ঢাকা ১১:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে দুর্নীতির মামলায় সেই যুবলীগ নেতা মতি কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ০৫:৫২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪৩২ বার পড়া হয়েছে

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচার মামলায়
অবশেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক মতিউর রহমান মতিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মঈনুল হাসান রওশনী। এদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামি ছিলেন যুবলীগের এই নেতা। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

সোমবার (৬ নভেম্বর) মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে শুনানি শেষে মতিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যুবলীগ নেতা ও কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি সুমিলপাড়া এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, যুবলীগ নেতা ও কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি সোমবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান কাউন্সিলর মতির জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে দুদকের মামলায় পরবর্তী তারিখে হাজির না হওয়ায় আদালত মতির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালত মতির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির প্রায় তিন মাস পার হলেও প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরাফেরা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন বিতর্কিত এই যুবলীগ নেতা মতি। পরোয়ানার কাগজ নিয়েও স্থানীয় প্রশাসন লুকোচুরি খেলা খেলেন বেশ কিছুদিন। পরবর্তীতে তা প্রকাশ্যে এলে এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেন মতি। বেশ কিছুদিন পলাতক থাকলেও গত মঙ্গলবার আবারও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রকাশ্যে অংশ নিয়েছেন একটি অনুষ্ঠানের নৈশ ভোজে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য (নারায়ণগঞ্জ-৪) একেএম শামীম ওসমানের পাশে বসে টেবিলে খাবার খেতেও দেখা যায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি যুবলীগ নেতা কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিকে। তবে আড়ালে থেকেও ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে সশরীরে অংশ নিয়েছেন যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিমুল পাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দার জানান, আদালত তাকে (মতিউর রহমান মতি) কারাগারে পাঠিয়ে আবারও প্রমানিত করেছেন যে আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। একজন অপরাধী তার শাস্তি পেয়েছে তাই আমরা সুমিল পাড়াবাসী আনন্দিত। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলো ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। মতিউর রহমান মতির কঠোর শাস্তির দাবি করেন তারা।

উল্লেখ্য, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান (মতি) ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ১-এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আসামি কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে ৬ কোটি ১ লাখ ৭২ হাজার ২৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৫ হাজার ৬৩৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ৮২ কোটি ৫১ লাখ ৪২৪ টাকা জমা করে তার থেকে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৯ টাকা উত্তোলন করে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অবস্থান গোপন করার অভিযোগ আনা হয়।অপর মামলার এজাহারে বলা হয়, কাউন্সিলর মতির স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯৫ টাকা জমা করেন। এর পর সেখান থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৮ টাকা উত্তোলন করে তা রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তরের অভিযোগ আনা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

অবশেষে দুর্নীতির মামলায় সেই যুবলীগ নেতা মতি কারাগারে

আপলোড সময় : ০৫:৫২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ নভেম্বর ২০২৩

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচার মামলায়
অবশেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক মতিউর রহমান মতিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মঈনুল হাসান রওশনী। এদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামি ছিলেন যুবলীগের এই নেতা। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

সোমবার (৬ নভেম্বর) মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে শুনানি শেষে মতিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যুবলীগ নেতা ও কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি সুমিলপাড়া এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, যুবলীগ নেতা ও কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি সোমবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান কাউন্সিলর মতির জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে দুদকের মামলায় পরবর্তী তারিখে হাজির না হওয়ায় আদালত মতির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালত মতির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির প্রায় তিন মাস পার হলেও প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরাফেরা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন বিতর্কিত এই যুবলীগ নেতা মতি। পরোয়ানার কাগজ নিয়েও স্থানীয় প্রশাসন লুকোচুরি খেলা খেলেন বেশ কিছুদিন। পরবর্তীতে তা প্রকাশ্যে এলে এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেন মতি। বেশ কিছুদিন পলাতক থাকলেও গত মঙ্গলবার আবারও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রকাশ্যে অংশ নিয়েছেন একটি অনুষ্ঠানের নৈশ ভোজে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য (নারায়ণগঞ্জ-৪) একেএম শামীম ওসমানের পাশে বসে টেবিলে খাবার খেতেও দেখা যায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি যুবলীগ নেতা কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিকে। তবে আড়ালে থেকেও ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে সশরীরে অংশ নিয়েছেন যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিমুল পাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দার জানান, আদালত তাকে (মতিউর রহমান মতি) কারাগারে পাঠিয়ে আবারও প্রমানিত করেছেন যে আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। একজন অপরাধী তার শাস্তি পেয়েছে তাই আমরা সুমিল পাড়াবাসী আনন্দিত। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলো ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। মতিউর রহমান মতির কঠোর শাস্তির দাবি করেন তারা।

উল্লেখ্য, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান (মতি) ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ১-এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আসামি কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে ৬ কোটি ১ লাখ ৭২ হাজার ২৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৫ হাজার ৬৩৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ৮২ কোটি ৫১ লাখ ৪২৪ টাকা জমা করে তার থেকে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৯ টাকা উত্তোলন করে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অবস্থান গোপন করার অভিযোগ আনা হয়।অপর মামলার এজাহারে বলা হয়, কাউন্সিলর মতির স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯৫ টাকা জমা করেন। এর পর সেখান থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৮ টাকা উত্তোলন করে তা রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তরের অভিযোগ আনা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন