প্রধান শিক্ষককে অস্ত্র ঠেকিয়ে পদত্যাগে বাধ্য, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- আপলোড সময় : ০৮:১৭:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪
- / ২৫১ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় প্রধান শিক্ষককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়া ও মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১০ নভেম্বর ) সকালে আবিরপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ও শনিবারেও এই কর্মসূচি পালন করে তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার (০৬ নভেম্বর) সকালে হঠাৎ একদল দুবৃর্ত্ত বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন যুবক প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়াকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করতে বলেন। এসময় প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর করতে রাজি না হলে দুবৃর্ত্তরা তাঁকে বেদম মারধর করে। একই সময় দশম শ্রেণীর নির্বাচনী পরীক্ষার হল থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী এগিয়ে এসে দুবৃর্ত্তদের বাঁধা দিলে তারা শিক্ষার্থীদেরও মারধর করে। পরে দুবৃর্ত্তরা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগ পত্রে ও দুটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে চলে যায়। এসময় শিক্ষার্থী,শিক্ষক ও স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বিক্ষোভ চলাকালীন সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আবদুল আজিজ শাকিল, সালমা আক্তার ও জিহাদ হোসেন সহ শিক্ষার্থীরা-হামলাকারী দুবৃর্ত্তদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়ে প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়াকে স্বপদে বহালের দাবি জানান।
প্রধান শিক্ষক মাহফজুর রহমান ভূঁইয়ার স্ত্রী রাবেয়া বেগমের বলেন, হামলাকারীরা অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বিদ্যালয়ে ঢোকে। তারা আমার স্বামীকে মারধর করে লিখিত পদত্যাগপত্রে এবং দুটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর আদায় করে নিয়েছে। হামলাকারীরা স্থানীয়ভাবে বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবিরপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, হঠাৎ একদল যুবক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে হট্টগোল শুরু করে। এসময় তাদের মধ্যে কয়েকজন যুবক আমার রুমে ঢুকে আমাকে একটি পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করতে বলেন। এতে আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পদত্যাগপত্র ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। আমি বিষয়টি জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাছরিন আক্তার বলেন, মঙ্গলবার এলাকার কিছু লোক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে গেছেন। তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তাদের বলা হয়েছিল। এর মধ্যে বুধবার একদল ব্যক্তি এই হামলার ঘটনা ঘটায়। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।