রাজধানীর বারে অনিয়ম, মাদক ও নারী সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে উদ্বিগ্ন জনতা: ‘আমারি ঢাকা’ নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য

- আপলোড সময় : ০৫:১৬:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
- / ৩৯৫ বার পড়া হয়েছে
ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোর একাধিক বার ও হোটেল এখন বিনোদনের আড়ালে পরিচালিত হচ্ছে এক অন্ধকার অপরাধ সাম্রাজ্য হিসেবে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে—মাদক সেবন, অনুমতিবিহীন ডিজে পার্টি, নারী সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম এবং বিদেশি এজেন্টদের গোপন মেলামেশার মতো গুরুতর অভিযোগ। এসব বার ও হোটেল রাজধানীর গুলশান, শেওড়াপাড়া ও বাংলামোটরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় জনমনে তৈরি হয়েছে গভীর উদ্বেগ এবং নিরাপত্তাজনিত আশঙ্কা।
শেওড়াপাড়ার শিউল বার: নিরিবিলি এলাকায় গোপন অপরাধ
লাইসেন্স ছাড়াই মদ বিক্রি, অপ্রাপ্তবয়স্কদের প্রবেশ এবং গভীর রাতে উচ্চ শব্দে ডিজে পার্টি—এই তিন অপরাধে নিয়মিত লিপ্ত ‘শিউল বার’। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, রাতে বাইরে চলাচল করাও হয়ে উঠেছে অনিরাপদ। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি এড়িয়ে বারটি অব্যাহতভাবে আইন ভঙ্গ করে চলেছে।
গুলশানের ‘আমারি ঢাকা’: বিদেশি এজেন্টদের গোপন ঘাঁটি?
সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গুলশানের ‘আমারি ঢাকা’ হোটেলকে ঘিরে। পাঁচতারকা মানের এই হোটেলটি শুধু বিলাসবহুল আতিথেয়তার জন্য নয়, বরং এর আড়ালে গড়ে উঠেছে এক অঘোষিত অপরাধ জগত। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এখানে সীসা, ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সরবরাহ করা হয়। নারী সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি হোটেলটিতে গোপনে আসা-যাওয়া করছেন দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সন্দেহভাজন এজেন্টরা।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, হোটেলটির মালিক অশোক একজন ‘ (RAW) এজেন্ট’, যিনি বিগত সরকারের প্রভাব কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে একাধিক বিদেশি নেটওয়ার্ক এবং অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তার এই প্রভাব এখনও বহাল রয়েছে।
অনুসন্ধান টিম যা পেয়েছে:
* গোপনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ
* প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য
* নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট কর্মীদের স্বীকারোক্তি
* অপরাধ সংশ্লিষ্ট ছবি ও প্রামাণ্য নথিপত্র
আইনি প্রেক্ষাপট:
‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’ অনুযায়ী:
* পারমিট ছাড়া বার পরিচালনা সম্পূর্ণ বেআইনি
* অপ্রাপ্তবয়স্কদের প্রবেশ নিষিদ্ধ
* অনুমতি ব্যতীত ডিজে পার্টি বা লেট ক্লোজিং আইনবিরোধী
* জনশৃঙ্খলা বিরোধী নারী সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড অপরাধ হিসেবে গণ্য
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উত্তর অঞ্চলের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ-এর কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন:
“আমি এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত অবগত নই। তবে যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ থাকে, আমরা তা গুরুত্ব সহকারে যাচাই করব এবং অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপসংহার:
রাজধানীর অভিজাত এলাকায় গড়ে ওঠা এই বার ও হোটেলগুলো বিনোদনের আড়ালে যে অনৈতিক ও অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা শুধু আইন ভঙ্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—বরং জাতীয় নিরাপত্তা ও তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যতের জন্য বড় হুমকি।
প্রশ্ন রয়ে যায়—কারা দিচ্ছে মদত এই অপরাধে? প্রশাসনের চোখ বন্ধ কেন?
জনগণ জবাব চায়। অপরাধের এই রাজত্ব আর কতদিন চলবে?