গাজীপুর কাজী মার্কেটে সুদখোর মনসুর’র অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ
- আপলোড সময় : ১০:১০:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪
- / ৪২৯ বার পড়া হয়েছে
গাজীপুর কাজী মার্কেটে সুদখোর মনসুর’র অত্য
গাজীপুর একটি শিল্প নগরী এলাকা। বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসা মানুষের বাস। তাদের অল্প আয়েই চলছে জীবিকা নির্বাহ। শিল্প কারখানায় কাজ করে টাকা গুনতে হয় মাসের শেষে। মাস শেষে সংসার চালাতে খাচ্ছেন হিমসিম। তাঁরা ছুটে যাচ্ছে সুদখোর মনসুর’র কাছে। অভাবগ্রস্থ মানুষের দুর্বলতার সুযোগে চড়া সুদে ঋণ দিয়ে সর্বশান্ত এক জলন্ত নাম মনসুর। মুনসুর’র কবলে পরে অনেকেই হচ্ছেন সর্বশান্ত।
গাজীপুর, কাসেমপুর থানাধীন কাজী মার্কেটে সাধারণ মানুষ সুদখোর মনসুর’র বেড়াজালে বন্দী হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সুদের কব্জা থেকে বের হতে না পেরে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে তাদের জীবন। ফলে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, নামমাত্র মুনসুর ইলেকট্রনিকস & ফার্নিচার ভিশন তবে তার মুল রহস্য সুদের উপর ঋণ দেওয়া এবং সাধারণ মানুষকে সর্বশান্ত করা। কাসেমপুর কাজী মার্কেটে সুদখোর মুনসুর অবৈধভাবে পুঁজি গড়ে তুলে জমজমাট সুদের ব্যবসা শুরু করেছে। আবার তিনি এনজিও, সমিতি ও ব্যাংক থেকে স্বল্প পরিমাণ সুদে ঋণ নিয়ে গ্রামের অসহায় মানুষদের কাছে সেটা বেশি লাভে দাদন দিচ্ছে। এক হাজার টাকা নিলে প্রতিমাসে মনসুরকে ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা সুদ দিতে হয়। আবার কেউবা জমি, মোবাইল, গহনা, মেশিন, বসতবাড়ি, বাড়ির প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র বন্ধক রেখে সুদখোর মনসুর’র কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করছে।
সুদখোর মনসুর’র খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, তাদের সুদের টাকার বাড়ি ও কয়েক শতাংশ জমি রয়েছে। তাদের এসব ঘরে অসহায় মানুষদের বন্ধকীর জিনিসপত্র রেখে দিয়েছে। এক সময় মুনসুর’র টাকা সুদে আসলে কয়েকগুণ হলে তারা নির্দিষ্ট সময়ে সুদসহ টাকা ফেরৎ দিতে না পারার অজুহাতে সেসব জিনিস তারা তাদের কাছে রেখে দেয় অথবা বিক্রি করে। অনেকে তাদের মুল্যবান স্বর্নালংকার জুয়েলারি গহনা মনসুর’র নিকট রেখে বন্ধক রেখে সুদের টাকা গ্রহণ করছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদসহ টাকা ফেরৎ না দিলে মুল্যবান স্বর্ন অলংকার জুয়েলারী গহনা আর ফেরৎ প্রদান করেন না। চড়া সুদে টাকা নিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন নিরীহ মানুষগুলো।
আইন সম্মত বা বৈধ না হওয়া সত্বেও এই ব্যবসার সাথে জড়িতদেরও নানা কুট কৌশলের কারণে সমাজের বিরুদ্ধে ‘টু’ শব্দটি পর্যন্ত করা হচ্ছে না। কিন্তু দিনে দিনে এর ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এলাকার কতিপয় লোকের সাথে এই ব্যাপারে আলাপ করলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সুদের ব্যবসা এই এলাকায় ভয়াবহ বিষের ন্যায় ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা যদি সুদ ব্যবসায়ীদের ব্যবস্থা না নেয় তাহলে ভবিষ্যতে এই অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে।
এই ব্যাপারে থানা-পুলিশেরও এগিয়ে আসা উচিৎ। বর্তমানে মনসুর তার পেশা হিসেবেও সুদ ব্যবসাকে বেছে নিয়েছে। তারা এনজিও, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পুঁজি তৈরি করে সুদ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও স্বর্ণের বিভিন্ন গহনা নেওয়ার প্রবণতা সুদ ব্যবসায়ীদের মাঝে বেড়ে গেছে। টাকা ফেরৎ দিতে দেরি হলেই সেসব মূল্যবান জিনিসপত্র তাদের হয়ে যাচ্ছে। এতে করে সাধারণ মানুষ তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছে। সুদখোর মনসুর টাকা দেওয়ার সময় জমির দলিল, ব্যাংকের ফাঁকা চেক ও সাদা ষ্ট্যাম্পে সাক্ষর নেয়।
যখন কেউ টাকা ফেরউ দিতে পারেনা তখন ঐ চেক ষ্ট্যাম্পে ইচ্ছেমত টাকা বসিয়ে পাওনাদারের নিকট দাবি করে। এমনকি মিটিং বসিয়ে এলাকার গন্যমাণ্য ব্যক্তিগতদের সাহায্য নিয়েও তারা ঐ টাকা আদায় করে। সুদখোর মনসুর অন্য ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে রাতা রাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার আশায় এই সুদ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। তাদের বেড়া জালে বন্দী হয়ে অনেক সহজ সরল সাধারণ মানুষ জমি, ঘড়-বাড়ি থেকে শুরু করে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। সুদ ব্যবসায়ী মনসুর’র অত্যাচারে মানুষ ঘড়-বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে তাদের অত্যাচারে বাড়ি ফিরতে পারছেনা।
আসল টাকার সুদ দিতে দিতে চক্রবৃদ্ধি হাড় ছাড়িয়ে দ্বিগুণ টাকা দিয়েছে। কিন্তু এর পরেও সুদ ব্যবসায়ীর পাওনা এখনও রয়েছে। কাজী মার্কেটে কুখ্যাত সুদ ব্যবসায়ীর শীর্ষে রয়েছেন সুদখোর মনসুর। এছাড়াও সামান্য একটি ঘড় ভাড়া নিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় দৈনিক কিস্তির ও চড়া অংকের সুদ ব্যবসায় জমজমাট ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে মনসুন। যা দেখেও না দেখার ভান জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের।
আর এই সুদের ব্যবসা করে সুদখোর মনসুর হয়েছেন জিরো থেকে হিরো। যা সরেজমিন তদন্ত করলেই বের হয়ে আসবে এদের সম্পদের হিসাব। অপরদিকে এসব সুদ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং এলাকার সাধারণ মানুষদের সচেতন করে তুলে তাদের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করা দরকার বলে মনে করেন সুধী সমাজ।