ধানমন্ডিতে র্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, ছয়জন গ্রেফতার

- আপলোড সময় : ০৯:০৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
- / ২৬৪ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর ধানমন্ডিতে র্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ছয় সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো— ফরহাদ বীন মোশারফ (৩৩), ইয়াছিন হাসান (২২), মোবাশ্বের আহাম্মেদ (২৩), ওয়াকিল মাহমুদ (২৬), আবদুল্লাহ (৩২) ও সুমন (২৯)।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত র্যাব লেখা দুটি কালো জ্যাকেট, তিনটি কালো ক্যাপ, একটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার ছেনি, একটি পুরাতন স্লাই রেঞ্জ ও নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব পরিচয়ে ভয়ঙ্কর ডাকাতি
ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা যায়, ভিক্টিম এম এ হান্নান আজাদের “অলংকার নিকেতন জুয়েলার্স” নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ধানমন্ডির ভিকারুন্নেসা স্কুলের শাখার গলিতে তার ছয়তলা বিশিষ্ট বাড়ির নিচতলায় অফিস, উপরের ফ্লোরগুলোতে বিভিন্ন অফিস এবং ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট রয়েছে।
২৬ মার্চ ভোর ৪:৪০ মিনিটের দিকে তিনটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকারে এসে ডাকাত দল বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। তারা নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটসহ অভিযান চালানোর কথা বলে সিকিউরিটি গার্ডদের গেট খুলতে বলে। গার্ডরা সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললে, ডাকাতরা গালাগালি ও হত্যার হুমকি দেয়। এরপর কয়েকজন গেটের উপর দিয়ে উঠে ভেতরে প্রবেশ করে এবং জোর করে গেট খুলে ফেলে।
ভেতরে ঢুকে তারা সিকিউরিটি গার্ড, কেয়ারটেকার ও গাড়িচালককে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর অফিসের গেট ভেঙে কর্মচারীদের মারধর করে নগদ টাকা লুট করে।
ডাকাতি করা সম্পদের বিবরণ
তৃতীয় তলা: এস এম সোর্সিংয়ের অফিস থেকে ২২ লাখ টাকা লুট
চতুর্থ তলা: অফিস থেকে ১৩ লাখ টাকা লুট
ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট (৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা): ১.৫ লাখ টাকা, ২.৫ ভরি স্বর্ণ (মূল্য ৩.৭৫ লাখ টাকা) লুট
ডাকাতরা মালিক এম এ হান্নান আজাদকে গাড়িতে উঠানোর চেষ্টা করলে ধানমন্ডি থানা পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে হাজির হয়। এ সময় ডাকাতরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েকজন সদস্যকে আহত করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ছয় ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
অভিযান ও মামলা
এই ঘটনায় ২৬ মার্চ ধানমন্ডি থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় গ্রেফতারকৃতদের পাশাপাশি পলাতক আটজন ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পরবর্তীতে ২৭ মার্চ ভোরে হাজারীবাগ থানায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির সাথে জড়িত আরও দুই সদস্য আবদুল্লাহ ও সুমনকে গ্রেফতার করা হয়।
সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের রহস্য উন্মোচন
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করত।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন এবং লুণ্ঠিত সম্পদ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া পলাতক ডাকাত সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।