ঢাকা ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাদু থেকে রক্ষা পাওয়ার আমল

মো:আবু তালহা তারীফ (নিজস্ব প্রতিবেদক)
মো:আবু তালহা তারীফ (নিজস্ব প্রতিবেদক)
  • আপলোড সময় : ০৬:৩৪:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৮৭৩ বার পড়া হয়েছে

জাদুকে আররিতে বলা হয় সেহর। জাদু করা শয়তানী ও ইসলামে একটি ঘৃনিত কাজ। বর্তমান সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা কেউ সুখে কিংবা ভালো থাকুক বা তার জীবনে উন্নতি ঘটুক তা তাদের মেনে নিতে কষ্ট হয়। তাই তারা সরাসরি ক্ষতি করার সুযোগ না পেয়ে পরোক্ষভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। পরোক্ষভাবে ক্ষতি করার জন্য যার ক্ষতি করবে তার পশম, চোখের পাপড়ি, নখ, চামড়া, ব্যবহৃত পোশাক সংগ্রহ করে বা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে তাকে জাদু করে। জাদুর প্রভাবে সে অসুস্থ হয়ে যায়, শরীর নষ্ট হয়ে যায়,কষ্ট পায় এবং মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকি জীবনহানিও ঘটার সম্ভাবনা থাকে। জাদুর সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আলোচনা রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা বলেন,’ আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরী করেনি; বরং শয়তানরা কুফরী করেছে। তারা মানুষকে যাদু শেখাত এবং (তারা অনুসরণ করেছে) যা নাযিল করা হয়েছিল বাবেলের দুই ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর। আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা, সুতরাং তোমরা কুফরী করো না।’ সূরা বাকারা, আয়াত-১০২।

জাদু খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর। কেউ জাদু করে থাকলে তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। এই জাদু থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাকে প্রথমত জানতে হবে জাদুকর কিভাবে জাদু করেছে। তা জেনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। এমনকি বিভিন্ন দোয়া রয়েছে তা পাঠ করে ফু দিলে জাদু নষ্ট হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। হজরত জিব্রাইল (আ.) রাসুল (সঃ)কে একটি দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছিলেন— দোয়াটি হচ্ছে,’বিসমিল্লাহি আরক্বিক মিন কুল্লি শাইয়িন য়ুযিক। ওয়া মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিক। বিসমিল্লাহি আরক্বিক।’
অর্থ্যাৎ আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। মুসলিম।

জাদু থেকে মুক্তি পেতে হলে আয়াতুল কুরসি অথবা সুরা আরাফ, সুরা ইউনুস, সুরা ত্বহার যাদুবিষয়ক আয়াতের সাথে সুরা কাফিরুন, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করে যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তির উপর ও পাত্রে পানি রেখে পানিতে ফুল দিয়ে সেই পানি পান বা গোছল করালে ইনশাল্লাহ রোগী সুস্থ হয়ে যাবে। এছাড়া নিন্ম বর্ণিত দোয়াটি পাঠ করে ঝাড়ফুঁক করা যেতে পারে। আনাস বিন মালিক (রা.) বর্ণিত, রাসুল (সা.) নিম্ন উল্লেখিত দোয়াটি পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়ফুঁক করতেন। ‘ আল্লাহুম্মা রাব্বান নাসি উজহিবাল বা’সি, ইশফিহি ওয়া আনতাশ-শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফায়ুকা শিফায়ান লা ইউগাদিরু সাকমা।’
অর্থ্যাৎ হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী, আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী, আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দিন যেন কোনো রোগ না থাকে। বুখারি।

সর্বোপরি কেউ যেন আমাকে জাদু করতে না পারে সেজন্য নিজেকে সর্বদা আমলের মধ্যে থাকতে হবে। বেশী বেশী করে তাসবিহ পাঠ ও ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকতে হবে। এছাড়া নিম্ন বর্ণিত দোয়াটি পাঠ করার মাধ্যমে জাদু ও বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। দোয়াটি হল,’আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়তানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।অর্থ্যাৎ আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কলেমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করছি।’ জাদু করা বা জড়িয়ে যাওয়া এবং আস্থা রাখা ব্যক্তিদের ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী রয়েছে। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, তিন শ্রেণির মানুষ বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। তারা হলো, শরাবখোর বা মদ্যপায়ী, রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়তা ছিন্নকারী এবং জাদুর প্রতি আস্থা স্থাপনকারী। মুসনাদে আহমদ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

জাদু থেকে রক্ষা পাওয়ার আমল

আপলোড সময় : ০৬:৩৪:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৩

জাদুকে আররিতে বলা হয় সেহর। জাদু করা শয়তানী ও ইসলামে একটি ঘৃনিত কাজ। বর্তমান সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা কেউ সুখে কিংবা ভালো থাকুক বা তার জীবনে উন্নতি ঘটুক তা তাদের মেনে নিতে কষ্ট হয়। তাই তারা সরাসরি ক্ষতি করার সুযোগ না পেয়ে পরোক্ষভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। পরোক্ষভাবে ক্ষতি করার জন্য যার ক্ষতি করবে তার পশম, চোখের পাপড়ি, নখ, চামড়া, ব্যবহৃত পোশাক সংগ্রহ করে বা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে তাকে জাদু করে। জাদুর প্রভাবে সে অসুস্থ হয়ে যায়, শরীর নষ্ট হয়ে যায়,কষ্ট পায় এবং মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকি জীবনহানিও ঘটার সম্ভাবনা থাকে। জাদুর সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আলোচনা রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা বলেন,’ আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরী করেনি; বরং শয়তানরা কুফরী করেছে। তারা মানুষকে যাদু শেখাত এবং (তারা অনুসরণ করেছে) যা নাযিল করা হয়েছিল বাবেলের দুই ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর। আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা, সুতরাং তোমরা কুফরী করো না।’ সূরা বাকারা, আয়াত-১০২।

জাদু খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর। কেউ জাদু করে থাকলে তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। এই জাদু থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাকে প্রথমত জানতে হবে জাদুকর কিভাবে জাদু করেছে। তা জেনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। এমনকি বিভিন্ন দোয়া রয়েছে তা পাঠ করে ফু দিলে জাদু নষ্ট হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। হজরত জিব্রাইল (আ.) রাসুল (সঃ)কে একটি দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছিলেন— দোয়াটি হচ্ছে,’বিসমিল্লাহি আরক্বিক মিন কুল্লি শাইয়িন য়ুযিক। ওয়া মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিক। বিসমিল্লাহি আরক্বিক।’
অর্থ্যাৎ আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। মুসলিম।

জাদু থেকে মুক্তি পেতে হলে আয়াতুল কুরসি অথবা সুরা আরাফ, সুরা ইউনুস, সুরা ত্বহার যাদুবিষয়ক আয়াতের সাথে সুরা কাফিরুন, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করে যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তির উপর ও পাত্রে পানি রেখে পানিতে ফুল দিয়ে সেই পানি পান বা গোছল করালে ইনশাল্লাহ রোগী সুস্থ হয়ে যাবে। এছাড়া নিন্ম বর্ণিত দোয়াটি পাঠ করে ঝাড়ফুঁক করা যেতে পারে। আনাস বিন মালিক (রা.) বর্ণিত, রাসুল (সা.) নিম্ন উল্লেখিত দোয়াটি পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়ফুঁক করতেন। ‘ আল্লাহুম্মা রাব্বান নাসি উজহিবাল বা’সি, ইশফিহি ওয়া আনতাশ-শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফায়ুকা শিফায়ান লা ইউগাদিরু সাকমা।’
অর্থ্যাৎ হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী, আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী, আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দিন যেন কোনো রোগ না থাকে। বুখারি।

সর্বোপরি কেউ যেন আমাকে জাদু করতে না পারে সেজন্য নিজেকে সর্বদা আমলের মধ্যে থাকতে হবে। বেশী বেশী করে তাসবিহ পাঠ ও ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকতে হবে। এছাড়া নিম্ন বর্ণিত দোয়াটি পাঠ করার মাধ্যমে জাদু ও বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। দোয়াটি হল,’আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়তানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।অর্থ্যাৎ আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কলেমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করছি।’ জাদু করা বা জড়িয়ে যাওয়া এবং আস্থা রাখা ব্যক্তিদের ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী রয়েছে। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, তিন শ্রেণির মানুষ বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। তারা হলো, শরাবখোর বা মদ্যপায়ী, রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়তা ছিন্নকারী এবং জাদুর প্রতি আস্থা স্থাপনকারী। মুসনাদে আহমদ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন