ঢাকা ০৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভয়ঙ্কর বদরুল! লাগাম টানবে কে?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ০৯:০৩:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৯৬৫ বার পড়া হয়েছে

কখনো কলেজে ঠিক সময়ে আসতেন না। আসলেও কোন রকম উপস্থিতির খাতায় সাইন করেই চলে যেতেন নিজের কাজে। কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামীলীগ আবার কখনো জাতীয়পার্টি অর্থাৎ যখন যে দলের নাম ব্যবহার করার প্রয়োজন হতো সেটিই তিনি করতেন। তার কাজ হাসিল করা হয়ে গেলে অন্যদিকে মোড় দিতেন। শিক্ষকতার পেশার আড়ালে আদম ব্যবসা, মাদক ব্যবসাসহ নানামূখী অপরাধ করে বেড়াতেন তিনি। বলছি পুরান ঢাকার শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক বদরুল ইসলামের নামে। যিনি শিক্ষকতাকে পুঁজি করে নিজের আখের গুছাতেই সবসময় ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করেন। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মানবপাচারসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০০৫ সালে শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান তাহমিনা হাসানাতের নামে বিভিন্ন অভিযোগ এনে তাকে ওই পদ থেকে বহিস্কার করতে বাধ্য করেন বদরুল ইসলাম। পরবর্তীতে তিনিই ওই চেয়ারে টুপ করে বসে পড়েন। ২০০৫ সালে তিনি ওই কলেজের ফরিদ হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা, চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। ২০০৮ সালে আদম ব্যবসায় ঝামেলায় পরে ১২ জুন থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কলেজে আসেন নি তিনি। ওই সময়ের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার আহমেদ তার বেতন বন্ধ করে দেন। তারপর আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হাজী সেলিমের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তখনকার গভর্নিংবডিকে চাপ প্রয়োগ করে তার বেতন বাগিয়ে নেন তিনি। ২০১২ সালে আওয়ামীলীগের ক্ষমতার জোড়ে সহযোগী অধ্যাপক গোপাল চন্দ্র ঘোষকে চেয়ারম্যান হতে বাধা প্রদান করে সে নিজেই ওই বিভাগের চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকেন। ২০২০ সালের জুলাই মাসে তার বিরুদ্ধে মানবপাচার মামলা হয়। তিনি ওই মামলার এক নাম্বার আসামী। মামলা নাম্বার ৭/২০২০। ব্রাক্ষনবাড়িয়ায় তার বিরুদ্ধে ২০১২ সালে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৬(২)/০৭/১০ অপরাধের সত্যতা পান।ওই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের দায়িত্বে ছিলেন ব্রাক্ষনবাড়িয়ার তয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের বিচারক জাকি আল ফারাবি। বদরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনৈতিক আচরণ ও মানবপাচারের অভিযোগ এনে এই মামলাটি দায়ের করেন কুলসুম আক্তার নামে এক নারী। মামলা করার পর ওই মেয়েকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন বদরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। তাদের ভয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আদালত পাড়ায় আসতে পারছেন না ভুক্তভোগী ওই নারী।

২০২১ সালের নভেম্বর মাসে বদরুল ইসলাম গ্রার্হস্থ্য অর্থনীতির নারী শিক্ষিকার সাথে অশোভন ও অনৈতিক আচরণ করে নানামূখী ষড়যন্ত্র করে কোন প্রকার কারণ ও নোটিশ ছাড়াই তাকে সৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের ক্ষমতাবলে চাকুরীচ্যুত করে। গত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে হাজী সেলিম ও তার ক্যাডার বাহিনী এবং ওই কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের সহযোগীতায় পুরো কলেজ ক্যম্পাসে নিজের আধিপত্য জানান দিয়েছে ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক বদরুল ইসলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের কয়েকজন শিক্ষক এই প্রতিবেদককে জানান, স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হাজি সেলিমের ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে বদরুল ইসলাম কলেজটিকে তার নিজের করে নিয়েছিলো। তিনি যখন, তখন যে কোন শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করতেন। মামলা দিতেন, নির্যাতন করতেন। শিক্ষকদের কোন কথাই শুনতেন না তিনি। যার তার সাথে অসৎ আচরণ করতেন। তার কথা না শুনলেই হাজী সেলিমের পেটুয়াবাহিনী দিয়ে ওই শিক্ষককে লাঞ্চিত করতেন দ্বিধাবোধ করতেন না সুচতুর শিক্ষক বদরুল ইসলাম।

আকতারুজ্জান(ছদ্মনাম) এক শিক্ষক জানান, বদরুল ইসলাম শিক্ষক নামে কলংকের নাম। ওর মতো শিক্ষক থাকলে একটি প্রতিষ্ঠান কোনভাবেই ভালভাবে চলতে পারে না। কখনো আওয়ামীলীগ আবার কখনো জাতীয়পার্টি যখন যাকে দরকার তার নাম ব্যবহার করে আদর্শবান শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণসহ নানা কারনে অহেতুক শিক্ষকদের হুমকি দিতেন। সম্প্রতি গেল পাঁচ আগষ্ট ছাত্র জনতার অভুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেল এখন তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান দিচ্ছে তিনি বিএনপির দলের অতি আপনজন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এসব কুলাঙ্গার শিক্ষকদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোনভাবেই জায়গা দিবে না। এরা দুধের মাছি শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজসহ দেশবাসি সকলেই জানে। এরা স্বৈরাচারের দল। তাদের কোন ছাড় নেই।

এ বিষয়ে জানতে শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের শিক্ষক বদরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ভয়ঙ্কর বদরুল! লাগাম টানবে কে?

আপলোড সময় : ০৯:০৩:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কখনো কলেজে ঠিক সময়ে আসতেন না। আসলেও কোন রকম উপস্থিতির খাতায় সাইন করেই চলে যেতেন নিজের কাজে। কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামীলীগ আবার কখনো জাতীয়পার্টি অর্থাৎ যখন যে দলের নাম ব্যবহার করার প্রয়োজন হতো সেটিই তিনি করতেন। তার কাজ হাসিল করা হয়ে গেলে অন্যদিকে মোড় দিতেন। শিক্ষকতার পেশার আড়ালে আদম ব্যবসা, মাদক ব্যবসাসহ নানামূখী অপরাধ করে বেড়াতেন তিনি। বলছি পুরান ঢাকার শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক বদরুল ইসলামের নামে। যিনি শিক্ষকতাকে পুঁজি করে নিজের আখের গুছাতেই সবসময় ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করেন। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মানবপাচারসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০০৫ সালে শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান তাহমিনা হাসানাতের নামে বিভিন্ন অভিযোগ এনে তাকে ওই পদ থেকে বহিস্কার করতে বাধ্য করেন বদরুল ইসলাম। পরবর্তীতে তিনিই ওই চেয়ারে টুপ করে বসে পড়েন। ২০০৫ সালে তিনি ওই কলেজের ফরিদ হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা, চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। ২০০৮ সালে আদম ব্যবসায় ঝামেলায় পরে ১২ জুন থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কলেজে আসেন নি তিনি। ওই সময়ের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার আহমেদ তার বেতন বন্ধ করে দেন। তারপর আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হাজী সেলিমের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তখনকার গভর্নিংবডিকে চাপ প্রয়োগ করে তার বেতন বাগিয়ে নেন তিনি। ২০১২ সালে আওয়ামীলীগের ক্ষমতার জোড়ে সহযোগী অধ্যাপক গোপাল চন্দ্র ঘোষকে চেয়ারম্যান হতে বাধা প্রদান করে সে নিজেই ওই বিভাগের চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকেন। ২০২০ সালের জুলাই মাসে তার বিরুদ্ধে মানবপাচার মামলা হয়। তিনি ওই মামলার এক নাম্বার আসামী। মামলা নাম্বার ৭/২০২০। ব্রাক্ষনবাড়িয়ায় তার বিরুদ্ধে ২০১২ সালে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৬(২)/০৭/১০ অপরাধের সত্যতা পান।ওই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের দায়িত্বে ছিলেন ব্রাক্ষনবাড়িয়ার তয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের বিচারক জাকি আল ফারাবি। বদরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনৈতিক আচরণ ও মানবপাচারের অভিযোগ এনে এই মামলাটি দায়ের করেন কুলসুম আক্তার নামে এক নারী। মামলা করার পর ওই মেয়েকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন বদরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। তাদের ভয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আদালত পাড়ায় আসতে পারছেন না ভুক্তভোগী ওই নারী।

২০২১ সালের নভেম্বর মাসে বদরুল ইসলাম গ্রার্হস্থ্য অর্থনীতির নারী শিক্ষিকার সাথে অশোভন ও অনৈতিক আচরণ করে নানামূখী ষড়যন্ত্র করে কোন প্রকার কারণ ও নোটিশ ছাড়াই তাকে সৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের ক্ষমতাবলে চাকুরীচ্যুত করে। গত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে হাজী সেলিম ও তার ক্যাডার বাহিনী এবং ওই কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের সহযোগীতায় পুরো কলেজ ক্যম্পাসে নিজের আধিপত্য জানান দিয়েছে ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক বদরুল ইসলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের কয়েকজন শিক্ষক এই প্রতিবেদককে জানান, স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হাজি সেলিমের ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে বদরুল ইসলাম কলেজটিকে তার নিজের করে নিয়েছিলো। তিনি যখন, তখন যে কোন শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করতেন। মামলা দিতেন, নির্যাতন করতেন। শিক্ষকদের কোন কথাই শুনতেন না তিনি। যার তার সাথে অসৎ আচরণ করতেন। তার কথা না শুনলেই হাজী সেলিমের পেটুয়াবাহিনী দিয়ে ওই শিক্ষককে লাঞ্চিত করতেন দ্বিধাবোধ করতেন না সুচতুর শিক্ষক বদরুল ইসলাম।

আকতারুজ্জান(ছদ্মনাম) এক শিক্ষক জানান, বদরুল ইসলাম শিক্ষক নামে কলংকের নাম। ওর মতো শিক্ষক থাকলে একটি প্রতিষ্ঠান কোনভাবেই ভালভাবে চলতে পারে না। কখনো আওয়ামীলীগ আবার কখনো জাতীয়পার্টি যখন যাকে দরকার তার নাম ব্যবহার করে আদর্শবান শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণসহ নানা কারনে অহেতুক শিক্ষকদের হুমকি দিতেন। সম্প্রতি গেল পাঁচ আগষ্ট ছাত্র জনতার অভুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেল এখন তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান দিচ্ছে তিনি বিএনপির দলের অতি আপনজন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এসব কুলাঙ্গার শিক্ষকদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোনভাবেই জায়গা দিবে না। এরা দুধের মাছি শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজসহ দেশবাসি সকলেই জানে। এরা স্বৈরাচারের দল। তাদের কোন ছাড় নেই।

এ বিষয়ে জানতে শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের শিক্ষক বদরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন