ঢাকা ০৩:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদকের ডেঞ্জার জোন আদমজী বিহারী কলোনি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ০৮:২১:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪
  • / ২৬০ বার পড়া হয়েছে

সিদ্ধিরগঞ্জে মাদকের বিপদজনক এলাকায় পরিণত হয়েছে আদমজী সুমিলপাড়ার বিহারি কলোনি। কলোনির স্বঘোষিত চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনের নেতৃত্বাধিন ১১ পান্ডবের শেল্টারে চলছে মাদক ব্যবসা, ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে এই ১১ পান্ডবের কাছে জিম্মি কলোনির আড়াই হাজার পরিবারের কমপক্ষে ২০ হাজার সদস্য। বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে লিয়াকত হোসেন বাহিনীর পাকিস্তান প্রিতি দূর না হওয়ায় কলোনিবাসির মাঝে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ। আর মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছেন তাছলিম ও ভুট্টু। তাছলিম মাদক কারবারিদের গ্রেফতার ও আসামী ছাড়াতেও বিভিন্ন স্থানে তদবির করে থাকে।

জানা গেছে, আদমজী জুটমিল কর্তৃপক্ষের দেওয়া ৩৯ একর জমিতে ঠাঁই নেয় স্বাধীনতা যুদ্ধেরপর আটকে পড়া পাকিস্তানের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। তখন তাদের দেখভাল করতেন আন্তর্জাতিক রেড ক্রস। যা বহাল ছিল ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত। তারপর তাদের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ সরকার। বর্তমানে কলোনিতে আড়াই হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার লোক বসবাস করছে। তার মধ্যে ৮ হাজার লোক পেয়েছেন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। তারা প্রয়োগ করছেন ভোটাধিকার। তারা পাচ্ছেন ফ্রি বিদ্যুৎ, পানিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা।

একাধিক কলোনিবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘স্ট্র্যান্ডেড পাকিস্তানীজ জেনারেল রিপাট্রিয়েশন কমিটি’ এর পাশাপাশি ‘স্ট্র্যান্ডেড পিপলস্ জেনারেল রিহ্যাবলিটেশন কমিটি’ এর সভাপতি লিয়াকত হোসেন, তাছলিম, ভুট্টু, লাল বাবু, নথিয়া মুন্না, সুনিল, ভোলা মেম্বার, আজগর মুরুব্বি, শাহজাদা এবং ভুলিয়াকে নিয়ে কলোনিকে তাদের বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করেছেন। মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছেন তাছলিম ও ভুট্টু। কাঁচা বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ঘরভাড়া আদায় করেন ভোলা মেম্বার, আজগর মুরুব্বি ও শাহজাদা। বিদ্যুৎ বিল নেন সুনিল ও তার অনুসারিরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাবদ বিভিন্ন অনুদান নিয়ে আতœসাত করেন জয়নাল আবেদীন। মারামারিসহ বিশৃঙ্খলা ধামাচাপা দেয়ার ভূমিকা রাখে পটু ভুলিয়া। কলোনিতে অর্ধশতাধিক মাদক স্পট রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাদক ব্যবসায়ী বাবলা। তিনি ডিলার বাবলা হিসেবে পরিচিত। মাদক বিক্রেতাদের মধ্যে খাটিয়া গুড্ডু, মুরাদ, পিচ্চি পাঠান, নাদিম, চোরা বাবু ও সুরিয়া রানাসহ রয়েছে অসংখ্য মাদক কারবারি।

উল্লেখ্য, পূর্বে এই আদমজী বিহারী কলোনি এলাকা থেকেই বিপুল পরিমান মাদক সহ মাদক সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী, মাদক স্পট পরিচালনাকারী ও কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদকে একাধিকবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার মাদকের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তা নষ্টও করা হয়েছে। বর্তমানে প্রশাসনের ভয়ে পলাতক রয়েছে আদমজী বিহারী কলোনী এলাকার আলোচিত মাদক কারবারি নাহিদ। তবে তার অনুপস্থিতিতে অসংখ্য মাদক কারবারি একাধিক স্পটে বর্তমানে ক্ষুদ্র পরিসরে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। বিহারি কলোনি এলাকায় ঢুকলে প্রকাশ্যে ডেকেও মাদক বিক্রি করতে দেখা যায় মাদক ব্যবসায়ীদের।

আদমজী বিহারি কলোনির বাসিন্দারা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, আদমজী বিহারি কলোনি এলাকার আলোচিত মাদক কারবারি, সেবনকারী, সরবরাহকারী সক্রিয় রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মনসুর লোহার ছেলে পিচ্ছি পাঠান, সিনবাদ, খাটিয়া গুড্ডু ও তার ছেলে নাদিম, চোরা বাবু, রকি, পাক্কাল কাল্লু, জুম্মন, সপনাম, রাজ, মোস্তাক, হানিফ, সুরিয়া রানা, মজিবর ওরফে পক্ষি মজিবরের ছেলে নাহিদ ও মিজান, চুন্নির ছেলে আলামিন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মাদকের ডেঞ্জার জোন আদমজী বিহারী কলোনি

আপলোড সময় : ০৮:২১:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে মাদকের বিপদজনক এলাকায় পরিণত হয়েছে আদমজী সুমিলপাড়ার বিহারি কলোনি। কলোনির স্বঘোষিত চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনের নেতৃত্বাধিন ১১ পান্ডবের শেল্টারে চলছে মাদক ব্যবসা, ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে এই ১১ পান্ডবের কাছে জিম্মি কলোনির আড়াই হাজার পরিবারের কমপক্ষে ২০ হাজার সদস্য। বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে লিয়াকত হোসেন বাহিনীর পাকিস্তান প্রিতি দূর না হওয়ায় কলোনিবাসির মাঝে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ। আর মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছেন তাছলিম ও ভুট্টু। তাছলিম মাদক কারবারিদের গ্রেফতার ও আসামী ছাড়াতেও বিভিন্ন স্থানে তদবির করে থাকে।

জানা গেছে, আদমজী জুটমিল কর্তৃপক্ষের দেওয়া ৩৯ একর জমিতে ঠাঁই নেয় স্বাধীনতা যুদ্ধেরপর আটকে পড়া পাকিস্তানের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। তখন তাদের দেখভাল করতেন আন্তর্জাতিক রেড ক্রস। যা বহাল ছিল ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত। তারপর তাদের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ সরকার। বর্তমানে কলোনিতে আড়াই হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার লোক বসবাস করছে। তার মধ্যে ৮ হাজার লোক পেয়েছেন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। তারা প্রয়োগ করছেন ভোটাধিকার। তারা পাচ্ছেন ফ্রি বিদ্যুৎ, পানিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা।

একাধিক কলোনিবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘স্ট্র্যান্ডেড পাকিস্তানীজ জেনারেল রিপাট্রিয়েশন কমিটি’ এর পাশাপাশি ‘স্ট্র্যান্ডেড পিপলস্ জেনারেল রিহ্যাবলিটেশন কমিটি’ এর সভাপতি লিয়াকত হোসেন, তাছলিম, ভুট্টু, লাল বাবু, নথিয়া মুন্না, সুনিল, ভোলা মেম্বার, আজগর মুরুব্বি, শাহজাদা এবং ভুলিয়াকে নিয়ে কলোনিকে তাদের বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করেছেন। মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছেন তাছলিম ও ভুট্টু। কাঁচা বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ঘরভাড়া আদায় করেন ভোলা মেম্বার, আজগর মুরুব্বি ও শাহজাদা। বিদ্যুৎ বিল নেন সুনিল ও তার অনুসারিরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাবদ বিভিন্ন অনুদান নিয়ে আতœসাত করেন জয়নাল আবেদীন। মারামারিসহ বিশৃঙ্খলা ধামাচাপা দেয়ার ভূমিকা রাখে পটু ভুলিয়া। কলোনিতে অর্ধশতাধিক মাদক স্পট রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাদক ব্যবসায়ী বাবলা। তিনি ডিলার বাবলা হিসেবে পরিচিত। মাদক বিক্রেতাদের মধ্যে খাটিয়া গুড্ডু, মুরাদ, পিচ্চি পাঠান, নাদিম, চোরা বাবু ও সুরিয়া রানাসহ রয়েছে অসংখ্য মাদক কারবারি।

উল্লেখ্য, পূর্বে এই আদমজী বিহারী কলোনি এলাকা থেকেই বিপুল পরিমান মাদক সহ মাদক সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী, মাদক স্পট পরিচালনাকারী ও কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদকে একাধিকবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার মাদকের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তা নষ্টও করা হয়েছে। বর্তমানে প্রশাসনের ভয়ে পলাতক রয়েছে আদমজী বিহারী কলোনী এলাকার আলোচিত মাদক কারবারি নাহিদ। তবে তার অনুপস্থিতিতে অসংখ্য মাদক কারবারি একাধিক স্পটে বর্তমানে ক্ষুদ্র পরিসরে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। বিহারি কলোনি এলাকায় ঢুকলে প্রকাশ্যে ডেকেও মাদক বিক্রি করতে দেখা যায় মাদক ব্যবসায়ীদের।

আদমজী বিহারি কলোনির বাসিন্দারা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, আদমজী বিহারি কলোনি এলাকার আলোচিত মাদক কারবারি, সেবনকারী, সরবরাহকারী সক্রিয় রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মনসুর লোহার ছেলে পিচ্ছি পাঠান, সিনবাদ, খাটিয়া গুড্ডু ও তার ছেলে নাদিম, চোরা বাবু, রকি, পাক্কাল কাল্লু, জুম্মন, সপনাম, রাজ, মোস্তাক, হানিফ, সুরিয়া রানা, মজিবর ওরফে পক্ষি মজিবরের ছেলে নাহিদ ও মিজান, চুন্নির ছেলে আলামিন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন