাদের সঙ্গে দর কষাকষির মাধ্যমে নামজারি, খাজনা আদায়সহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। এছাড়াও তিনি স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার কারনে প্রভাব খাটিয়ে মানুষের সঙ্গে অসৎ আচরণ করেন।
ভুক্তভোগী মোঃ রহমত আলী বলেন, তার জমি খারিজের জন্য ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ ও তার ছোটা ভাই হাসনাইন ২৫০০০ টাকা দাবী করেন, পরবর্তীতে ৫০০০ টাকা দিতে রাজি হওয়ার নামঞ্জুর করে দেয়। তাছাড়া ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর আপন ভাইসহ ৫ জন দালালের মাধ্যমে কাজ করে থাকেন। তার ভাই ও দালালদের মাধ্যমে নামজারিসহ অন্যান্য কাজগুলো খুব সহজেই হয়ে যায়। তাদের বাদ দিয়ে কাজ করতে চাইলে তালবাহানা করেন।

পিরোজপুরের বাসিন্দা মোঃ মোক্তার হোসেন নামে আরো একজন ভুক্তভোগী বলেন, তার ছোট একটি জমি খারিজ থেকে খারিজ করতে ভুমি অফিসে যান। তবে ঐ নায়েব তার নিকট হতে ৫০০০ টাকা দাবী করেন। তবে মূলত ঐ খািজ বাবদ কোনো টাকা পয়সার নিয়ম নেই।

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সিনিয়র ম্যানেজার (ল্যান্ড)আবু মূছা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মেঘনা গ্রুপ অবদান রয়েছে। এ গ্রæপের দুটি ইকনোমিক জোনসহ ৪৮টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নতুন প্রতিষ্ঠান স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। সরকারের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে অসৎ ঘুষখোর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিমুলক বদলি করে যোগ্য ব্যক্তিকে এ অফিসের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

চরকিশোরগঞ্জ এলাকার ওসমাণ গণি জানান, হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর কাছে তার একটি নামজারি আবেদন করা হয়। সেই নামজারি প্রস্তাব দেওয়ার জন্য তার কাছে ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ার কারণে কাগজপত্র যাচাই বাছাই না করেই সরকারি সম্পত্তি দেখিয়ে প্রস্তাবটি বাতিল করেন। এ বিষয়ে এসিল্যান্ডের কাছে গত ২০ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহ পাইনি।

দূর্গা প্রসাদ গ্রামের আবু ইসলাম নামের এক কৃষক জানান, এ ভূমি কর্মকর্তা যোগদান করার পর থেকে তাদের ভোগান্তি বেড়েছে। তিনি টাকা ছাড়া কোন কাজই করেন না। তাকে এ অফিস থেকে বদলি দাবি করছি।

সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ জামপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। সেখানেও টাকা ছাড়া তিনি কোন প্রকার কাজ করেননি। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। পরে তার বিরুদ্ধে ঝাড়– ও জুতা মিছিল ও মানববন্ধন করেন ওই এলাকার বাসিন্দা। পরবর্তীতে তৎকালীন এসিল্যান্ড শেখ ফরিদ তাকে বদলির সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলায় বদলি করা হয়।

অভিযুক্ত ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপ প্রচার করা হচ্ছে। কোম্পানির কথা মতো কোন কাজ না করার কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে নাজেহাল করা হচ্ছে।

সোনারগাঁ সহকারী কমিশার (ভূমি) মো. ইব্রাহিম বলেন, একটি কোম্পানির অভিযোগের ভিত্তিতে হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্ত হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে বদলি করা হবে।

তদন্ত দলের প্রধান নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আরাফাত মোহাম্মদ নোমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় কর্তৃক তদন্ত হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। তবে তদন্ত চলাকালীন অবস্থায় তিনি অন্য কোনো তথ্য দিতে অপারগ বলে দাবী করেন।

অবশেষে গোপন সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ কে সোনারগাঁ হোসেনপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিস থেকে বদলি করা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সোনারগাঁ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগে বহিষ্কার

আপলোড সময় : ১১:০১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঘুষ দাবির অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তদন্ত দল।

গতকাল মঙ্গলবার দিনভর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার আরাফাত মোহাম্মদ নোমান এ অভিযোগের তদন্ত করেন। এসময় সঙ্গে ছিলেন সোনারগাঁ সহকারী কমিশার (ভূমি) মো. ইব্রাহিম। এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবর ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর বিরুদ্ধে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সিনিয়র ম্যানেজার (ল্যান্ড)আবু মূছা চৌধুরী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সিনিয়র ম্যানেজার (ল্যান্ড)আবু মূছা চৌধুরী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ গত ৮ এপ্রিল যোগদান করার পর থেকে তাদের জমি ক্রয় বিক্রয়, নিয়মিত খাজনা পরিশোধ ও নামজারি করতে অসহযোগিতা করেন। তাদের কোম্পানির ৪০২টি ৩শ একর ভূমি রয়েছে। এ জমিগুলোর হোল্ডিং নিবন্ধন না করায় তারা বকেয়া খাজনা পরিশোধ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে এন্ট্রি করার নামে ২৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত দাবি করেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমতি পর নামজারি প্রস্তাব ১২টি নামজারি প্রস্তাব ঝুলিয়ে রাখেন । এ প্রস্তাবগুলোর জন্য সরকারকে নির্ধারিত ফি প্রদান করা হয়। তবুও ইব্রাহিম খলিল আরো ৫০শতাংশ বাড়ানোর দাবি করেছেন। এ টাকা না দিলে নথি বাতিলের হুমকি দেন।
এদিকে কোন কোম্পানি জমি ক্রয় করতে হলে বর্তমানে নিয়ম অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের পূর্ব অনুমতি নিতে হয়। অনুমতির আবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেওয়ার পর সেই আবেদন যাচাই বাছাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট্র ভূমি কার্যালয়ের প্রতিবেদনের জন্য পাঠানো হয়। মেঘনা গ্রুপের ১৮টি অনুমতির পত্র দীর্ঘ ৩৫দিন আটকে রাখার পর মাত্র ৩টি নথির প্রতিবেদন দেয়। বাকি ১৫টি নথি ঝুলিয়ে রাখেন। এ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ নথি ছাড়ের জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্তকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ প্রতিদিন ১২টার পর অফিসে আসেন। সকাল ৯টার মধ্যে অফিসে থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেন না। অফিসে এসেই তিনি তার জন্য অপেক্ষা করা সেবা গ্রহিতাদের সঙ্গে দর কষাকষির মাধ্যমে নামজারি, খাজনা আদায়সহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। এছাড়াও তিনি স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার কারনে প্রভাব খাটিয়ে মানুষের সঙ্গে অসৎ আচরণ করেন।
ভুক্তভোগী মোঃ রহমত আলী বলেন, তার জমি খারিজের জন্য ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ ও তার ছোটা ভাই হাসনাইন ২৫০০০ টাকা দাবী করেন, পরবর্তীতে ৫০০০ টাকা দিতে রাজি হওয়ার নামঞ্জুর করে দেয়। তাছাড়া ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর আপন ভাইসহ ৫ জন দালালের মাধ্যমে কাজ করে থাকেন। তার ভাই ও দালালদের মাধ্যমে নামজারিসহ অন্যান্য কাজগুলো খুব সহজেই হয়ে যায়। তাদের বাদ দিয়ে কাজ করতে চাইলে তালবাহানা করেন।

পিরোজপুরের বাসিন্দা মোঃ মোক্তার হোসেন নামে আরো একজন ভুক্তভোগী বলেন, তার ছোট একটি জমি খারিজ থেকে খারিজ করতে ভুমি অফিসে যান। তবে ঐ নায়েব তার নিকট হতে ৫০০০ টাকা দাবী করেন। তবে মূলত ঐ খািজ বাবদ কোনো টাকা পয়সার নিয়ম নেই।

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সিনিয়র ম্যানেজার (ল্যান্ড)আবু মূছা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মেঘনা গ্রুপ অবদান রয়েছে। এ গ্রæপের দুটি ইকনোমিক জোনসহ ৪৮টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নতুন প্রতিষ্ঠান স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। সরকারের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে অসৎ ঘুষখোর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিমুলক বদলি করে যোগ্য ব্যক্তিকে এ অফিসের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

চরকিশোরগঞ্জ এলাকার ওসমাণ গণি জানান, হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর কাছে তার একটি নামজারি আবেদন করা হয়। সেই নামজারি প্রস্তাব দেওয়ার জন্য তার কাছে ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ার কারণে কাগজপত্র যাচাই বাছাই না করেই সরকারি সম্পত্তি দেখিয়ে প্রস্তাবটি বাতিল করেন। এ বিষয়ে এসিল্যান্ডের কাছে গত ২০ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহ পাইনি।

দূর্গা প্রসাদ গ্রামের আবু ইসলাম নামের এক কৃষক জানান, এ ভূমি কর্মকর্তা যোগদান করার পর থেকে তাদের ভোগান্তি বেড়েছে। তিনি টাকা ছাড়া কোন কাজই করেন না। তাকে এ অফিস থেকে বদলি দাবি করছি।

সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ জামপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। সেখানেও টাকা ছাড়া তিনি কোন প্রকার কাজ করেননি। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। পরে তার বিরুদ্ধে ঝাড়– ও জুতা মিছিল ও মানববন্ধন করেন ওই এলাকার বাসিন্দা। পরবর্তীতে তৎকালীন এসিল্যান্ড শেখ ফরিদ তাকে বদলির সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলায় বদলি করা হয়।

অভিযুক্ত ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপ প্রচার করা হচ্ছে। কোম্পানির কথা মতো কোন কাজ না করার কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে নাজেহাল করা হচ্ছে।

সোনারগাঁ সহকারী কমিশার (ভূমি) মো. ইব্রাহিম বলেন, একটি কোম্পানির অভিযোগের ভিত্তিতে হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্ত হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে বদলি করা হবে।

তদন্ত দলের প্রধান নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আরাফাত মোহাম্মদ নোমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় কর্তৃক তদন্ত হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। তবে তদন্ত চলাকালীন অবস্থায় তিনি অন্য কোনো তথ্য দিতে অপারগ বলে দাবী করেন।

অবশেষে গোপন সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ কে সোনারগাঁ হোসেনপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিস থেকে বদলি করা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন