ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অধিনস্থ কর্মচারীর সাথে ভালো ব্যবহার করুন

মো:আবু তালহা তারীফ (নিজস্ব প্রতিবেদক)
মো:আবু তালহা তারীফ (নিজস্ব প্রতিবেদক)
  • আপলোড সময় : ০৯:১১:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৩৭৪ বার পড়া হয়েছে

বেঁচে থাকতে হলে একে অপরের উপর নির্ভর করতে হয়। আজ যারা অফিস প্রধান তারাই তাদের অধিনস্ত কর্মচারীর কারনে খুব সহজেই অফিস পরিচালনা করতে সক্ষম। আপনি একটু ভাবুন, আপনার নিম্ম কর্মচারী যদি না থাকত,অফিসের কাজে আপনার কতই বেগ পেতে হত। অফিস পরিস্কার পরিছন্ন রাখসহ সকল কাজই প্রধানের পক্ষে করা কষ্টের হত। আজ যারা মালিক পক্ষ, যারা শিল্পপতি, দামি বাড়িতে বসবাস ও দামি গাড়িতে চলাচল করে, আনন্দে উল্লাসে সময়কে অতিবাহিত করে একটু লক্ষ্য করুন, আপনার এই আনন্দের পিছনে রয়েছে আপনারই অধিনস্ত শত শত শ্রমিক বা কর্মচারীর হাজারো ফোটা ঘাম। একজন কর্মচারী গোটা জীবন কেটে যায় আপনার কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে। মালিকের মুখে হাসি ফুটাতে,মালিককে লাভবান করতে অসহনীয় পরিবেশে কাজ করেন তারা। এমনকি মালিককে লাভবান করতে অতিরিক্ত ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করেন হাসি মুখে। সপ্তাহ, মাস জুড়ে কাজ করে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও মন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। শ্রমিকদের  দুঃখ কষ্ট তারা ব্যতিত অন্যরা  খুব কমই বুজে। যে শ্রমিক দিয়ে আমরা আজ বিত্তশালী। আজ যারা বাসা কিংবা ময়লার পানির ড্রেনে মাথা ভিজিয়ে পরিস্কার করছে তাদের কষ্টের কারনে আমাদের বাসা ও বাথরুমটি পরিস্কার। তাদের কারনেই পরিবারকে নিয়ে আনন্দে কাটাচ্ছি। তাদের অবহেলা করা উচিত নয়। শান্তির ধর্ম ইসলামে মানুষের পার্থক্য করেনি। মাটির কবরেই সকলের শেষ ঠিকানা। ধনী-গরিব, মালিক-শ্রমিকের কোনো পার্থক্য করে না। একটি প্রতিষ্ঠানে সবাই সমান। মালিক নিজে যা খাবে ও পরবে, অধীনস্থ কর্মচারীকে তা-ই খাওয়াবে ও পরাবে। উচু নিচুর মান মানসিকতা তৈরি করবে না। প্রিয় রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ভাইদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। অতএব, যার অধীনে কোনো ভাই থাকে তাকে তা-ই খাওয়াবে যা সে নিজে খায়, তাকে তা-ই পরাবে যা সে নিজে পরে এবং তাকে সাধ্যের অধিক কাজ চাপিয়ে দেবে না। অগত্যা তাকে দিয়ে যদি কোনো কষ্টের কাজ করাতে হয়, তাহলে তাকে সাহায্য করবে।’ বুখারি ও মুসলিম।

বাসার কাজের ছেলে মেয়েদের অতিরিক্ত কাজ করানো হয়৷ অল্প বেতন দিয়ে পুরো পরিবারটিকেই গুছিয়ে রাখে তারা। একটু ভুল হলেই বকাঝকা পর্যন্ত করে। কাজের ছেলেমেয়ের হাত দিয়ে সামান্য কিছু নষ্ট হলেই শুরু হয় বেদম প্রহার বা নির্যাতন। অথচ নিজের ছেলে মেয়েদের ব্যপারে কোন কিছু নেই। তিনি (সা.) ক্রীতদাসদের কষ্ট নিজে ভাগ করে নিতেন। বিপদে-আপদে তাদের পাশে দাঁড়াতেন। কোনো ক্রীতদাসের অসুস্থতার খবর শুনলে নবীজি ছুটে যেতেন এবং তার সেবা-শুশ্রূষা করতেন। তার শেষ জীবন পর্যন্ত দাস-দাসীদের কথা স্মরণ রেখেছিলেন। হজরত আলী (রা.) বলেছেন, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সর্বশেষ বাণী ছিল, ‘১ নামাজ-নামাজ, আর ২. যারা তোমাদের অধীনে তাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো।’ আদাবুল মুফরাদ।

সর্বশেষ একটি হাদিস দিয়ে শেষ করব। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার মধ্যে তিনটি গুণ থাকবে, আল্লাহ তার ওপর রহমতের ডানা প্রসারিত করবেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। ১. দুর্বলের সঙ্গে নম্র ব্যবহার, ২. পিতা-মাতার সঙ্গে মমতা জড়ানো কোমল ব্যবহার এবং ৩. দাস-দাসীর প্রতি সদাচরণ।’ তিরমিযী।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

অধিনস্থ কর্মচারীর সাথে ভালো ব্যবহার করুন

আপলোড সময় : ০৯:১১:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০২৩

বেঁচে থাকতে হলে একে অপরের উপর নির্ভর করতে হয়। আজ যারা অফিস প্রধান তারাই তাদের অধিনস্ত কর্মচারীর কারনে খুব সহজেই অফিস পরিচালনা করতে সক্ষম। আপনি একটু ভাবুন, আপনার নিম্ম কর্মচারী যদি না থাকত,অফিসের কাজে আপনার কতই বেগ পেতে হত। অফিস পরিস্কার পরিছন্ন রাখসহ সকল কাজই প্রধানের পক্ষে করা কষ্টের হত। আজ যারা মালিক পক্ষ, যারা শিল্পপতি, দামি বাড়িতে বসবাস ও দামি গাড়িতে চলাচল করে, আনন্দে উল্লাসে সময়কে অতিবাহিত করে একটু লক্ষ্য করুন, আপনার এই আনন্দের পিছনে রয়েছে আপনারই অধিনস্ত শত শত শ্রমিক বা কর্মচারীর হাজারো ফোটা ঘাম। একজন কর্মচারী গোটা জীবন কেটে যায় আপনার কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে। মালিকের মুখে হাসি ফুটাতে,মালিককে লাভবান করতে অসহনীয় পরিবেশে কাজ করেন তারা। এমনকি মালিককে লাভবান করতে অতিরিক্ত ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করেন হাসি মুখে। সপ্তাহ, মাস জুড়ে কাজ করে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও মন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। শ্রমিকদের  দুঃখ কষ্ট তারা ব্যতিত অন্যরা  খুব কমই বুজে। যে শ্রমিক দিয়ে আমরা আজ বিত্তশালী। আজ যারা বাসা কিংবা ময়লার পানির ড্রেনে মাথা ভিজিয়ে পরিস্কার করছে তাদের কষ্টের কারনে আমাদের বাসা ও বাথরুমটি পরিস্কার। তাদের কারনেই পরিবারকে নিয়ে আনন্দে কাটাচ্ছি। তাদের অবহেলা করা উচিত নয়। শান্তির ধর্ম ইসলামে মানুষের পার্থক্য করেনি। মাটির কবরেই সকলের শেষ ঠিকানা। ধনী-গরিব, মালিক-শ্রমিকের কোনো পার্থক্য করে না। একটি প্রতিষ্ঠানে সবাই সমান। মালিক নিজে যা খাবে ও পরবে, অধীনস্থ কর্মচারীকে তা-ই খাওয়াবে ও পরাবে। উচু নিচুর মান মানসিকতা তৈরি করবে না। প্রিয় রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ভাইদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। অতএব, যার অধীনে কোনো ভাই থাকে তাকে তা-ই খাওয়াবে যা সে নিজে খায়, তাকে তা-ই পরাবে যা সে নিজে পরে এবং তাকে সাধ্যের অধিক কাজ চাপিয়ে দেবে না। অগত্যা তাকে দিয়ে যদি কোনো কষ্টের কাজ করাতে হয়, তাহলে তাকে সাহায্য করবে।’ বুখারি ও মুসলিম।

বাসার কাজের ছেলে মেয়েদের অতিরিক্ত কাজ করানো হয়৷ অল্প বেতন দিয়ে পুরো পরিবারটিকেই গুছিয়ে রাখে তারা। একটু ভুল হলেই বকাঝকা পর্যন্ত করে। কাজের ছেলেমেয়ের হাত দিয়ে সামান্য কিছু নষ্ট হলেই শুরু হয় বেদম প্রহার বা নির্যাতন। অথচ নিজের ছেলে মেয়েদের ব্যপারে কোন কিছু নেই। তিনি (সা.) ক্রীতদাসদের কষ্ট নিজে ভাগ করে নিতেন। বিপদে-আপদে তাদের পাশে দাঁড়াতেন। কোনো ক্রীতদাসের অসুস্থতার খবর শুনলে নবীজি ছুটে যেতেন এবং তার সেবা-শুশ্রূষা করতেন। তার শেষ জীবন পর্যন্ত দাস-দাসীদের কথা স্মরণ রেখেছিলেন। হজরত আলী (রা.) বলেছেন, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সর্বশেষ বাণী ছিল, ‘১ নামাজ-নামাজ, আর ২. যারা তোমাদের অধীনে তাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো।’ আদাবুল মুফরাদ।

সর্বশেষ একটি হাদিস দিয়ে শেষ করব। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার মধ্যে তিনটি গুণ থাকবে, আল্লাহ তার ওপর রহমতের ডানা প্রসারিত করবেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। ১. দুর্বলের সঙ্গে নম্র ব্যবহার, ২. পিতা-মাতার সঙ্গে মমতা জড়ানো কোমল ব্যবহার এবং ৩. দাস-দাসীর প্রতি সদাচরণ।’ তিরমিযী।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন