ঢাকা ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনারগাঁ পৌরসভায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চলছে হরিলুট

সোনারগাঁ প্রতিনিধি
সোনারগাঁ প্রতিনিধি
  • আপলোড সময় : ০৮:৩৩:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৩০০ বার পড়া হয়েছে

২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী মেয়র ও নয়টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং তিনটি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পৌর এরিয়া নিয়ে মামলা জটিলতায় নির্বাচন স্থগিত হয়। যার ফলে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পৌর প্রশাসকের দ্বায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

একদিকে বর্তমানে সোনারগাঁ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাই আবার পৌর নির্বাচন না হওয়ায় অভিভাবকহীন পৌরবাসী। আর তারই সুযোগে সোনারগাঁ পৌরসভার দ্বায়িত্বে থাকা আমলারা করছে অনেক অনিয়ম সেই সাথে সনদ, ওয়ারিশ, জন্মনিবন্ধনের জন্য হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক টাকা। জন্ম নিবন্ধন এর মতো একটা সনদেও ব্যবহার হচ্ছে নিন্মমানের সনদ। এ যেন চলছে লুটের মেলা। এছাড়া জায়গা জমিনের মাপ ও বিচার শালিসের ফাইল পরে আছে বছরের পর বছর।

জানা যায়, নদী/খাল খননের বিশাল এক বাজেট সোনারগাঁ পৌরসভায় আসে আর সেই খননের কাজ কিছু দিন করার পরই বন্ধ হয়ে যায়। সেই খাল খননের বাজেটের টাকা আর সাইড ব্লক গুলো দিয়ে তারা সোনারগাঁ পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তায় বসায়। যার নিচে নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে করা হয়। বর্ষা এলেই রাস্তায় লাগানো ব্লক গুলো সরে যেতে পারে বলে পৌরবাসীর ধারনা। এছাড়া জাদুঘর এক নং গেইট হতে পুরান টিপুরদী পর্যন্ত ভালো রাস্তা ভেঙে ব্লক ইট দিয়ে কাজ করা হয়। অথচ এই রাস্তা দিয়ে কোম্পানির ভারী যান চলাচল করে। জনমুখে জানা যায় এটি আরসিসি ঢালাই হওয়ার কথা ছিলো যা তারা করেছে সম্পূর্ণ নিন্দনীয় কাজ।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ইদানীং পৌরসভায় পানাম লাহাপাড়া হয়ে ষোলপাড়া, ভট্টপুর থেকে উদ্ভবগঞ্জ ব্রীজের ঢাল পর্যন্ত আরসিসি ঢালায়ের কাজে করেছে অনেক অনিয়ম। যেখানে গাইড ওয়াল ও গাইড পিলার দেয়ার কথা সেখানে তারা কিছুই করে নি। চোখে দেখার স্থানে যাই করেছে খুবই নিন্মমানের।

আরো জানা যায়, ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদার মিলে সকলের অগোচরে কোটেশনে কাজ করছে যাচ্ছে। আরো দেখা যায় সোনারগাঁ পৌরসভার সামনে ওয়াসার লাইনের কাজ আজ তিন বছর যাবত চলছে। অথচ ঠিকাদার রানা কাটিং পারমিট না নিয়ে কিছুদিন আগে হওয়া নতুন রাস্তার ব্লক ইট সরিয়ে পাইপ বসানোর কাজ করছে। যা বসানো ব্লক তুলে করলে তা আর মজবুত ও সমান্তরাল হয় না। এর আগেও তিনি একাজ করেছেন পৌরসভার গোল চত্ত্বরে পরে ব্লক গুলো এলোমেলো হয়ে পরে আছে।

পৌরসভার সচিব মাশরেকুল আলম ও ইঞ্জিনিয়ার তানভীর কিভাবে অনুমতি বিহীন কাজ করে যাচ্ছে আর কাজ দিয়ে যাচ্ছে পৌরবাসীর কাছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, পিঁয়াজ আর রসুন একই রকম দেখতে। আমরা পৌরবাসী তাদের কারনে সুবিধা বঞ্চিত। কি কাজ আর কত টাকার কাজ আমরা জানি না বা জানতে চাই না এবং উপর নিচে সব ঘুষ বানিজ্য চলে। আমরা অভিভাবকহীন কার কাছে যাবো!

পর্যবেক্ষণ করতে গেলে দেখা যায়, পানাম পৌরসভার রাস্তা থেকে আমিনপুর মাঠের ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তার গাইড ওয়াল করা হচ্ছে। আর সেখানেও পাওয়া গেছে অনিয়ম। নিন্মমানের সামগ্রী শুধু বালি দিয়ে তার উপর পুরানো কাপড় ফেলে বসানো হচ্ছে পাটাতন/ব্লক। যেই ব্লক খুবই নিন্মমানের যা ধরতেই খসে ভেঙে পরে। তার উপরের ফাঁকা জায়গা বন্ধ করতে দিচ্ছে নাম মাত্র সিমেন্ট। দেখা যায় কাজ করে যাওয়ার একদিন পরই ভেঙে নিচের দিকে ঢুকে গেছে।

এছাড়া সাংবাদিকদের টীম সংবাদ সংগ্রহে পৌরসভা অফিসে প্রবেশ করলে দেখতে পায় তারা তাদের নিজস্ব কক্ষে নেই। জিজ্ঞেস করলে বলা হয় অফিসের কাজে বাহিরে আছেন। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় পৌর সচিব মাশরেকুল আলম পৌরসভা অফিসে একটি পার্সোনাল বিশ্রামঘর বানিয়ে সেখানে ঘুমাচ্ছেন এবং সর্বদাই শুয়ে বসে সময় কাটান, তাদের অফিস নয় যেন আবাসিক আবাস্থল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সোনারগাঁ পৌরসভায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চলছে হরিলুট

আপলোড সময় : ০৮:৩৩:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী মেয়র ও নয়টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং তিনটি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পৌর এরিয়া নিয়ে মামলা জটিলতায় নির্বাচন স্থগিত হয়। যার ফলে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পৌর প্রশাসকের দ্বায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

একদিকে বর্তমানে সোনারগাঁ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাই আবার পৌর নির্বাচন না হওয়ায় অভিভাবকহীন পৌরবাসী। আর তারই সুযোগে সোনারগাঁ পৌরসভার দ্বায়িত্বে থাকা আমলারা করছে অনেক অনিয়ম সেই সাথে সনদ, ওয়ারিশ, জন্মনিবন্ধনের জন্য হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক টাকা। জন্ম নিবন্ধন এর মতো একটা সনদেও ব্যবহার হচ্ছে নিন্মমানের সনদ। এ যেন চলছে লুটের মেলা। এছাড়া জায়গা জমিনের মাপ ও বিচার শালিসের ফাইল পরে আছে বছরের পর বছর।

জানা যায়, নদী/খাল খননের বিশাল এক বাজেট সোনারগাঁ পৌরসভায় আসে আর সেই খননের কাজ কিছু দিন করার পরই বন্ধ হয়ে যায়। সেই খাল খননের বাজেটের টাকা আর সাইড ব্লক গুলো দিয়ে তারা সোনারগাঁ পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তায় বসায়। যার নিচে নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে করা হয়। বর্ষা এলেই রাস্তায় লাগানো ব্লক গুলো সরে যেতে পারে বলে পৌরবাসীর ধারনা। এছাড়া জাদুঘর এক নং গেইট হতে পুরান টিপুরদী পর্যন্ত ভালো রাস্তা ভেঙে ব্লক ইট দিয়ে কাজ করা হয়। অথচ এই রাস্তা দিয়ে কোম্পানির ভারী যান চলাচল করে। জনমুখে জানা যায় এটি আরসিসি ঢালাই হওয়ার কথা ছিলো যা তারা করেছে সম্পূর্ণ নিন্দনীয় কাজ।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ইদানীং পৌরসভায় পানাম লাহাপাড়া হয়ে ষোলপাড়া, ভট্টপুর থেকে উদ্ভবগঞ্জ ব্রীজের ঢাল পর্যন্ত আরসিসি ঢালায়ের কাজে করেছে অনেক অনিয়ম। যেখানে গাইড ওয়াল ও গাইড পিলার দেয়ার কথা সেখানে তারা কিছুই করে নি। চোখে দেখার স্থানে যাই করেছে খুবই নিন্মমানের।

আরো জানা যায়, ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদার মিলে সকলের অগোচরে কোটেশনে কাজ করছে যাচ্ছে। আরো দেখা যায় সোনারগাঁ পৌরসভার সামনে ওয়াসার লাইনের কাজ আজ তিন বছর যাবত চলছে। অথচ ঠিকাদার রানা কাটিং পারমিট না নিয়ে কিছুদিন আগে হওয়া নতুন রাস্তার ব্লক ইট সরিয়ে পাইপ বসানোর কাজ করছে। যা বসানো ব্লক তুলে করলে তা আর মজবুত ও সমান্তরাল হয় না। এর আগেও তিনি একাজ করেছেন পৌরসভার গোল চত্ত্বরে পরে ব্লক গুলো এলোমেলো হয়ে পরে আছে।

পৌরসভার সচিব মাশরেকুল আলম ও ইঞ্জিনিয়ার তানভীর কিভাবে অনুমতি বিহীন কাজ করে যাচ্ছে আর কাজ দিয়ে যাচ্ছে পৌরবাসীর কাছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, পিঁয়াজ আর রসুন একই রকম দেখতে। আমরা পৌরবাসী তাদের কারনে সুবিধা বঞ্চিত। কি কাজ আর কত টাকার কাজ আমরা জানি না বা জানতে চাই না এবং উপর নিচে সব ঘুষ বানিজ্য চলে। আমরা অভিভাবকহীন কার কাছে যাবো!

পর্যবেক্ষণ করতে গেলে দেখা যায়, পানাম পৌরসভার রাস্তা থেকে আমিনপুর মাঠের ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তার গাইড ওয়াল করা হচ্ছে। আর সেখানেও পাওয়া গেছে অনিয়ম। নিন্মমানের সামগ্রী শুধু বালি দিয়ে তার উপর পুরানো কাপড় ফেলে বসানো হচ্ছে পাটাতন/ব্লক। যেই ব্লক খুবই নিন্মমানের যা ধরতেই খসে ভেঙে পরে। তার উপরের ফাঁকা জায়গা বন্ধ করতে দিচ্ছে নাম মাত্র সিমেন্ট। দেখা যায় কাজ করে যাওয়ার একদিন পরই ভেঙে নিচের দিকে ঢুকে গেছে।

এছাড়া সাংবাদিকদের টীম সংবাদ সংগ্রহে পৌরসভা অফিসে প্রবেশ করলে দেখতে পায় তারা তাদের নিজস্ব কক্ষে নেই। জিজ্ঞেস করলে বলা হয় অফিসের কাজে বাহিরে আছেন। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় পৌর সচিব মাশরেকুল আলম পৌরসভা অফিসে একটি পার্সোনাল বিশ্রামঘর বানিয়ে সেখানে ঘুমাচ্ছেন এবং সর্বদাই শুয়ে বসে সময় কাটান, তাদের অফিস নয় যেন আবাসিক আবাস্থল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন