ঢাকা ১১:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে শ্বশুরকে হত্যার মামলায় জামাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ১২:৩৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩
  • / ৪০৬ বার পড়া হয়েছে

ফরিদপুরে শ্বশুর তোতা মিয়াকে হত্যার দায়ে জামাতা সদরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নয়রশি গ্রামের বাসিন্দা আলামিনকে (৪১) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাকে আরও ছয়মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন। রায় প্রদানের সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। হত্যার শিকার তোতা মিয়া সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের গফুর মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা।
২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে বারোটার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে গফুর মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে তোতা মিয়া বাড়িতে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে তোতা মিয়ার মেয়ে আজুফা বেগমের (৩৮) সঙ্গে আলামিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আলামিন বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের টাকার জন্য তাকে নির্যাতন করে আসছিল। জুয়া খেলা ও মাদকের টাকার জন্য আজুফার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলে। এতে আজুফা অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় আলামিন। নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি ফরিদপুরের নোটারি পাবলিক-এর মাধ্যমে আলামিনকে একতরফা তালাক দেয় আজুফা।
এ ঘটনা জানার পরে আলামিন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর ২০ জানুয়ারি শ্বশুর বাড়িতে এসে আলামিন ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার শ্বশুর তোতা মিয়াকে টিউবয়েলের মাথা দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। ওইদিনই (২১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শহরের রাজবাড়ির রাস্তার মোড় এলাকায় মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী খাদিজা বেগম বাদী হয়ে ২২ জানুয়ারি আলামিন ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিন জনকে আসামি করে সদরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলাটি প্রথমে সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অখিল কুমার বিশ্বাস, পরে সিআইডি ফরিদপুর জোনের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম এবং সর্বশেষ সিআইডি’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফসার উদ্দিন তদন্ত করে ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর আলামিনকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ওই আদালতের পিপি সানোয়ার হোসেন বলেন, ১৮৬০ সালের ফৌজদারি আইনের ৩০২ ধারায় এ রায় প্রদান করা হয়।
তিনি বলেন, এর ফলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ফরিদপুরে শ্বশুরকে হত্যার মামলায় জামাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আপলোড সময় : ১২:৩৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩

ফরিদপুরে শ্বশুর তোতা মিয়াকে হত্যার দায়ে জামাতা সদরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নয়রশি গ্রামের বাসিন্দা আলামিনকে (৪১) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাকে আরও ছয়মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন। রায় প্রদানের সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। হত্যার শিকার তোতা মিয়া সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের গফুর মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা।
২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে বারোটার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে গফুর মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে তোতা মিয়া বাড়িতে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে তোতা মিয়ার মেয়ে আজুফা বেগমের (৩৮) সঙ্গে আলামিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আলামিন বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের টাকার জন্য তাকে নির্যাতন করে আসছিল। জুয়া খেলা ও মাদকের টাকার জন্য আজুফার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলে। এতে আজুফা অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় আলামিন। নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি ফরিদপুরের নোটারি পাবলিক-এর মাধ্যমে আলামিনকে একতরফা তালাক দেয় আজুফা।
এ ঘটনা জানার পরে আলামিন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর ২০ জানুয়ারি শ্বশুর বাড়িতে এসে আলামিন ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার শ্বশুর তোতা মিয়াকে টিউবয়েলের মাথা দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। ওইদিনই (২১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শহরের রাজবাড়ির রাস্তার মোড় এলাকায় মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী খাদিজা বেগম বাদী হয়ে ২২ জানুয়ারি আলামিন ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিন জনকে আসামি করে সদরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলাটি প্রথমে সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অখিল কুমার বিশ্বাস, পরে সিআইডি ফরিদপুর জোনের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম এবং সর্বশেষ সিআইডি’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফসার উদ্দিন তদন্ত করে ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর আলামিনকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ওই আদালতের পিপি সানোয়ার হোসেন বলেন, ১৮৬০ সালের ফৌজদারি আইনের ৩০২ ধারায় এ রায় প্রদান করা হয়।
তিনি বলেন, এর ফলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন