‘ওরা আমাকে খুব মেরেছে’, বললেন আহত মুক্তিযোদ্ধা মফিজল হক
- আপলোড সময় : ০৭:১১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুন ২০২৩
- / ৩৮৭ বার পড়া হয়েছে
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজল হক (৮৫), তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৭০), ছেলে আব্দুল খালেকসহ গোটা পরিবারের উপর বর্বরোচিত হামলা করেছে তারই আপন ভাই মঞ্জিল, ভাতিজা লিটনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এ ঘটনায় গুরুতর আহত প্রায় নব্বুই-ঊর্ধ্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজল হককে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। তার স্ত্রীকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। কিছুটা সুস্থ বোধ করলে ১৮ জুন তাকে বাড়িতে আনা হয়।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজল হক বিছানায় শয্যাশায়ী। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজল হকের নিকট হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ফিসফিস করে শুধু বললেন, ‘ওরা আমাকে খুব মেরেছে’। শয্যাশায়ী অবস্থাতেই ব্যান্ডেজ করা হাতের কাটা অংশ এবং পেটের বিভিন্ন স্থানে মারপিটের চিহ্ন দেখান তিনি।
মামলার সূত্র ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজল হকের স্ত্রী ষাটোর্ধ রোকেয়া বেগম বলেন, কিছুদিন আগে আমার ছেলের চাকরির জন্য ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা লোন করে সেই টাকা ঘরে এনে রাখি। পরেরদিন সেই টাকা চুরি হয়ে যায়। আসামিরা প্রতিবেশি এবং নিকট আত্নীয় হওয়ার কারণে চুরির বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। চুরির প্রমাণ না থাকায় আমরা কাউকে দোষারোপ করে এ নিয়ে আর কোন কথা বলেনি। গত ১২ জুন সকাল ৮টার দিকে দেবর মঞ্জিল, তার ছেলে লিটন তার স্ত্রীসহ কয়েকজন মিলে বাড়ির সামনেই আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। আমার স্বামী মফিজল হক থামাতে গেলে তাকেও মারপিট করে মঞ্জিল ও তার ছেলে লিটন। আমার স্বামী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাকেও যদি এই বয়সে মার খেয়ে বিচার চেয়ে ঘুরতে হয়, তাহলে দেশ স্বাধীন করে লাভ কি হলো। আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মেরে জখম করেছে, বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
মফিজল হকের ছেলে আব্দুল খালেক বলেন, ঘটনার দিন সকালে আমার মায়ের সাথে কি নিয়ে যেন কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল। আমি থামাতে গেলে আমাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য তার ছেলে লিটনকে হুকুম দেন আমার চাচা মঞ্জিল। এরপর তারা সবাই মিলে আমাকে মারপিট করে। বয়স্ক বাবা থামানোর জন্য এগিয়ে এলে লিটন তাকেও রড দিয়ে হাতে ও পেটে আঘাত করে। রংপুর থেকে এসে থানায় অভিযোগ দিলে থানা মামলা কোর্টে করতে বলেন। বাধ্য হয়ে গাইবান্ধা কোর্টে একটি সি আর মামলা করেছি। আমরা এই অত্যাচার জুলুমের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে স্থানীয় কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনোয়ার আলম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে কয়েকবার গিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজল হক মিস্ত্রির ভাই মঞ্জিল ও তার দুই ছেলে ভালো নয়। তাদেরকে কথা বললে তারা কথা রাখেন না।