ঢাকা ১১:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাকর্মীদের শেল্টারে নাশকতা মামলার আসামী ও বিএনপির কর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ০৮:৩৬:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৫৩৮ বার পড়া হয়েছে

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত জোট কর্তৃক আন্দোলনের নামে সারাদেশে যখন জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি চলমান ঠিক সেই মূহুর্তে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে নাশকতা মামলার আসামী ও চিহ্নিত বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা অবরোধ চলাকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের অবরোধ বিরোধী কর্মসূচির সময় শীর্ষ নেতৃবৃন্দের শেল্টারে এসব বিএনপি নেতাকর্মীরা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে উপস্থিত হয়ে আওয়ামীলীগার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করায় তৃনমূলে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে। তৃনমূল আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দাবী, বছরের পর বছর আওয়ামীলীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের কমিটি না হওয়ায় শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সুবিধা অনুযায়ী যে কাউকে দলে ভিড়িয়ে দলীয় কর্মসূচিতে সাথে রেখে আওয়ামীলীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করতে সুযোগ করে দিচ্ছে।

জানা যায়, সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত নাশকতা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী নাসিক ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা আলী আকবর খান। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের একনিষ্ঠ কর্মী ও গিয়াস উদ্দিন ইসলামিক মডেল স্কুলের সভাপতি। বর্তমানে নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে বীরদর্পে ঘুড়ে বেরাচ্ছে। বিভিন্ন কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলে বিএনপি নেতা সাদরিলের সাথে আলী আকবর খানের বেশ কিছু ছবিও দেখা গেছে।

এদিকে, নাসিক ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কদমতলী এলাকার মরহুম হুমায়ন কবিরের পরিবারটি বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। গত ২০১৬ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচন করে এই পরিবারটি। ওই নির্বাচনে বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপুকে নিয়ে কদমতলী এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়ে গনসংযোগে লিফলেট বিতরণ করে বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, তার বড় ছেলে তানভীর কবির মুন্না ও ছোট ছেলে তানভীর কবির সীমান্ত । সেই সময়কার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে। এক সময় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে হুমায়ুন কবির বিচরণ করলেও সম্প্রতি তিনি মারা যাওয়ার পর তার বড় ছেলে বিএনপি নেতা তানভীর কবির মুন্না ও তার ছোট ছেলে বিএনপি নেতা সীমান্ত খোলস পাল্টিয়ে হয়ে গেছেন আওয়ামীলীগ নেতা।
বর্তমানে আওয়ামীলীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতাদের পিছনে দাড়িয়ে নিজেদেরকে আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে প্রচার করছে। এতে তৃনমূল আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের মাঝে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ। এসব কারণে আন্দোলনেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে আওয়ামীলীগের বোদ্দা মহল। জাতীয় নির্বাচন আসলেই কিছু সুবিধাবাধী বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মী আওয়ামীলীগের কিছু নেতাদের সাথে ছবি সেলফি তুলে তাদের ফেইজবুকে ছেড়ে তারা হয়ে যায় আওয়ামীলীগ।

সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা জুড়ে পাড়া-মহল্লা ও চায়ের দোকানে তাদের নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ক্ষোভ প্রকাশ করছে আওয়ামী লীগের তৃনর্মূল নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের তৃনমূল পর্যায়ের নেতারা বলেন, আমাদের দলে কিছু হাইব্রিড আওয়ামী লীগ আছে। এরা দলের ভেতরে থেকে দলকে দূর্বল করতে চায়। ইদানিং লক্ষ্য করছি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলে। বিএনপি মার্কা ও হাইব্রিড নেতাদের পাত্তা দিয়ে কোন লাভ নাই। আগে নিজের ঘরে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে। ২০০১ সালে আমাদের ঘর থেকে টেনে ছিচড়ে অত্যাচার করেছিল তারা। সেই ইতিহাস কিন্তু আমরা ভুলি নাই।

নাসিক ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক হাওলাদার জানান, কদমতলী এলাকার মরহুম হুমায়ুন কবির বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার ছেলে তানভীর কবির মুন্না ও সীমান্ত আওয়ামীলীগ বা অন্য কোন সহযোগী সংগঠনের কেউ নয়।

সাবেক সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশিদ জানান, ২০০৩ সালে আওয়ামীলীগের যেসব কমিটি হয়েছে সেখানে তানভীর কবির মুন্না নামে কেউ নেই। ২০১৬ সালে সে তার বাবার সাথে বিএনপি নেতা রিজভীর সাথে ধানের শীষের প্রচারণা চালিয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাকর্মীদের শেল্টারে নাশকতা মামলার আসামী ও বিএনপির কর্মীরা

আপলোড সময় : ০৮:৩৬:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত জোট কর্তৃক আন্দোলনের নামে সারাদেশে যখন জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি চলমান ঠিক সেই মূহুর্তে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে নাশকতা মামলার আসামী ও চিহ্নিত বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা অবরোধ চলাকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের অবরোধ বিরোধী কর্মসূচির সময় শীর্ষ নেতৃবৃন্দের শেল্টারে এসব বিএনপি নেতাকর্মীরা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে উপস্থিত হয়ে আওয়ামীলীগার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করায় তৃনমূলে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে। তৃনমূল আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দাবী, বছরের পর বছর আওয়ামীলীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের কমিটি না হওয়ায় শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সুবিধা অনুযায়ী যে কাউকে দলে ভিড়িয়ে দলীয় কর্মসূচিতে সাথে রেখে আওয়ামীলীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করতে সুযোগ করে দিচ্ছে।

জানা যায়, সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত নাশকতা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী নাসিক ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা আলী আকবর খান। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের একনিষ্ঠ কর্মী ও গিয়াস উদ্দিন ইসলামিক মডেল স্কুলের সভাপতি। বর্তমানে নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে বীরদর্পে ঘুড়ে বেরাচ্ছে। বিভিন্ন কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলে বিএনপি নেতা সাদরিলের সাথে আলী আকবর খানের বেশ কিছু ছবিও দেখা গেছে।

এদিকে, নাসিক ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কদমতলী এলাকার মরহুম হুমায়ন কবিরের পরিবারটি বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। গত ২০১৬ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচন করে এই পরিবারটি। ওই নির্বাচনে বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপুকে নিয়ে কদমতলী এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়ে গনসংযোগে লিফলেট বিতরণ করে বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, তার বড় ছেলে তানভীর কবির মুন্না ও ছোট ছেলে তানভীর কবির সীমান্ত । সেই সময়কার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে। এক সময় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে হুমায়ুন কবির বিচরণ করলেও সম্প্রতি তিনি মারা যাওয়ার পর তার বড় ছেলে বিএনপি নেতা তানভীর কবির মুন্না ও তার ছোট ছেলে বিএনপি নেতা সীমান্ত খোলস পাল্টিয়ে হয়ে গেছেন আওয়ামীলীগ নেতা।
বর্তমানে আওয়ামীলীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতাদের পিছনে দাড়িয়ে নিজেদেরকে আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে প্রচার করছে। এতে তৃনমূল আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের মাঝে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ। এসব কারণে আন্দোলনেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে আওয়ামীলীগের বোদ্দা মহল। জাতীয় নির্বাচন আসলেই কিছু সুবিধাবাধী বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মী আওয়ামীলীগের কিছু নেতাদের সাথে ছবি সেলফি তুলে তাদের ফেইজবুকে ছেড়ে তারা হয়ে যায় আওয়ামীলীগ।

সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা জুড়ে পাড়া-মহল্লা ও চায়ের দোকানে তাদের নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ক্ষোভ প্রকাশ করছে আওয়ামী লীগের তৃনর্মূল নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের তৃনমূল পর্যায়ের নেতারা বলেন, আমাদের দলে কিছু হাইব্রিড আওয়ামী লীগ আছে। এরা দলের ভেতরে থেকে দলকে দূর্বল করতে চায়। ইদানিং লক্ষ্য করছি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলে। বিএনপি মার্কা ও হাইব্রিড নেতাদের পাত্তা দিয়ে কোন লাভ নাই। আগে নিজের ঘরে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে। ২০০১ সালে আমাদের ঘর থেকে টেনে ছিচড়ে অত্যাচার করেছিল তারা। সেই ইতিহাস কিন্তু আমরা ভুলি নাই।

নাসিক ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক হাওলাদার জানান, কদমতলী এলাকার মরহুম হুমায়ুন কবির বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার ছেলে তানভীর কবির মুন্না ও সীমান্ত আওয়ামীলীগ বা অন্য কোন সহযোগী সংগঠনের কেউ নয়।

সাবেক সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশিদ জানান, ২০০৩ সালে আওয়ামীলীগের যেসব কমিটি হয়েছে সেখানে তানভীর কবির মুন্না নামে কেউ নেই। ২০১৬ সালে সে তার বাবার সাথে বিএনপি নেতা রিজভীর সাথে ধানের শীষের প্রচারণা চালিয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন