নোয়াখালীতে ভিন্ন ক্যাটাগরীতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পেয়েছেন মা-মেয়ে
- আপলোড সময় : ০৬:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ১৪১৭ বার পড়া হয়েছে
বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উপলক্ষে নোয়াখালীর জেলা ও বেগমগঞ্জ উপজেলা পর্যায়ে ভিন্ন ক্যাটাগরীতে একসাথে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পেয়েছেন মা ও মেয়ে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় “সফল জননী” নারী ক্যাটাগরী”তে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে মা – বিবি মরিয়ম এবং শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরীতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে তারই বড় মেয়ে ও পুলিশের এডিশনাল এসপি আকলিমা আক্তার এই সম্মাননা পেয়েছেন।
মা-বিবি মরিয়ম উপস্থিত থেকে সম্মাননা গ্রহন করলেও তার মেয়ে আকলিমা আক্তার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে মালির মিনুসমাতে বাংলাদেশ পুলিশ কন্টিনজেন্টের প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বরত থাকায় তারই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বড় ছেলে শাদমান সাকিব মায়ের পক্ষে এই গৌরবমন্ডিত সম্মাননা গ্রহণ করেন।
“সফল জননী” বিবি মরিয়মের চার সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে ৩৪ তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার, ছোট ছেলে ৩৯ তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার, বড় ছেলে প্রথম শ্রেণীর অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে এখন সফল ব্যবসায়ী, ছোট মেয়ে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে বর্তমান উচ্চ শিক্ষায় আমেরিকায় অধ্যয়নরত রয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রবের বিধবা কন্যা বিবি মরিয়ম, তার চার সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করে আজ সফল জননী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
অন্যদিকে “সাফল্য অর্জনকারী নারী” হিসাবে তারই বড় মেয়ে ও পুলিশের এডিশনাল এসপি আকলিমা আক্তার কলেজের গণ্ডি পেরনের আগেই বিয়ে হয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে যায়। শ্বশুরবাড়ি একান্নবর্তী পরিবার ও স্বামী সন্তানদের দায়-দায়িত্ব সফলভাবে পালনের পাশাপাশি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেন এবং পরে বিবিএ-এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে এমবিএ-ও ডিগ্রী অর্জন করেন।
৩৪ তম বিসিএসে গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধার নাতনী হিসেবে “মুক্তিযোদ্ধা কোটা” পাওয়ার চেষ্টা না করে সবার সাথে প্রতিযোগিতা করে মেধার ভিত্তিতে তিনি ‘পুলিশ ক্যাডারের’ জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হয়ে পুলিশে যোগদান করেন। রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে মৌলিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে “মাষ্টার্স অব পুলিশ সাইন্সে” কৃতিত্বের সাথে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে তৃতীয় মাস্টার ডিগ্রী অর্জন করেন।
আট বছর বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বর্তমানে তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পশ্চিম আফ্রিকার বিক্ষুব্ধ দেশ মালির মিনুসমায় বাংলাদেশ পুলিশ কন্টিনজেন্টের প্লাটুন কমান্ডার দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক এ অবস্থিত নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে (Global Security, Conflict Management & Cyber Crime) বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য আকলিম আক্তারকে আমন্ত্রণ জানিয়ে অফার লেটার প্রেরণ করা হয়। জাতিসংঘের মিশনে শেষে তিনি সেখানে ভর্তি হবেন বলে জানান।
শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে আকলিম আক্তারের দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের অসামান্য সাফল্যে, সমাজের বিভিন্ন বাধা-বিপত্তির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে পড়া মেয়েদের আত্মবিশ্বাস সৃষ্টিতে অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে অনেকেই মনে করছে।
বেগম রোকেয়া দিবস ২০০৩ উপলক্ষে দুপুরে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক সম্মেলন কেন্দ্র জেলা পর্যায়ে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্বর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ
পরিচালক কামরুল নাহারের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় নোয়াখালী জেলার পাঁচজন জয়িতাকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টায় বেগমগঞ্জ উপজেলা অফিসে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসিন আরাফাত উপজেলার পাঁচজন জয়িতার মাঝেও সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করেন।