সোনারগাঁয়ে হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয়”র ছাত্রীদের কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ
- আপলোড সময় : ১১:০৫:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৭৫৫ বার পড়া হয়েছে
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে “হোসেনপুর এসপি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়”র নারী শিক্ষার্থীদের কু-প্রস্তাব দেওয়ার পর রাজি না হওয়ায় অশালীন ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিভাবক সদস্য সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ দিন ধরে অশালীন ও অসদাচরণের এমন কর্মকান্ড চললেও বেশ কয়েকদিন ধরে এর তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এগিয়ে আসেন অভিভাবকরা। যা প্রকট রূপ নেয় শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর)।
অভিযোগ রয়েছে, অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের বাধ্য করা হয়েছে দায়সারাভাবে মিমাংসার রায় মেনে বাড়ি যেতে। এমনকি কি মিমাংসা করা হয়েছে তাও গণমাধ্যমকর্মীদের না জানিয়ে তাদের কৌশলে ম্যানেজ করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
ওই স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার নিহার বাবা শহিদুল ইসলাম জানান, তার মেয়ে প্রায় সময় স্কুল থেকে বাসায় ফিরে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে অভিভাবক সদস্য সালাহ উদ্দিনের নেক্কারজনক বিভিন্ন অপকর্মের কথা জানাতো। প্রায় প্রতিদিন এমন অভিযোগে বাবা শহিদুল মেয়ের এমন সিদ্ধান্তে বিচলিত ও শঙ্কিত হয়ে বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক মিয়াজীসহ অন্যান্য শিক্ষকদের জানালেও কোন প্রতিকার হয়নি। একপর্যায় নিহা লেখাপড়া করবেনা বলে গত বৃহস্পতিবার বাড়ি গিয়ে তার বাবা শহিদুল ইসলামকে জানায়। শহিদুল তার ও অন্যান্য নারী শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের মানসম্মানের কথা চিন্তা করে শনিবার এলাকাবাসীসহ স্কুলে গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, স্কুলে এসেম্বলি (সম্মিলিত সভা) চলাকালীন কোন নারী শিক্ষার্থী শ্রেণি কক্ষে (ক্লাশরুম) থাকলে হাতে লাঠি নিয়ে তাদের (ছাত্রী) তাড়া করেন সালাউদ্দিন।
ছাত্রীদের পিরিয়ড (মাসিক) বা মেয়েলি কোন সমস্যার সমাধানের জন্যে শিক্ষিকারা থাকলেও এই স্কুলে ছুটি নিতে হয় প্রধান শিক্ষক আর ৬ নং সদস্য সালাহউদ্দিনের কাছ থেকে। এমনও ঘটনা ঘটেছে, মেয়েলি সমস্যার কথা বললে সালাহ উদ্দিন ছাত্রীদের হাতে নেপকিন দিয়ে তা ব্যবহার করার পরামর্শও দেন। শুধু তা-ই নয়, ছুটি নিতে গেলে ছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্ন করে ছাত্রীদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেন অভিযুক্তরা।
ছাত্রীদের কমনরুম (ছাত্রীদের বিশ্রামাগার) এ যে কোন সময় অভিভাবক সদস্য সালাহউদ্দিন আচমকা প্রবেশ করে। এতে করে বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরতে হয়, যা ছাত্রীদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।
প্রায় সময় সালাহউদ্দিন তার সদস্য পদের কারণে বিভিন্ন সময় ক্লাশরুম (শ্রেণি কক্ষ) এ প্রবেশ করে শিক্ষকদের হাত থেকে বই নিয়ে পড়ানো। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সামনে শিক্ষককে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ করা। শিক্ষকদের বিভিন্ন পশুর সাথে তুলনা করে গালাগাল করা।
সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অভিভাবক সদস্য সালাহ উদ্দিন প্রধান শিক্ষকের রুমে বসে থাকেন এবং কোন শিক্ষার্থী কোন বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলে তার (সালাহউদ্দিন) অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন।
সকলের সামনে ভোকেশনাল শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর লিঙ্গ কেটে দেওয়ার হুমকী দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন শহিদুল ইসলাম। মেয়েদের কমন রুমের ভিতর যেকোন সময় প্রবেশ করে অশালীন মন্তব্য, পিরিয়ডের সময় প্রধান শিক্ষক ও সালাউদ্দিনের কাছেই ছুটি চাইতে হয় এবং ব্যাগে নেপকিন ভরে দিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে অন্যতম অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে কমিটির লোকজনের সাথে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয়রা উভয়পক্ষের মধ্যে তা মিমাংসা করেন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মইনুদ্দিন আাহমেদ বাদলের সাথে যোগোযোগ করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হই।
অভিযুক্ত সালাউদ্দিনের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি নিজেকে নির্দোশ দাবি করে সকল অপরাধ স্থানীয় এক যুবকের ওপর চাঁপিয়ে দেন। পরে মিমাংসায় বসা গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাকে কেন স্কুলে যেতে নিষেধ করেছেন, প্রতিবেদক এমন প্রশ্ন করলে তিনি মোবাইলের সংযোগটি বিচ্ছন্ন করে দেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক নিজামী’র সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, এইটা একটা ভুল বুঝাবুঝি। যা হয়েছে তা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মিমাংসা হয়েছে বলে দাবি করেন।