ঢাকা ০১:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়? লক্ষণ দেখলে কি করবেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড সময় : ১১:৪২:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১৬০৯ বার পড়া হয়েছে

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়? লক্ষণ দেখলে কি করবেন?

শরীরের ছোট্ট এক অঙ্গ হলো হৃৎপিণ্ড। আকারে ছোট ও ভেতরে ফাঁপা। হৃৎপিণ্ডের পেশিগুলোর প্রয়োজন হয় নিজস্ব রক্তের সরবরাহ। শরীরের বাকি অংশের মতো হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে অক্সিজেন ও অন্যান্য পুষ্টির দরকার পড়ে।
এ কারণে হৃদযন্ত্র করোনারি ধমনীর মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। হৃৎপিণ্ড যখন তার কাজ ঠিকমতো করতে পারে না, তখন হার্ট ফেইলিওর হয়। একজন ব্যক্তির শ্বাস যতক্ষণ চলে ততক্ষণ তার হৃদস্পন্দনও চলতে থাকে।
যখন ওই ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস থেমে যায়, তখন হৃদস্পন্দনও থেমে যায়। আর তখনই ওই ব্যক্তিকে মৃত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যখন হৃৎপিণ্ডের রক্তের ধমনীর ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় তখন রক্ত প্রবাহ না হওয়ায় হার্ট অ্যাটাক হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, ৩০-৪০ বছর বয়সীদের সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের ঝুঁকি বেশি। নারীদের তুলনায় ছেলেদের সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের সমস্যা প্রায় দ্বিগুণ।
যাদের হার্টের দুর্বলতা/অসুখ আছে তাদের অনেকেই নিয়মিত ওষুধ খাননা, প্রেশার, সুগার নিয়ন্ত্রণ করেন না তাদের এই সমস্যার ঝুঁকি অনেক বেশি।
হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক ও গুরুতর লক্ষণ হচ্ছে বুকে ব্যথা । যদি আপনি অ্যাটাক হয়েছে মনে করেন তাহলে দ্রুত জরুরি নম্বরে অথবা চিকিৎসা সহায়তার জর্ন্য কল করুন।
কোন কোল লক্ষণ দেখে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে?

  • বুকে ব্যথা, আঁটসাঁটতা ও বুকের মাঝখানে একটি চাপ অনুভব
  • বাহু, কাঁধ, ঘাড়, পিঠ, চোয়াল, দাঁত অথবা উপরের পেটে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে
  • বমি বমি ভাব, বদহজম, অম্বল বা পেটে ব্যথা
  • নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া ও হাঁপিয়ে ওঠা
  • হালকা মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
  • ঘাম।

হার্ট অ্যাটাকের কারণে মুলত ১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে বুকে ব্যথা হয়। কিছু লোকের বুকে হালকা ব্যথা থতেপারে, আবার কারও তীব্র ব্যথা হতে পারে। নারীদের হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ আরও অস্পষ্ট থাকে।
তাদের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব বা পিঠে বা চোয়ালের ব্যথা হতে পারে। কিছু কিছু হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ করেই হতে পারে। আবার অনেকেরই কয়েক ঘণ্টা বা কয়েকদিন আগে সতর্কতা চিহ্ন প্রকাশ পায়।
আপনার অথবা যে কারও কারো হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত যা করবেন
প্রথমেই জরুরি নম্বরে কল করবেন। হার্ট অ্যাটাকের কোনো উপসর্গ উপেক্ষা করবেন না। বিকল্প কিছু না থাকলে নিজেই দ্রুত তাকে হাসপাতালে পৌঁছান অথবা কোনো গাড়িতে উঠে চালককে বলুন দ্রুত যেনও হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
জরুরি সাহায্য চাওয়ার পরপরই একটি অ্যাসপিরিনজাতীয় ওষুধ খেয়ে নিন। অ্যাসপিরিন রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। হার্ট অ্যাটাকের সময় অ্যাসপিরিন খেলে হার্টের ক্ষতি অনেকটা কমে। যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে তাহলে অ্যাসপিরিন খাওয়া যাবে না।
যদি কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে দ্রুত তাকে সিপিআর দিন, তাহলে তার প্রাণ বাঁচবে। যদি তিনি শ্বাস না নেন কিংবা পালস খুঁজে না পান তাহলে শরীরের রক্ত প্রবাহিত রাখতে সিপিআর দিন বারবার।
ব্যক্তির বুকের মাঝখানে জোরে ও দ্রুত ধাক্কা দিন। প্রতি মিনিটে প্রায় ১০০-১২০ কম্প্রেশন হতে হবে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখুন। এই কয়েকটি উপায় অনুসরণ করে আপনি নিজের এমনকি অন্যের জীবনও বাঁচাতে পারেন।
সূত্র: মায়োক্লিনিক

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়? লক্ষণ দেখলে কি করবেন?

আপলোড সময় : ১১:৪২:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

শরীরের ছোট্ট এক অঙ্গ হলো হৃৎপিণ্ড। আকারে ছোট ও ভেতরে ফাঁপা। হৃৎপিণ্ডের পেশিগুলোর প্রয়োজন হয় নিজস্ব রক্তের সরবরাহ। শরীরের বাকি অংশের মতো হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে অক্সিজেন ও অন্যান্য পুষ্টির দরকার পড়ে।
এ কারণে হৃদযন্ত্র করোনারি ধমনীর মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। হৃৎপিণ্ড যখন তার কাজ ঠিকমতো করতে পারে না, তখন হার্ট ফেইলিওর হয়। একজন ব্যক্তির শ্বাস যতক্ষণ চলে ততক্ষণ তার হৃদস্পন্দনও চলতে থাকে।
যখন ওই ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস থেমে যায়, তখন হৃদস্পন্দনও থেমে যায়। আর তখনই ওই ব্যক্তিকে মৃত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যখন হৃৎপিণ্ডের রক্তের ধমনীর ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় তখন রক্ত প্রবাহ না হওয়ায় হার্ট অ্যাটাক হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, ৩০-৪০ বছর বয়সীদের সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের ঝুঁকি বেশি। নারীদের তুলনায় ছেলেদের সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের সমস্যা প্রায় দ্বিগুণ।
যাদের হার্টের দুর্বলতা/অসুখ আছে তাদের অনেকেই নিয়মিত ওষুধ খাননা, প্রেশার, সুগার নিয়ন্ত্রণ করেন না তাদের এই সমস্যার ঝুঁকি অনেক বেশি।
হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক ও গুরুতর লক্ষণ হচ্ছে বুকে ব্যথা । যদি আপনি অ্যাটাক হয়েছে মনে করেন তাহলে দ্রুত জরুরি নম্বরে অথবা চিকিৎসা সহায়তার জর্ন্য কল করুন।
কোন কোল লক্ষণ দেখে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে?

  • বুকে ব্যথা, আঁটসাঁটতা ও বুকের মাঝখানে একটি চাপ অনুভব
  • বাহু, কাঁধ, ঘাড়, পিঠ, চোয়াল, দাঁত অথবা উপরের পেটে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে
  • বমি বমি ভাব, বদহজম, অম্বল বা পেটে ব্যথা
  • নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া ও হাঁপিয়ে ওঠা
  • হালকা মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
  • ঘাম।

হার্ট অ্যাটাকের কারণে মুলত ১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে বুকে ব্যথা হয়। কিছু লোকের বুকে হালকা ব্যথা থতেপারে, আবার কারও তীব্র ব্যথা হতে পারে। নারীদের হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ আরও অস্পষ্ট থাকে।
তাদের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব বা পিঠে বা চোয়ালের ব্যথা হতে পারে। কিছু কিছু হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ করেই হতে পারে। আবার অনেকেরই কয়েক ঘণ্টা বা কয়েকদিন আগে সতর্কতা চিহ্ন প্রকাশ পায়।
আপনার অথবা যে কারও কারো হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত যা করবেন
প্রথমেই জরুরি নম্বরে কল করবেন। হার্ট অ্যাটাকের কোনো উপসর্গ উপেক্ষা করবেন না। বিকল্প কিছু না থাকলে নিজেই দ্রুত তাকে হাসপাতালে পৌঁছান অথবা কোনো গাড়িতে উঠে চালককে বলুন দ্রুত যেনও হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
জরুরি সাহায্য চাওয়ার পরপরই একটি অ্যাসপিরিনজাতীয় ওষুধ খেয়ে নিন। অ্যাসপিরিন রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। হার্ট অ্যাটাকের সময় অ্যাসপিরিন খেলে হার্টের ক্ষতি অনেকটা কমে। যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে তাহলে অ্যাসপিরিন খাওয়া যাবে না।
যদি কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে দ্রুত তাকে সিপিআর দিন, তাহলে তার প্রাণ বাঁচবে। যদি তিনি শ্বাস না নেন কিংবা পালস খুঁজে না পান তাহলে শরীরের রক্ত প্রবাহিত রাখতে সিপিআর দিন বারবার।
ব্যক্তির বুকের মাঝখানে জোরে ও দ্রুত ধাক্কা দিন। প্রতি মিনিটে প্রায় ১০০-১২০ কম্প্রেশন হতে হবে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখুন। এই কয়েকটি উপায় অনুসরণ করে আপনি নিজের এমনকি অন্যের জীবনও বাঁচাতে পারেন।
সূত্র: মায়োক্লিনিক

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন