ঢাকা ০৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে এখনো সক্রিয় ওসমানীয় দোসর দেলোয়ার ও জিতু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ০৬:৩২:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪০১ বার পড়া হয়েছে

সিদ্ধিরগঞ্জে এখনো সক্রিয় বৈষম্য বিরোধী হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী দোসর শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু ও শেখ পারভেজ হোসেন জিতু।

স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের যোগসাজশে এখনো পদ্মা পেট্রোলিয়াম লি: ডিপোতে তেলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। তারা উভয়ই নারায়ণগঞ্জের গডফাদার একাধিক হত্যা মামলার আসামি শামীম ওসমানের অনুসারী।

সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক ও নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রাজাকারপুত্র মতিউর রহমান মতির সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত তেল চোর আশরাফের মামা শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু ও মামাতো ভাই আওয়ামী দোসর শেখ পারভেজ হোসেন জিতু। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন একদিকে ওসমানীয় দোসর আশরাফ যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতির শেল্টারে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণ করতেন। এদিকে মামাতো ভাই আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগ নেতা শেখ পারভেজ হোসেন জিতু ও ফুফাতো ভাই আওয়ামী লীগ নেতা তেল চোর আশরাফ মিলে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত দুটি তেলের ডিপোর নিয়ন্ত্রণ ছিলো তাদের হাতে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই হত্যা ও হত্যা চেষ্টার মামলা রয়েছে। হত্যা মামলায় রাজধানীর বসুন্ধরা বাড়িধারা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন ওসমানীয় দোসর যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি। তবে আশরাফ ও জিতু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে এই পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণ নিতে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেন। তার ছেলে শেখ পারভেজ হোসেন জিতু ছিলেন আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের অন্যতম সদস্য।

আওয়ামী লীগের আমলে পিতা পুত্র দুই দোসর মিলে তেলের এই ডিপো থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের বার্মাশীল এলাকায় পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপোর পাশেই বহুতল ভবনের একটি ডুপ্লিক্স বাড়ি রয়েছে তাদের।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে আওয়ামী এই দুই দোসর মিলে একাই নিয়ন্ত্রণ করতেন পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপোটি। পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় তেল চুরি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তারা। বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা পলাতক থাকলেও এই দুই আওয়ামী দোসর নিজ বাসস্থানে আত্মগোপন করে এখনো সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বিএনপি নেতা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাবস্তায় তারা বাপ ছেলে মিলে পুরো ডিপো নিয়ন্ত্রণ করতো। এই ডিপো থেকে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তারা দুজনেই হত্যা ও হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকার পরও নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কিছু বিএনপির নামধারী নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেছেন তারা। এখনো পূর্বের মতো এই তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বাপ ছেলে। তাদেরকে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের এই দুই দোসরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন স্থানীয় তেল ব্যবসায়ীরা। আওয়ামী লীগের দোসর শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলুর কথা ছাড়া কোনো তেলের গাড়ি বের হতে পারেনি ডিপো থেকে। তার সম্মানি বাবদ প্রতিটি গাড়ি প্রতি গুনতে হতো ৪-৫ হাজার টাকা। এই টাকা না দিলে তেলের গাড়িতে তেলও লোড হতো না বলে জানা গেছে। তার ছেলে শেখ পারভেজ হোসেন জিতু আওয়ামী লীগের আরেক দোসর হিসেবে পরিচিত। একজন নামকরা মাদকের ডিলার ছিলো শেখ পারভেজ হোসেন জিতু। তার এই মাদক ব্যবসার পথ সুবিধা করতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভাগিয়ে নেন আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সদস্য পদ। সদস্য পদ ভাগিয়ে নেওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন ওসমানী এই দোসর। ওসমান পরিবারের সাথে ছিলো তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আওয়ামী লীগের দোসর শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের সাথেও জিতুর সুসম্পর্ক ছিলো বলে জানা গেছে। তাই এই ওসমানীয় দোসরদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান স্থানীয়রা।##

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সিদ্ধিরগঞ্জে এখনো সক্রিয় ওসমানীয় দোসর দেলোয়ার ও জিতু

আপলোড সময় : ০৬:৩২:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

সিদ্ধিরগঞ্জে এখনো সক্রিয় বৈষম্য বিরোধী হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী দোসর শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু ও শেখ পারভেজ হোসেন জিতু।

স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের যোগসাজশে এখনো পদ্মা পেট্রোলিয়াম লি: ডিপোতে তেলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। তারা উভয়ই নারায়ণগঞ্জের গডফাদার একাধিক হত্যা মামলার আসামি শামীম ওসমানের অনুসারী।

সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক ও নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রাজাকারপুত্র মতিউর রহমান মতির সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত তেল চোর আশরাফের মামা শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু ও মামাতো ভাই আওয়ামী দোসর শেখ পারভেজ হোসেন জিতু। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন একদিকে ওসমানীয় দোসর আশরাফ যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতির শেল্টারে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণ করতেন। এদিকে মামাতো ভাই আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগ নেতা শেখ পারভেজ হোসেন জিতু ও ফুফাতো ভাই আওয়ামী লীগ নেতা তেল চোর আশরাফ মিলে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত দুটি তেলের ডিপোর নিয়ন্ত্রণ ছিলো তাদের হাতে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই হত্যা ও হত্যা চেষ্টার মামলা রয়েছে। হত্যা মামলায় রাজধানীর বসুন্ধরা বাড়িধারা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন ওসমানীয় দোসর যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি। তবে আশরাফ ও জিতু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে এই পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণ নিতে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেন। তার ছেলে শেখ পারভেজ হোসেন জিতু ছিলেন আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের অন্যতম সদস্য।

আওয়ামী লীগের আমলে পিতা পুত্র দুই দোসর মিলে তেলের এই ডিপো থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের বার্মাশীল এলাকায় পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপোর পাশেই বহুতল ভবনের একটি ডুপ্লিক্স বাড়ি রয়েছে তাদের।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে আওয়ামী এই দুই দোসর মিলে একাই নিয়ন্ত্রণ করতেন পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপোটি। পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় তেল চুরি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তারা। বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা পলাতক থাকলেও এই দুই আওয়ামী দোসর নিজ বাসস্থানে আত্মগোপন করে এখনো সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বিএনপি নেতা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাবস্তায় তারা বাপ ছেলে মিলে পুরো ডিপো নিয়ন্ত্রণ করতো। এই ডিপো থেকে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তারা দুজনেই হত্যা ও হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকার পরও নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কিছু বিএনপির নামধারী নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেছেন তারা। এখনো পূর্বের মতো এই তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বাপ ছেলে। তাদেরকে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের এই দুই দোসরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন স্থানীয় তেল ব্যবসায়ীরা। আওয়ামী লীগের দোসর শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলুর কথা ছাড়া কোনো তেলের গাড়ি বের হতে পারেনি ডিপো থেকে। তার সম্মানি বাবদ প্রতিটি গাড়ি প্রতি গুনতে হতো ৪-৫ হাজার টাকা। এই টাকা না দিলে তেলের গাড়িতে তেলও লোড হতো না বলে জানা গেছে। তার ছেলে শেখ পারভেজ হোসেন জিতু আওয়ামী লীগের আরেক দোসর হিসেবে পরিচিত। একজন নামকরা মাদকের ডিলার ছিলো শেখ পারভেজ হোসেন জিতু। তার এই মাদক ব্যবসার পথ সুবিধা করতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভাগিয়ে নেন আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সদস্য পদ। সদস্য পদ ভাগিয়ে নেওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন ওসমানী এই দোসর। ওসমান পরিবারের সাথে ছিলো তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আওয়ামী লীগের দোসর শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের সাথেও জিতুর সুসম্পর্ক ছিলো বলে জানা গেছে। তাই এই ওসমানীয় দোসরদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান স্থানীয়রা।##

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন