ঢাকা ০৫:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এসপি’র সংবাদ সম্মেলন- ৬ ঘন্টার মধ্যে উন্মোচন, জোড়া খুনের আসামী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ০৮:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩
  • / ৩৬২ বার পড়া হয়েছে

জোড়া খুনের ঘটনার ব্যাপারে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার এসপি মোঃ শহীদুল ইসলাম পিপিএম(বার) সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আসামী মোঃ আলতাফ হোসেন (২৮), পিতা-মৃত আবুল কালাম, মাতা-মৃত আফজলের নেছা, সাং-চর মেহের (আব্দুল মুনাফের বাড়ী), ১নং ওয়ার্ড, চরবাদাম ইউপি, থানা-রামগতি, জেলা-লক্ষ্মীপুর প্রবাসে (ওমান) থাকা অবস্থায় রং নাম্বারের সূত্র ধরে ভিকটিম নুর নাহার বেগম (৪০), স্বামী-ফজলে আজিম কচি, সাং-গুপ্তাংক, বার্লিংটন মোড় (হক মঞ্জিল), ৫নং পৌর ওয়ার্ড, থানা-সুধারাম, জেলা-নোয়াখালী এর সহিত পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে ভিকটিম নুর নাহার বেগম আসামীকে প্রবাস (ওমান) হতে দেশে চলে এসে ব্যবসা করার জন্য বলে। ব্যবসার সম্পূর্ণ মূলধন এবং তাহার সকল দেনা প্রায় ২,৫০,০০০/- টাকা ভিকটিম (মা) বহন করবে বলে আসামীকে আশ্বাস দেয়। ভিকটিমের আশ্বাসে ০১ সপ্তাহ পূর্বে আসামী প্রবাস (ওমান) হতে ভিসা বাতিল করিয়ে সব ছেড়ে দেশে চলে আসে। দেশে এসে আসামী ভিকটিম নুর নাহার বেগমের সাথে তাহার বাসায় ৪/৫ বার এসে ব্যবসার টাকা দেওয়ার জন্য বললে ভিকটিম নুর নাহার বেগম ব্যবসার টাকা দিবে-দিবে বলে আসামীকে কালক্ষেপন করতে থাকে। বারবার টাকা দিবে বলিয়া ঘুরানোর কারণে আসামী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং টাকা না দিলে ভিকটিমের ক্ষতি করার জন্য ভিতরে ভিতরে মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।

বুধবার (১৪ জুন ) আসামী পুনরায় ব্যবসার টাকা চাওয়ার জন্য সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিমের বাসা বার্লিংটন মোড়ের হক মঞ্জিলে এসে ব্যবসার টাকা চাইলে ভিকটিম টাকা দিতে অস্বীকার করে। উক্ত বিষয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে টাকা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আসামীকে পুলিশে ধরিয়ে দিবে বলে ভিকটিম নুর নাহার হুমকি প্রদান করে এবং আসামীকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে উদ্যত হয়। উক্ত সময় আসামী ক্ষিপ্ত হয়ে তাহার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে তাহার বাসার দক্ষিণ-পূর্ব পাশের কক্ষের ভিতরে উপর্যুপরি আঘাত করে। উক্ত সময় ভিকটিম নুর নাহার বেগমের মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী (১৭) ছুরিকাঘাত করার কারণে ভিকটিম নুর নাহারের শোরচিৎকারের শব্দ শুনে তাহার মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে আসামী আলতাফ হোসেন তাহাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে প্রিয়ন্তী দৌঁড়ে নিচে নেমে নিচ তলার ভাড়াটিয়ার বাসার দরজায় ধাক্কা দিলে ভাড়াটিয়া দরজা খুলে দেয়। দরজা খোলার সাথে সাথে প্রিয়ন্তী ডাইনিং রুমের মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে। প্রিয়ন্তীর পিছু পিছু আসামী আলতাফ হোসেন দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ভিকটিম নুর নাহার বেগম ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। স্থানীয় লোকজন গুরুতরভাবে জখমপ্রাপ্ত প্রিয়ন্তীকে উদ্ধার করে দ্রæত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, নোয়াখালীতে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করে।

হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আসামী আলতাফ হোসেনকে গ্রেফতার করে এবং ঘটনাস্থল হইতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে। নিহত ভিকটিমদ্বয়ের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতপূর্বক মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, নোয়াখালীতে প্রেরণ করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী আলতাফ হোসেনকে থানা হেফাজতে নিয়ে এসে পুলিশ বিভিন্ন ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামী পুলিশের নিকট উপরোক্ত ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানায় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরির কভার তাহার দেওয়া তথ্য মতে তাহার মেস হইতে উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।

এসপি মোঃ শহীদুল ইসলাম পিপিএম (বার) আরো জানান, জোড়া খুনের ঘটনার বিষয়ে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এসপি’র সংবাদ সম্মেলন- ৬ ঘন্টার মধ্যে উন্মোচন, জোড়া খুনের আসামী গ্রেফতার

আপলোড সময় : ০৮:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩

জোড়া খুনের ঘটনার ব্যাপারে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার এসপি মোঃ শহীদুল ইসলাম পিপিএম(বার) সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আসামী মোঃ আলতাফ হোসেন (২৮), পিতা-মৃত আবুল কালাম, মাতা-মৃত আফজলের নেছা, সাং-চর মেহের (আব্দুল মুনাফের বাড়ী), ১নং ওয়ার্ড, চরবাদাম ইউপি, থানা-রামগতি, জেলা-লক্ষ্মীপুর প্রবাসে (ওমান) থাকা অবস্থায় রং নাম্বারের সূত্র ধরে ভিকটিম নুর নাহার বেগম (৪০), স্বামী-ফজলে আজিম কচি, সাং-গুপ্তাংক, বার্লিংটন মোড় (হক মঞ্জিল), ৫নং পৌর ওয়ার্ড, থানা-সুধারাম, জেলা-নোয়াখালী এর সহিত পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে ভিকটিম নুর নাহার বেগম আসামীকে প্রবাস (ওমান) হতে দেশে চলে এসে ব্যবসা করার জন্য বলে। ব্যবসার সম্পূর্ণ মূলধন এবং তাহার সকল দেনা প্রায় ২,৫০,০০০/- টাকা ভিকটিম (মা) বহন করবে বলে আসামীকে আশ্বাস দেয়। ভিকটিমের আশ্বাসে ০১ সপ্তাহ পূর্বে আসামী প্রবাস (ওমান) হতে ভিসা বাতিল করিয়ে সব ছেড়ে দেশে চলে আসে। দেশে এসে আসামী ভিকটিম নুর নাহার বেগমের সাথে তাহার বাসায় ৪/৫ বার এসে ব্যবসার টাকা দেওয়ার জন্য বললে ভিকটিম নুর নাহার বেগম ব্যবসার টাকা দিবে-দিবে বলে আসামীকে কালক্ষেপন করতে থাকে। বারবার টাকা দিবে বলিয়া ঘুরানোর কারণে আসামী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং টাকা না দিলে ভিকটিমের ক্ষতি করার জন্য ভিতরে ভিতরে মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।

বুধবার (১৪ জুন ) আসামী পুনরায় ব্যবসার টাকা চাওয়ার জন্য সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিমের বাসা বার্লিংটন মোড়ের হক মঞ্জিলে এসে ব্যবসার টাকা চাইলে ভিকটিম টাকা দিতে অস্বীকার করে। উক্ত বিষয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে টাকা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আসামীকে পুলিশে ধরিয়ে দিবে বলে ভিকটিম নুর নাহার হুমকি প্রদান করে এবং আসামীকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে উদ্যত হয়। উক্ত সময় আসামী ক্ষিপ্ত হয়ে তাহার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে তাহার বাসার দক্ষিণ-পূর্ব পাশের কক্ষের ভিতরে উপর্যুপরি আঘাত করে। উক্ত সময় ভিকটিম নুর নাহার বেগমের মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী (১৭) ছুরিকাঘাত করার কারণে ভিকটিম নুর নাহারের শোরচিৎকারের শব্দ শুনে তাহার মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে আসামী আলতাফ হোসেন তাহাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে প্রিয়ন্তী দৌঁড়ে নিচে নেমে নিচ তলার ভাড়াটিয়ার বাসার দরজায় ধাক্কা দিলে ভাড়াটিয়া দরজা খুলে দেয়। দরজা খোলার সাথে সাথে প্রিয়ন্তী ডাইনিং রুমের মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে। প্রিয়ন্তীর পিছু পিছু আসামী আলতাফ হোসেন দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ভিকটিম নুর নাহার বেগম ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। স্থানীয় লোকজন গুরুতরভাবে জখমপ্রাপ্ত প্রিয়ন্তীকে উদ্ধার করে দ্রæত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, নোয়াখালীতে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করে।

হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আসামী আলতাফ হোসেনকে গ্রেফতার করে এবং ঘটনাস্থল হইতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে। নিহত ভিকটিমদ্বয়ের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতপূর্বক মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, নোয়াখালীতে প্রেরণ করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী আলতাফ হোসেনকে থানা হেফাজতে নিয়ে এসে পুলিশ বিভিন্ন ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামী পুলিশের নিকট উপরোক্ত ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানায় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরির কভার তাহার দেওয়া তথ্য মতে তাহার মেস হইতে উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।

এসপি মোঃ শহীদুল ইসলাম পিপিএম (বার) আরো জানান, জোড়া খুনের ঘটনার বিষয়ে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন