ঢাকা ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘ভয়ঙ্কর বদরুল’-শীর্ষক সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ০৭:২৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে আপনার পত্রিকায় ‘ভয়ঙ্কর বদরুল’ শিরোনামে যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর। প্রতিবেদকের নামহীন এবং আমার কোনো সাক্ষাৎকার এমনকি কোনো যোগাযোগ ছাড়াই প্রতিবেদন প্রকাশ কী সাংবাদিকতা পেশার নীতি বিরুদ্ধ নয়?কোনো ধরণের প্রমাণ ব্যতীত অসৎ উদ্দেশ্যে ঢালাওভাবে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আপনার এই লেখনী ব্যক্তিগতভাবে শুধু আমার নয়; বরং সমগ্র শিক্ষক সমাজের জন্য মানহানিকর বলে মনে করি।
২০০৪ সাল হতে আমি এই কলেজে অত্যন্ত সুনামের সাথে চাকুরিরত আছি। কলেজে কোচিং বাণিজ্য, এমপিও সারেন্ডার, ফান্ড লুটপাট, নানা অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার কারণে কলেজের দুর্নীতিবাজ একটি চক্র একেবারে শুরু হতেই আমাকে বিতাড়নের জন্য বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে নানা অপবাদ ও কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু কখনোই তারা সফল হতে পারেনি। কখনো কলেজে ঠিক সময়ে আসিনি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবেনা। কলেজ প্রশাসনের হয়রানি ও মামলা দেওয়ায় ২০২২ সালের পর আমার সহধর্মিনী মারাত্মক অসুস্থ হয়ে বাসায় সার্বক্ষণিক অক্সিজেন দিয়ে রাখতে হয়। উল্লেখ্য, আমার স্ত্রীর হার্ট মাত্র ১০% কাজ করে এবং দুটি ছোট সন্তান নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি।

ঢাকা-০৭ আসনের সাবেক এমপি হাজী মোঃ সেলিমের সাথে আমার একটি ছবি কর্তন করে আমাকে ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মূলত ২০১৯ সালের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী তৎকালীন গভর্নিং বডির সভাপতি সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনের ভায়রা অধ্যাপক ড. হারুনর রশিদ খান ও তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধি আবু নাঈম মোঃ রাফি, বাদল চন্দ্র অপু ও নুরুন্নাহার বেগমের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে তাদের পদ খারিজ হয়ে যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃক শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তা স্থগিত করে। এমতাবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সাংসদের সহযোগিতায় শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন করে। উক্ত নির্বাচনে শাহ উম্মে সালমা ইয়াছমিন, মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও আমি মোহাঃ বদরুল ইসলাম নির্বাচিত হই। ঐদিন সাংসদ হাজী মোঃ সেলিম নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধিদেরকে উত্তরীয় পরিয়ে অভিনন্দন জানান-যা ২৬ জানুয়ারি ২০২০ সালে ৎরংরহমনফ.পড়স-সহ অন্যান্য পত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশিত হয়। এছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২২-এ ঊঠওঘঈঊ মৎড়ঁঢ় ও এডুকেশন ওয়াচ কর্তৃৃক শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হই। উল্লেখ্য, এর পূর্বে ২০১০ সালের ৪জুন (নিমতলীর অগ্নিকাণ্ড) ব্যতীত কলেজে কোনোদিন হাজী মোঃ সেলিমকে আসতে দেখিনি।

২০০৫ সালে বিভাগীয় প্রধান জানে আলম শিকদার ভাইস প্রিন্সিপ্যাল হওয়ায় আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাই। বিভাগীয় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে তখন কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম ছিলনা। বিভাগীয় চেয়ারম্যান জনাব তাহমিনা হাসনাত পদত্যাগ করায় প্রশাসন ১২জুন-২০০৭ তারিখে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদান করেন। উল্লেখ্য, তাহমিনা হাসনাতের বিরুদ্ধে আমি কখনোই কোনো অভিযোগ দেইনি। তৎকালীন উপাধ্যক্ষ জনাব জানে আলমের হাতে লেখা ড্রাফট কপি করে বিভাগীয় কর্মচারী আতিকুল ইসলাম অভিযোগ দায়ের করে।

২৫আগষ্ট-২০০৭ তারিখে তৎকালীন গভর্নিং বডির সভায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক জনাব ফরিদ হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেখানে আমিসহ মোট ১৬ জন শিক্ষককে মামলা দায়েরের জন্য বলা হয়- যা পত্রিকাতে বিশদভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এটাও বলা হয় মামলা দায়ের না করলে তাহমিনা হাসনাতের মতো পদত্যাগ করতে হবে। পরবর্তীতে জনাব ফরিদ হোসেন ও সাবেক অধ্যক্ষ জনাব মোস্তাক আহমেদ মারুফ (মারুফ চিনু)-এর সাথে পরামর্শক্রমে অভিযোগ দায়ের করি। পরবর্তীতে জনাব ফরিদ হোসেনের মামলা উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে প্রশাসন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কলেজেপ্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। উল্লেখ্য, কলেজের দুর্নীতিবাজ চক্রটি বিভিন্ন সময়ে সৎ ও দায়িত্বশীল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মাদকপাচার, মানব পাচারসহ বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে তাদের হেনস্তা করে। জনাব ফরিদ হোসেনকেও মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজঅপবাদ দিয়ে অভিযোগ দিয়েছিল চক্রটি।

জনাব গোপাল চন্দ্র ঘোষ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের (বিএমটি) শিক্ষক। বিএমটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কিন্তু তৎকালীন প্রশাসন দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসর হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জুন-২০১৩ সালে যখন আমাকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন গোপালের পক্ষের শক্তি প্রশাসনিক ক্ষমতায় ছিল।

২০১৯ সালে কলেজের নামে জমি ক্রয়, সাবস্টেশন স্থাপন, বিভাগীয় উন্নয়নসহ বিভিন্ন কৌশলে কলেজের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে কলেজের দুর্নীতিবাজ চক্রটি ঢাকার একটি মামলাবাজ চক্রের সাথে জড়িত হয়ে ২০আগষ্ট-২০২০ তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। চাঞ্চল্যকর মামলাটির বিষয়ে তৎকালীন মিডিয়ায় ব্যাপক খবর প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে মামলার মহামান্য বিচারক জনাব জাকি আল ফারাবী একটি মামলা দায়ের করেন। এপরিপ্রেক্ষিতে সিআইডির তদন্ত রিপোর্টে মামলাবাজ চক্র, মামলার বাদী, মামলার অর্থদাতা, মামলা দায়েরের কারণ প্রভৃতি বিস্তারিতভাবে উঠে আসে। ডিবি রিপোর্টেও সাজানো ও মিথ্যা মামলাটির সাথে অর্থ লেনদেন ও কলেজের মামলাবাজ সিন্ডিকিটটির সংশ্লিষ্টতার বিষয় উঠে এসেছে। ২৬এপ্রিল-২০২৪ তারিখের পূর্ব পর্যন্ত মামলার বাদীর কোনো অস্তিÍত্ব না থাকায় বাদীকে হুমকি প্রদান ও আদালতে আসার ক্ষেত্রে বাঁধা প্রদানের কোনো প্রশ্নই আসেনা। কলেজের মামলাবাজ চক্রটি আমার বিরুদ্ধে আরো মামলা দিতে পারে এজন্য ৬ ফেব্রুয়ারী-২০২১ তারিখে চকবাজার থানায় একটি জিডি দায়ের করি।

আমি দুইবার শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলাম। এসময়ে কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি। জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে কখনোই কোনো শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীর সাথে অশোভন বা অশালীন আচরণ করিনি। গার্হস্থ্য অর্থনীতির যে শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে, করোনা মহামারী চলাকালীন তার কোনো ক্লাস না থাকায় সে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। উল্লেখ্য, উক্ত শিক্ষক লেকচারভিত্তিক শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিতেন।

মূলত কলেজের দুর্নীতিবাজ ও মামলাবাজ শিক্ষকদের চক্রটি বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তাদের অপরাধ ও দুর্নীতির মহাযজ্ঞ চালাচ্ছে। তারা যাদেরকে তাদের পথের কাটা মনে করে বা তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় তাদেরকে সরানোর জন্য এহেন অপকর্ম নেই-যা তারা করে না। বিগত ১৫ বছর আওয়ামী ফ্যাসিজমের দোসর হয়ে কলেজের কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছে। হাজারো অপরাধ করা সত্ত্বেও তারা বর্তমানে বহাল তবিয়তে থেকে কলেজের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে এবং অনেক দায়িত্বশীল শিক্ষকদেরকে মামলার হুমকি দিচ্ছে এবং সংবাদকর্মীদের কাছে একতরফা মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে মানহানীকর সংবাদ প্রকাশ করিয়ে সাধারন মানুষকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা সহ সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

‘ভয়ঙ্কর বদরুল’-শীর্ষক সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ

আপলোড সময় : ০৭:২৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে আপনার পত্রিকায় ‘ভয়ঙ্কর বদরুল’ শিরোনামে যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর। প্রতিবেদকের নামহীন এবং আমার কোনো সাক্ষাৎকার এমনকি কোনো যোগাযোগ ছাড়াই প্রতিবেদন প্রকাশ কী সাংবাদিকতা পেশার নীতি বিরুদ্ধ নয়?কোনো ধরণের প্রমাণ ব্যতীত অসৎ উদ্দেশ্যে ঢালাওভাবে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আপনার এই লেখনী ব্যক্তিগতভাবে শুধু আমার নয়; বরং সমগ্র শিক্ষক সমাজের জন্য মানহানিকর বলে মনে করি।
২০০৪ সাল হতে আমি এই কলেজে অত্যন্ত সুনামের সাথে চাকুরিরত আছি। কলেজে কোচিং বাণিজ্য, এমপিও সারেন্ডার, ফান্ড লুটপাট, নানা অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার কারণে কলেজের দুর্নীতিবাজ একটি চক্র একেবারে শুরু হতেই আমাকে বিতাড়নের জন্য বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে নানা অপবাদ ও কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু কখনোই তারা সফল হতে পারেনি। কখনো কলেজে ঠিক সময়ে আসিনি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবেনা। কলেজ প্রশাসনের হয়রানি ও মামলা দেওয়ায় ২০২২ সালের পর আমার সহধর্মিনী মারাত্মক অসুস্থ হয়ে বাসায় সার্বক্ষণিক অক্সিজেন দিয়ে রাখতে হয়। উল্লেখ্য, আমার স্ত্রীর হার্ট মাত্র ১০% কাজ করে এবং দুটি ছোট সন্তান নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি।

ঢাকা-০৭ আসনের সাবেক এমপি হাজী মোঃ সেলিমের সাথে আমার একটি ছবি কর্তন করে আমাকে ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মূলত ২০১৯ সালের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী তৎকালীন গভর্নিং বডির সভাপতি সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনের ভায়রা অধ্যাপক ড. হারুনর রশিদ খান ও তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধি আবু নাঈম মোঃ রাফি, বাদল চন্দ্র অপু ও নুরুন্নাহার বেগমের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে তাদের পদ খারিজ হয়ে যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃক শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তা স্থগিত করে। এমতাবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সাংসদের সহযোগিতায় শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন করে। উক্ত নির্বাচনে শাহ উম্মে সালমা ইয়াছমিন, মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও আমি মোহাঃ বদরুল ইসলাম নির্বাচিত হই। ঐদিন সাংসদ হাজী মোঃ সেলিম নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধিদেরকে উত্তরীয় পরিয়ে অভিনন্দন জানান-যা ২৬ জানুয়ারি ২০২০ সালে ৎরংরহমনফ.পড়স-সহ অন্যান্য পত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশিত হয়। এছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২২-এ ঊঠওঘঈঊ মৎড়ঁঢ় ও এডুকেশন ওয়াচ কর্তৃৃক শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হই। উল্লেখ্য, এর পূর্বে ২০১০ সালের ৪জুন (নিমতলীর অগ্নিকাণ্ড) ব্যতীত কলেজে কোনোদিন হাজী মোঃ সেলিমকে আসতে দেখিনি।

২০০৫ সালে বিভাগীয় প্রধান জানে আলম শিকদার ভাইস প্রিন্সিপ্যাল হওয়ায় আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাই। বিভাগীয় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে তখন কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম ছিলনা। বিভাগীয় চেয়ারম্যান জনাব তাহমিনা হাসনাত পদত্যাগ করায় প্রশাসন ১২জুন-২০০৭ তারিখে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদান করেন। উল্লেখ্য, তাহমিনা হাসনাতের বিরুদ্ধে আমি কখনোই কোনো অভিযোগ দেইনি। তৎকালীন উপাধ্যক্ষ জনাব জানে আলমের হাতে লেখা ড্রাফট কপি করে বিভাগীয় কর্মচারী আতিকুল ইসলাম অভিযোগ দায়ের করে।

২৫আগষ্ট-২০০৭ তারিখে তৎকালীন গভর্নিং বডির সভায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক জনাব ফরিদ হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেখানে আমিসহ মোট ১৬ জন শিক্ষককে মামলা দায়েরের জন্য বলা হয়- যা পত্রিকাতে বিশদভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এটাও বলা হয় মামলা দায়ের না করলে তাহমিনা হাসনাতের মতো পদত্যাগ করতে হবে। পরবর্তীতে জনাব ফরিদ হোসেন ও সাবেক অধ্যক্ষ জনাব মোস্তাক আহমেদ মারুফ (মারুফ চিনু)-এর সাথে পরামর্শক্রমে অভিযোগ দায়ের করি। পরবর্তীতে জনাব ফরিদ হোসেনের মামলা উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে প্রশাসন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কলেজেপ্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। উল্লেখ্য, কলেজের দুর্নীতিবাজ চক্রটি বিভিন্ন সময়ে সৎ ও দায়িত্বশীল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মাদকপাচার, মানব পাচারসহ বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে তাদের হেনস্তা করে। জনাব ফরিদ হোসেনকেও মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজঅপবাদ দিয়ে অভিযোগ দিয়েছিল চক্রটি।

জনাব গোপাল চন্দ্র ঘোষ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের (বিএমটি) শিক্ষক। বিএমটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কিন্তু তৎকালীন প্রশাসন দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসর হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জুন-২০১৩ সালে যখন আমাকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন গোপালের পক্ষের শক্তি প্রশাসনিক ক্ষমতায় ছিল।

২০১৯ সালে কলেজের নামে জমি ক্রয়, সাবস্টেশন স্থাপন, বিভাগীয় উন্নয়নসহ বিভিন্ন কৌশলে কলেজের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে কলেজের দুর্নীতিবাজ চক্রটি ঢাকার একটি মামলাবাজ চক্রের সাথে জড়িত হয়ে ২০আগষ্ট-২০২০ তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। চাঞ্চল্যকর মামলাটির বিষয়ে তৎকালীন মিডিয়ায় ব্যাপক খবর প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে মামলার মহামান্য বিচারক জনাব জাকি আল ফারাবী একটি মামলা দায়ের করেন। এপরিপ্রেক্ষিতে সিআইডির তদন্ত রিপোর্টে মামলাবাজ চক্র, মামলার বাদী, মামলার অর্থদাতা, মামলা দায়েরের কারণ প্রভৃতি বিস্তারিতভাবে উঠে আসে। ডিবি রিপোর্টেও সাজানো ও মিথ্যা মামলাটির সাথে অর্থ লেনদেন ও কলেজের মামলাবাজ সিন্ডিকিটটির সংশ্লিষ্টতার বিষয় উঠে এসেছে। ২৬এপ্রিল-২০২৪ তারিখের পূর্ব পর্যন্ত মামলার বাদীর কোনো অস্তিÍত্ব না থাকায় বাদীকে হুমকি প্রদান ও আদালতে আসার ক্ষেত্রে বাঁধা প্রদানের কোনো প্রশ্নই আসেনা। কলেজের মামলাবাজ চক্রটি আমার বিরুদ্ধে আরো মামলা দিতে পারে এজন্য ৬ ফেব্রুয়ারী-২০২১ তারিখে চকবাজার থানায় একটি জিডি দায়ের করি।

আমি দুইবার শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলাম। এসময়ে কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি। জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে কখনোই কোনো শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীর সাথে অশোভন বা অশালীন আচরণ করিনি। গার্হস্থ্য অর্থনীতির যে শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে, করোনা মহামারী চলাকালীন তার কোনো ক্লাস না থাকায় সে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। উল্লেখ্য, উক্ত শিক্ষক লেকচারভিত্তিক শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিতেন।

মূলত কলেজের দুর্নীতিবাজ ও মামলাবাজ শিক্ষকদের চক্রটি বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তাদের অপরাধ ও দুর্নীতির মহাযজ্ঞ চালাচ্ছে। তারা যাদেরকে তাদের পথের কাটা মনে করে বা তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় তাদেরকে সরানোর জন্য এহেন অপকর্ম নেই-যা তারা করে না। বিগত ১৫ বছর আওয়ামী ফ্যাসিজমের দোসর হয়ে কলেজের কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছে। হাজারো অপরাধ করা সত্ত্বেও তারা বর্তমানে বহাল তবিয়তে থেকে কলেজের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে এবং অনেক দায়িত্বশীল শিক্ষকদেরকে মামলার হুমকি দিচ্ছে এবং সংবাদকর্মীদের কাছে একতরফা মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে মানহানীকর সংবাদ প্রকাশ করিয়ে সাধারন মানুষকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা সহ সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন