ঢাকা ০৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় সব দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক দল: ১২ দলীয় জোট

রনি মজুমদার
রনি মজুমদার
  • আপলোড সময় : ১২:৪৫:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • / ২৩০ বার পড়া হয়েছে

১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশের সব দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন চান এবং সেই নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরেই হওয়া উচিত। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ কথা বলেন।

বিবৃতিতে ১২ দলীয় জোট নেতারা নোবেলজয়ী ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। জাপান সফরকালে নিক্কেই ফোরামে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “ডিসেম্বরে কেবল একটি দল নির্বাচন চায়।” এ মন্তব্যকে “নিরেট মিথ্যাচার” উল্লেখ করে জোট নেতারা বলেন, “এটা সত্যের সম্পূর্ণ অপপ্রচার। দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তি বরাবরই ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়ে আসছে।”

জোট নেতারা অভিযোগ করেন, ড. ইউনূস কিছু মৌলবাদী, জনবিচ্ছিন্ন ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দলকে নিয়ে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে অবজ্ঞা করছেন এবং নির্বাচন বিলম্বিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বারবার জানিয়েছি, এই বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। দেশের বিভিন্ন প্রগতিশীল দল সভা, সেমিনার, সংবাদ সম্মেলন ও বৈঠকে এই দাবিই তুলেছে।”

ড. ইউনূসের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে জোট নেতারা বলেন, “তিনি ভুলে যাচ্ছেন কথার মারপ্যাঁচ বা পদত্যাগের নাটক দিয়ে গদি রক্ষা করা যাবে না। দেশের মানুষ তার কৌশল বুঝে গেছেন।”

তারা অভিযোগ করেন, ইউনূস গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা নেতাদের অবজ্ঞা করে, উল্টো ভোটবিরোধী বা স্বৈরাচারপন্থী শক্তিকে পাশে নিচ্ছেন। “আমরা, তুমি আর ডামি নির্বাচন প্রতিরোধে যাদের ভূমিকা ছিল না, এমন নেতাদের নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়,”—জানান তারা।

১২ দলীয় জোট নেতারা বলেন, দেশের মানুষ ১৯৭১, ১৯৯০ এবং বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধেও জীবন দিয়ে লড়েছে ভোট ও নির্বাচনের অধিকার রক্ষায়। তারা স্পষ্ট করে বলেন, “ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব এবং প্রয়োজন। সেনাবাহিনী থেকেও ইতিবাচক বার্তা এসেছে। এখন প্রয়োজন দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা এবং নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট শিডিউল প্রকাশ।”

তারা আরও বলেন, “ড. ইউনূসকে মনে রাখতে হবে, তিনি একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন। তার কাজ স্থায়ী নয়। এখনই নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই। পাশাপাশি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়াও চলমান থাকতে হবে।”

ড. ইউনূসের উদ্দেশ্যে তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করে ভোট ঠেকাতে চাইলে তার পরিণতি আফগানিস্তানের আশরাফ ঘানির মতো হতে পারে।”

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম.এ. মান্নান এবং পিএনপি চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় সব দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক দল: ১২ দলীয় জোট

আপলোড সময় : ১২:৪৫:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশের সব দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন চান এবং সেই নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরেই হওয়া উচিত। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ কথা বলেন।

বিবৃতিতে ১২ দলীয় জোট নেতারা নোবেলজয়ী ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। জাপান সফরকালে নিক্কেই ফোরামে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “ডিসেম্বরে কেবল একটি দল নির্বাচন চায়।” এ মন্তব্যকে “নিরেট মিথ্যাচার” উল্লেখ করে জোট নেতারা বলেন, “এটা সত্যের সম্পূর্ণ অপপ্রচার। দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তি বরাবরই ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়ে আসছে।”

জোট নেতারা অভিযোগ করেন, ড. ইউনূস কিছু মৌলবাদী, জনবিচ্ছিন্ন ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দলকে নিয়ে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে অবজ্ঞা করছেন এবং নির্বাচন বিলম্বিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বারবার জানিয়েছি, এই বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। দেশের বিভিন্ন প্রগতিশীল দল সভা, সেমিনার, সংবাদ সম্মেলন ও বৈঠকে এই দাবিই তুলেছে।”

ড. ইউনূসের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে জোট নেতারা বলেন, “তিনি ভুলে যাচ্ছেন কথার মারপ্যাঁচ বা পদত্যাগের নাটক দিয়ে গদি রক্ষা করা যাবে না। দেশের মানুষ তার কৌশল বুঝে গেছেন।”

তারা অভিযোগ করেন, ইউনূস গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা নেতাদের অবজ্ঞা করে, উল্টো ভোটবিরোধী বা স্বৈরাচারপন্থী শক্তিকে পাশে নিচ্ছেন। “আমরা, তুমি আর ডামি নির্বাচন প্রতিরোধে যাদের ভূমিকা ছিল না, এমন নেতাদের নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়,”—জানান তারা।

১২ দলীয় জোট নেতারা বলেন, দেশের মানুষ ১৯৭১, ১৯৯০ এবং বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধেও জীবন দিয়ে লড়েছে ভোট ও নির্বাচনের অধিকার রক্ষায়। তারা স্পষ্ট করে বলেন, “ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব এবং প্রয়োজন। সেনাবাহিনী থেকেও ইতিবাচক বার্তা এসেছে। এখন প্রয়োজন দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা এবং নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট শিডিউল প্রকাশ।”

তারা আরও বলেন, “ড. ইউনূসকে মনে রাখতে হবে, তিনি একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন। তার কাজ স্থায়ী নয়। এখনই নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই। পাশাপাশি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়াও চলমান থাকতে হবে।”

ড. ইউনূসের উদ্দেশ্যে তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করে ভোট ঠেকাতে চাইলে তার পরিণতি আফগানিস্তানের আশরাফ ঘানির মতো হতে পারে।”

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম.এ. মান্নান এবং পিএনপি চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন