ঢাকা ০১:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিগমা অয়েল কোম্পানীর মালিক রফিকুল ইসলাম ও ম্যানাজার সঞ্জিতের বিরুদ্ধে সোনারগাঁয়ে ফসলি জমি দখল করে বাউন্ডারি নির্মাণের অভিযোগ

মোঃ সালে আহমেদ (নিজস্ব প্রতিবেদক)
মোঃ সালে আহমেদ (নিজস্ব প্রতিবেদক)
  • আপলোড সময় : ০৩:৪১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৪ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর এলাকায় ফসলি জমি জোড় পূর্বক ভরাট ও বাউন্ডারী নির্মাণ করে দখলের অভিযোগ উঠেছে একটি কোম্পানীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে বুধবার সন্ধায় সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। কোবাগা এলাকায় সিগমা অয়েল নামে একটি কোম্পানীর মালিক রফিকুল ইসলাম ও ম্যানাজার সঞ্জিত ওই এলাকার আবাসন প্রকল্প এসেপ্ট কোম্পানীর প্রায় দুই বিঘা জমি দখল ও বালু ভরাট করে বাউন্ডারী নির্মাণ করে ফেলছেন। তালতলা পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা তাদের বাউন্ডারী নির্মাণে বাধা দিলেও তারা বাধা না মেনে জোড় পূর্বক ওই জমি ভরাট ও দখল করে নিয়ে যায়।
লিখিত অভিযোগে হাজী মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ উল্লেখ করা হয়েছে, সিগমা অয়েল কারখানার মালিক ও তার ম্যানাজার এসেপ্ট কোম্পানীর প্রায় দুই বিঘা জমি জোড় পূর্বক বালু ভরাট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে বালু ভরাট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে বাধা দিলে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদান করে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এতে আমরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ও আতংকে দিন কাটাচ্ছি। এছাড়া এস এ ১৩৭ নং দাগের ২২ শতাংশ জমি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে দেওয়ানি মামলা চলমান রয়েছে। বিজ্ঞ আদালতের মামলা চলমান থাকা অবস্থায় জোড় পূর্বক বেআইনিভাবে টিন দিয়ে বাউন্ডারী নির্মাণ কাজ করে জায়গা দখল করছে তারা।

ইতিপূর্বে সোনারগাঁয়ের জামপুর কোবাগা এলাকায় সিগমা অয়েল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে কৃষি জমি ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ওই এলাকার পাঁচটি গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা। মানববন্ধন চলাকালে ওই কোম্পানীর সন্ত্রাসী বাহিনী কৃষকদের উপর হামলা চালিয়ে কমপক্ষে দশ জন কৃষককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে আহত কৃষকরা বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারপরও থেমে থাকেননি বালু সন্ত্রাসীরা। আবারো দখলের মহাৎসবে মেনেছেন তারা।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, সরকার যেখানে কৃষি জমি রক্ষায় নানামূখী উদ্যোগ গ্রহন করছেন, সেখানে সিগমা অয়েল কারখানার মালিকপক্ষ জোরপূর্বক রাতের আধারে আমাদের কৃষি জমি ভরাট করে দখল করে নিচ্ছেন। বাধা দিলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সাধারণ কৃষকের বাড়িতে হামলা চালায় কোম্পানীর মালিকপক্ষ।

টানপাড়া এলাকার কৃষক মোমতাজ উদ্দিন বলেন, আমাদের বাপ-দাদার আমলের ফসলি জমি জোরপূর্বক বালু দিয়ে ভরাট করে দখল করে নিয়েছেন সিগমা অয়েল কোম্পানীর মালিক। একই গ্রামের বাসিন্দা আলী আকবর জানান, আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে দখল ও বাউন্ডারী বন্ধ করার জন্য লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কেউ। আমরা ন্যায় বিচার ও আমাদের জমি রক্ষা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনারগাঁ পরিদর্শক (তদন্ত) আহসান উল্লাহ জানান, এসেপ্ট কোম্পানীর জমি জোড় পূর্বক বালু ভরাট ও বাউন্ডারী নির্মাণ করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসেপ্ট কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমরা কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য দিয়ে জমি ক্রয় করে আবাসন প্রকল্পের জন্য বরাদ্ধ করেছি। আমরা প্রায় দশ বছর পূর্বে ওই জমি ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছি। সম্প্রতি সিগমা অয়েল কোম্পানীর মালিক আমাদের জায়গা জোড় পূর্বক দখল করে বাউন্ডারী নির্মাণ করে দখল করে ফেলছেন। তিনি বলেন, একটি জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকার পরেও তারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ওই জমি দখল করে নেয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সিগমা অয়েল কোম্পানীর মালিক রফিকুল ইসলাম ও ম্যানাজার সঞ্জিতের বিরুদ্ধে সোনারগাঁয়ে ফসলি জমি দখল করে বাউন্ডারি নির্মাণের অভিযোগ

আপলোড সময় : ০৩:৪১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর এলাকায় ফসলি জমি জোড় পূর্বক ভরাট ও বাউন্ডারী নির্মাণ করে দখলের অভিযোগ উঠেছে একটি কোম্পানীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে বুধবার সন্ধায় সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। কোবাগা এলাকায় সিগমা অয়েল নামে একটি কোম্পানীর মালিক রফিকুল ইসলাম ও ম্যানাজার সঞ্জিত ওই এলাকার আবাসন প্রকল্প এসেপ্ট কোম্পানীর প্রায় দুই বিঘা জমি দখল ও বালু ভরাট করে বাউন্ডারী নির্মাণ করে ফেলছেন। তালতলা পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা তাদের বাউন্ডারী নির্মাণে বাধা দিলেও তারা বাধা না মেনে জোড় পূর্বক ওই জমি ভরাট ও দখল করে নিয়ে যায়।
লিখিত অভিযোগে হাজী মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ উল্লেখ করা হয়েছে, সিগমা অয়েল কারখানার মালিক ও তার ম্যানাজার এসেপ্ট কোম্পানীর প্রায় দুই বিঘা জমি জোড় পূর্বক বালু ভরাট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে বালু ভরাট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে বাধা দিলে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদান করে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এতে আমরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ও আতংকে দিন কাটাচ্ছি। এছাড়া এস এ ১৩৭ নং দাগের ২২ শতাংশ জমি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে দেওয়ানি মামলা চলমান রয়েছে। বিজ্ঞ আদালতের মামলা চলমান থাকা অবস্থায় জোড় পূর্বক বেআইনিভাবে টিন দিয়ে বাউন্ডারী নির্মাণ কাজ করে জায়গা দখল করছে তারা।

ইতিপূর্বে সোনারগাঁয়ের জামপুর কোবাগা এলাকায় সিগমা অয়েল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে কৃষি জমি ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ওই এলাকার পাঁচটি গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা। মানববন্ধন চলাকালে ওই কোম্পানীর সন্ত্রাসী বাহিনী কৃষকদের উপর হামলা চালিয়ে কমপক্ষে দশ জন কৃষককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে আহত কৃষকরা বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারপরও থেমে থাকেননি বালু সন্ত্রাসীরা। আবারো দখলের মহাৎসবে মেনেছেন তারা।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, সরকার যেখানে কৃষি জমি রক্ষায় নানামূখী উদ্যোগ গ্রহন করছেন, সেখানে সিগমা অয়েল কারখানার মালিকপক্ষ জোরপূর্বক রাতের আধারে আমাদের কৃষি জমি ভরাট করে দখল করে নিচ্ছেন। বাধা দিলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সাধারণ কৃষকের বাড়িতে হামলা চালায় কোম্পানীর মালিকপক্ষ।

টানপাড়া এলাকার কৃষক মোমতাজ উদ্দিন বলেন, আমাদের বাপ-দাদার আমলের ফসলি জমি জোরপূর্বক বালু দিয়ে ভরাট করে দখল করে নিয়েছেন সিগমা অয়েল কোম্পানীর মালিক। একই গ্রামের বাসিন্দা আলী আকবর জানান, আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে দখল ও বাউন্ডারী বন্ধ করার জন্য লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কেউ। আমরা ন্যায় বিচার ও আমাদের জমি রক্ষা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনারগাঁ পরিদর্শক (তদন্ত) আহসান উল্লাহ জানান, এসেপ্ট কোম্পানীর জমি জোড় পূর্বক বালু ভরাট ও বাউন্ডারী নির্মাণ করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসেপ্ট কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমরা কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য দিয়ে জমি ক্রয় করে আবাসন প্রকল্পের জন্য বরাদ্ধ করেছি। আমরা প্রায় দশ বছর পূর্বে ওই জমি ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছি। সম্প্রতি সিগমা অয়েল কোম্পানীর মালিক আমাদের জায়গা জোড় পূর্বক দখল করে বাউন্ডারী নির্মাণ করে দখল করে ফেলছেন। তিনি বলেন, একটি জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকার পরেও তারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ওই জমি দখল করে নেয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন