ঢাকা ০১:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনারগাঁয়ে বাইকার পালসের অতিরিক্ত মূল্য আদায়ে অতিষ্ঠ বাইক চালকরা

সোনারগাঁ প্রতিনিধি
সোনারগাঁ প্রতিনিধি
  • আপলোড সময় : ০৩:২১:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৫৩২ বার পড়া হয়েছে

সোনারগাঁয়ে বাইক সিটি ও বাইকার পালসের বিরুদ্ধে মোটরসাইকেলের সরঞ্জামের অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, ঢাকা বংশাল থেকে পাইকারি মোটরসাইকেলের সরঞ্জাম এনে দুই গুণ বেশি ক্রেতাদের কাছ থেকে মূল্য আদায় করে রাতারাতি বনে যাচ্ছে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।

সোনারগাঁয়ের বাইক চালক আক্তার হোসেনের কাছ থেকে জানা যায়, একটি এক্সেলেটর ক্যাবলের দাম বংশাল থেকে ১২০ টাকায় পাওয়া যায় আর এখান থেকে আমার কাছ থেকে ৪৫০ টাকা রেখে দিছে। এভাবে তারা দ্বিগুণ দামে বাইকের সরঞ্জাম বিক্রি করছে। এমনিভাবে আরেকজন ক্রেতা বাইকার পালস থেকে দুটি নরমাল প্লাগ ৩০০টাকা দিয়ে কিনতে হয়, অথচ বংশাল থেকে এর মূল্য ৮০ টাকা।
এসব পার্টসের দাম ও মান নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। ফলে মানহীন পার্টস নিজের ইচ্ছেমতো ক্রেতাদের ঠকিয়ে মূল্য আঁধায় ব্যস্ত তারা। অন্যদিকে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন, বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনাও।
বাজারে মোটর পার্টসের দাম তদারকির জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামাফিক দামে বিক্রি করছেন এসব সরঞ্জাম। মোটর পার্টসের আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বাজারে গাড়ির যেসব পার্টস বিক্রি হচ্ছে তার প্রায় শতভাগই আমদানিকৃত। এসব পার্টস মূলত চীন, ভারত, থাইল্যান্ড ও তাইওয়ান থেকে আমদানি করা হয়।

বাস, ট্রাক, লরি, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, হিউম্যান হলার, ইজিবাইক, রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন গাড়ির টায়ার, টিউব, ব্রেক সু, ইঞ্জিন অয়েল, ব্যাটারি থেকে শুরু করে যাবতীয় পার্টসই আমদানিনির্ভর। আমদানিকৃত এসব পার্টসের দাম ও মান যাচাইয়ের কোনো সুযোগ দেশে নেই। ফলে মানুষ মানহীন পার্টস কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। অন্যদিকে স্বল্পমূল্যে আমদানিকৃত পণ্য চড়া দামে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

বংশালের একাধিক মোটর পার্টস ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায় বিক্রি হওয়া মোটরসাইকেল পার্টসগুলোর অধিকাংশই আসে যশোর থেকে। এর অধিকাংশই দেশে ঢুকছে শুল্ক ও কার ফাঁকি দিয়ে। আর দেশে প্রবেশের পর এসব পণ্যের দামও নেয়া হচ্ছে মূল দামের কয়েকগুণ বেশি। সব ধরনের পার্টস প্যাকেটজাত হয়ে বিক্রি হলেও সেগুলোর গায়ে কোনো মূল্য লেখা নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন।

পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতা থাকায় সীমিত লাভ করলেও খুচরা পর্যায়ে তা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। আর মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় উচ্চমূল্যে যন্ত্রাংশ কিনেও প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তার মোটরসাইকেল মেরামতকারী মানিক মিয়া বলেন, মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ কিনে অধিকাংশ ক্রেতাই প্রতারিত হচ্ছেন। আসল প্যাকেটে ভরে চড়া দামে নকল পণ্য বিক্রি করছেন অনেক ব্যবসায়ী। ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ক্রেতাকে।

মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী আক্তার হোসেন বলেন, প্রায়ই মোটরসাইকেলের প্লাগ শর্ট হয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন চালানোর পর প্লাগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক নম্বর ইন্ডিয়ান বলে ২৫০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হচ্ছে।

শুধু প্লাগ কেবল নয়, অন্যান্য যন্ত্রাংশও ভিন্ন ভিন্ন দামে কিনতে হচ্ছে। অথচ চড়া দামে কিনলেও ব্যবহারে স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে আর ছুটতে হচ্ছে মেরামতের জন্য।

সার্বিক বিষয়ে বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক তাহের জামিল বলেন, মোটর পার্টসগুলোর গুণমান কিংবা মূল্য দেখভাল করা উচিত। এজন্য বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে (বিআরটিএ) দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে কারিগরি ও জনবল সহায়তা বাড়াতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সোনারগাঁয়ে বাইকার পালসের অতিরিক্ত মূল্য আদায়ে অতিষ্ঠ বাইক চালকরা

আপলোড সময় : ০৩:২১:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সোনারগাঁয়ে বাইক সিটি ও বাইকার পালসের বিরুদ্ধে মোটরসাইকেলের সরঞ্জামের অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, ঢাকা বংশাল থেকে পাইকারি মোটরসাইকেলের সরঞ্জাম এনে দুই গুণ বেশি ক্রেতাদের কাছ থেকে মূল্য আদায় করে রাতারাতি বনে যাচ্ছে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।

সোনারগাঁয়ের বাইক চালক আক্তার হোসেনের কাছ থেকে জানা যায়, একটি এক্সেলেটর ক্যাবলের দাম বংশাল থেকে ১২০ টাকায় পাওয়া যায় আর এখান থেকে আমার কাছ থেকে ৪৫০ টাকা রেখে দিছে। এভাবে তারা দ্বিগুণ দামে বাইকের সরঞ্জাম বিক্রি করছে। এমনিভাবে আরেকজন ক্রেতা বাইকার পালস থেকে দুটি নরমাল প্লাগ ৩০০টাকা দিয়ে কিনতে হয়, অথচ বংশাল থেকে এর মূল্য ৮০ টাকা।
এসব পার্টসের দাম ও মান নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। ফলে মানহীন পার্টস নিজের ইচ্ছেমতো ক্রেতাদের ঠকিয়ে মূল্য আঁধায় ব্যস্ত তারা। অন্যদিকে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন, বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনাও।
বাজারে মোটর পার্টসের দাম তদারকির জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামাফিক দামে বিক্রি করছেন এসব সরঞ্জাম। মোটর পার্টসের আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বাজারে গাড়ির যেসব পার্টস বিক্রি হচ্ছে তার প্রায় শতভাগই আমদানিকৃত। এসব পার্টস মূলত চীন, ভারত, থাইল্যান্ড ও তাইওয়ান থেকে আমদানি করা হয়।

বাস, ট্রাক, লরি, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, হিউম্যান হলার, ইজিবাইক, রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন গাড়ির টায়ার, টিউব, ব্রেক সু, ইঞ্জিন অয়েল, ব্যাটারি থেকে শুরু করে যাবতীয় পার্টসই আমদানিনির্ভর। আমদানিকৃত এসব পার্টসের দাম ও মান যাচাইয়ের কোনো সুযোগ দেশে নেই। ফলে মানুষ মানহীন পার্টস কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। অন্যদিকে স্বল্পমূল্যে আমদানিকৃত পণ্য চড়া দামে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

বংশালের একাধিক মোটর পার্টস ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায় বিক্রি হওয়া মোটরসাইকেল পার্টসগুলোর অধিকাংশই আসে যশোর থেকে। এর অধিকাংশই দেশে ঢুকছে শুল্ক ও কার ফাঁকি দিয়ে। আর দেশে প্রবেশের পর এসব পণ্যের দামও নেয়া হচ্ছে মূল দামের কয়েকগুণ বেশি। সব ধরনের পার্টস প্যাকেটজাত হয়ে বিক্রি হলেও সেগুলোর গায়ে কোনো মূল্য লেখা নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন।

পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতা থাকায় সীমিত লাভ করলেও খুচরা পর্যায়ে তা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। আর মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় উচ্চমূল্যে যন্ত্রাংশ কিনেও প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তার মোটরসাইকেল মেরামতকারী মানিক মিয়া বলেন, মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ কিনে অধিকাংশ ক্রেতাই প্রতারিত হচ্ছেন। আসল প্যাকেটে ভরে চড়া দামে নকল পণ্য বিক্রি করছেন অনেক ব্যবসায়ী। ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ক্রেতাকে।

মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী আক্তার হোসেন বলেন, প্রায়ই মোটরসাইকেলের প্লাগ শর্ট হয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন চালানোর পর প্লাগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক নম্বর ইন্ডিয়ান বলে ২৫০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হচ্ছে।

শুধু প্লাগ কেবল নয়, অন্যান্য যন্ত্রাংশও ভিন্ন ভিন্ন দামে কিনতে হচ্ছে। অথচ চড়া দামে কিনলেও ব্যবহারে স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে আর ছুটতে হচ্ছে মেরামতের জন্য।

সার্বিক বিষয়ে বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক তাহের জামিল বলেন, মোটর পার্টসগুলোর গুণমান কিংবা মূল্য দেখভাল করা উচিত। এজন্য বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে (বিআরটিএ) দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে কারিগরি ও জনবল সহায়তা বাড়াতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন