স্যাটেলাইট ট্যাগ বসানো সুন্দরবনের সেই কুমির চিতলমারী থেকে উদ্ধার
- আপলোড সময় : ০৪:১৯:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪
- / ৩৭৪ বার পড়া হয়েছে
সুন্দরবনে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসানো চারটি কুমিরের মধ্যে একটি কুমির শত কিলোমিটার ঘুরে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার একটি পুকুরে অবস্থান করছিল। স্যাটেলাইট ট্যাগ বসানো কুমিরটিকে গতকাল শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উদ্ধার করেছে খুলনা বন্য প্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের একটি টিম। উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা বন্য প্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের জীব বৈচিত্র সংরক্ষন কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য। সম্প্রতি লবণ পানির কুমিরের আচরণ ও গতিবিধি গবেষণার জন্য সুন্দরবনে চারটি কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছিল। অবমুক্ত করা চারটি কুমিরের মধ্যে তিনটি সুন্দরবনের ভেতরে ঘোরাঘুরি করলেও একটি কুমিরটি সুন্দরবন থেকে বের হয়ে মোংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জের পানগুছি পিরোজপুরের কচা, শরনখোলার বলেশ্বর নদী অতিক্রম করে মধুমতি নদী সংলগ্ন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার একটি পুকুর অবস্থান করছিল। এ বিষয়ে চিতলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকরাম হোসেন জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই এলাকার মধুমতি নদী সংলগ্ন রাস্তায় কুমিরটিকে দেখতে পায় স্থানীয়রা। কুমিরের বিষয়টি মুহূর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা কুমিরটি দেখার জন্য রাস্তায় ভিড় জমায়। এক পর্যায়ে কুমিরটি নদীতে না ফিরে রাস্তার পাশ্ববর্তী একটি পুকুরে অবস্থান নেয়। শনিবার সকালে থেকে, ওই কুমিরটিকে দেখতে শত শত উৎসুক জনতা পুকুরটিকে ঘিরে রাখে। কুমিরটির নিরাপত্তার জন্য ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই পুকুরের পাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। ওসি মোঃ ইকরাম হোসেন আরো জানান, বিষয়টি বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। সন্ধার পরে খুলনা বন্য প্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের একটি টিম কুমরিটি উদ্ধার করেছেন। সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, গত ১৩ মার্চ সর্বপ্রথম দুটি কুমির সুন্দরবনের নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছিল। এরপর গত ১৬ মার্চ স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে আরো একটি কুমিরের সঙ্গে এই কুমিরটিকেও অবমুক্ত করা হয়েছিল সুন্দরবনের হারবাড়িয়া পয়েন্টে। কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে নদীতে অবমুক্ত করার কাজটি যৌথভাবে করেছে বন বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)। তাদের সহযোগিতা করছে জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিআইজেড)।
হাওলাদার আজাদ কবির আরও জানান, সুন্দরবনের কুমির কোথায়, কীভাবে বিচরণ করে তা নিয়ে এর আগে বিস্তারিত কোনো গবেষণা হয়নি। আমরা প্রতি বছরই সুন্দরবনে কুমিরের কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে অবমুক্ত করে থাকি। এ পর্যন্ত বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে প্রায় ২০০ কুমির সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। তবে তাদের গতিবিধি ও পরবর্তীতে তারা কোথায় যায় সেসব গবেষণা কখনও করা হয়নি। সে কারণেই স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে এই গবেষণাটি করা হচ্ছে।