ঢাকা ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিসিবি থেকে কলেজ সংস্কার—তিনটি দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযান

রনি মজুমদার
রনি মজুমদার
  • আপলোড সময় : ০১:০০:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩২৯ বার পড়া হয়েছে

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কঠোর অবস্থানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (১৫ এপ্রিল ২০২৫) দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট দেশের তিনটি ভিন্ন স্থানে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে প্রাথমিকভাবে একাধিক আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বিসিবিতে টিকিট বিক্রি ও ক্রিকেট লিগে দুর্নীতি
প্রথম অভিযানে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) বিভিন্ন ক্রিকেট লীগের বাছাই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর বিসিবি কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি টিম।

তদন্তে দেখা যায়, ঢাকা তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগের বাছাই পর্বে নামসর্বস্ব কয়েকটি ক্লাবের নামে আবেদন দেখিয়ে অনিয়ম করা হয়েছে। এছাড়াও বিপিএলের টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনে বড় ধরনের অসঙ্গতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। সদ্য সমাপ্ত ১১তম বিপিএলে ১৩ কোটি টাকা আয় দেখালেও, ৩য় থেকে ১০ম বিপিএল মিলিয়ে মাত্র ১৫ কোটি টাকা আয় দেখানো হয়েছে। এই অস্বাভাবিক পার্থক্য অর্থ আত্মসাতের ইঙ্গিত দেয়।

এছাড়া “ক্রিকেট সেলিব্রেট মুজিব ১০০” অনুষ্ঠানে ২৫ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ের কথা বলা হলেও প্রকৃত খরচ মাত্র ৭ কোটি টাকা বলে জানা গেছে, অর্থাৎ প্রায় ১৯ কোটি টাকা অনিয়ম হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে।

গোপালগঞ্জে কলেজ সংস্কারে বিলম্ব ও নিম্নমানের সরঞ্জাম
দ্বিতীয় অভিযান পরিচালিত হয় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজে। কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন সংস্কারে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের জেলা কার্যালয় এ অভিযান চালায়।

তদন্তে দেখা যায়, বিদেশি পণ্যের বদলে দেশীয় কোম্পানির (সুপার স্টার) রেগুলেটর ও থ্রি গ্যাং সুইচ সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া এক লাখ টাকার ক্যাবল ও সার্কিট ব্রেকারগুলো প্রকল্পস্থলে অনুপস্থিত। এসব বিষয় থেকে সংস্কার কাজের নামে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মোল্লাহাটে ঘুষের অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অভিযান
তৃতীয় অভিযানটি হয় বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্লিপ ফান্ড ও রুটিন মেইনটেন্যান্সে ঘুষ দাবি ও নানা অনিয়মের অভিযোগে দুদকের জেলা কার্যালয় অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানকালে শিক্ষকদের সাথে কথা বলা ও কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। টিমের প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে জানা যায়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযানের সময় সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। পর্যালোচনার পর কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিসিবি থেকে কলেজ সংস্কার—তিনটি দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযান

আপলোড সময় : ০১:০০:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কঠোর অবস্থানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (১৫ এপ্রিল ২০২৫) দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট দেশের তিনটি ভিন্ন স্থানে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে প্রাথমিকভাবে একাধিক আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বিসিবিতে টিকিট বিক্রি ও ক্রিকেট লিগে দুর্নীতি
প্রথম অভিযানে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) বিভিন্ন ক্রিকেট লীগের বাছাই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর বিসিবি কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি টিম।

তদন্তে দেখা যায়, ঢাকা তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগের বাছাই পর্বে নামসর্বস্ব কয়েকটি ক্লাবের নামে আবেদন দেখিয়ে অনিয়ম করা হয়েছে। এছাড়াও বিপিএলের টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনে বড় ধরনের অসঙ্গতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। সদ্য সমাপ্ত ১১তম বিপিএলে ১৩ কোটি টাকা আয় দেখালেও, ৩য় থেকে ১০ম বিপিএল মিলিয়ে মাত্র ১৫ কোটি টাকা আয় দেখানো হয়েছে। এই অস্বাভাবিক পার্থক্য অর্থ আত্মসাতের ইঙ্গিত দেয়।

এছাড়া “ক্রিকেট সেলিব্রেট মুজিব ১০০” অনুষ্ঠানে ২৫ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ের কথা বলা হলেও প্রকৃত খরচ মাত্র ৭ কোটি টাকা বলে জানা গেছে, অর্থাৎ প্রায় ১৯ কোটি টাকা অনিয়ম হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে।

গোপালগঞ্জে কলেজ সংস্কারে বিলম্ব ও নিম্নমানের সরঞ্জাম
দ্বিতীয় অভিযান পরিচালিত হয় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজে। কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন সংস্কারে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের জেলা কার্যালয় এ অভিযান চালায়।

তদন্তে দেখা যায়, বিদেশি পণ্যের বদলে দেশীয় কোম্পানির (সুপার স্টার) রেগুলেটর ও থ্রি গ্যাং সুইচ সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া এক লাখ টাকার ক্যাবল ও সার্কিট ব্রেকারগুলো প্রকল্পস্থলে অনুপস্থিত। এসব বিষয় থেকে সংস্কার কাজের নামে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মোল্লাহাটে ঘুষের অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অভিযান
তৃতীয় অভিযানটি হয় বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্লিপ ফান্ড ও রুটিন মেইনটেন্যান্সে ঘুষ দাবি ও নানা অনিয়মের অভিযোগে দুদকের জেলা কার্যালয় অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানকালে শিক্ষকদের সাথে কথা বলা ও কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। টিমের প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে জানা যায়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযানের সময় সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। পর্যালোচনার পর কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন